১৯২তম জামাতে শোলাকিয়ায় ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত 

  • আপডেট: ১২:১০:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০১৯
  • ৫৯

অনলাইন ডেস্ক:

কড়া নিরাপত্তা এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর এই ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয় ১৯২তম জামাত।
ছাতা নিয়ে ঈদগাহে মুসল্লিদের প্রবেশ নিষেধ থাকলেও বৃষ্টির কারণে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়। অনেকেই মাথায় পলিথিন দিয়ে মাঠে প্রবেশ করে। মাঠে পানি জমে থাকায় মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে কিছুটা সমস্যা হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকেই মুসল্লিরা ঈদগাহে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদগাহমুখী বিভিন্ন সড়কে মানুষের ঢল নামে। মাইক্রোবাস, বাস, অটোরিকশা, টমটম, মোটরসাইকেল, সাইকেল ইত্যাদি যানবাহনে চড়ে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা কিশোরগঞ্জে আসেন এবং শহরের যানজট এড়ানোর জন্য ওইসব যানবাহন শহরের বাইরে রেখে মুসল্লিরা ঈদগাহের দিকে হেঁটে রওয়ানা হন।

ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’নামে দুটি বিশেষ ট্রেন সকাল ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ স্টেশনে এসে থামে । নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিদের নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে দুটি ট্রেনই স্ব স্ব গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়।ঈদের জামাত শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। কিন্তু নামাজের ইমাম মাঠ পৌঁছাতে বিলম্বে হওয়ায় নামাজ শুরু হয় ১০টা ২৫ মিনিটে। নামাজ শুরুর ১৫ মিনিট আগে তিন রাউন্ড, দশ মিনিট আগে দুই রাউন্ড এবং এক মিনিট আগে এক রাউন্ড বন্দুকের ফাঁকা ছুঁড়ে মুসল্লিদের নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সতর্কতামূলক সংকেত দেয়া হয়। এ বছরও দেশের অধিকাংশ জেলা থেকে মুসল্লিরা এসে শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজ আদায় করেন। দুই-তিন দিন আগে থেকেই মুসল্লিরা ট্রেন-বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে জেলা শহরে চলে আসেন। তারা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে, হোটেলে কিংবা জেলা শহর ও আশেপাশের বিভিন্ন মসজিদে এসে অবস্থান গ্রহণ করেন। মুসল্লিদের স্বাগত জানাতে শহর থেকে ঈদগাহগামী সড়কে নির্মাণ করা হয় অসংখ্য তোরণ।এদিকে মুসল্লিদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রায় ১২শত পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের সদস্য এবং সাদা পোশাকে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন শোলাকিয়া ঈদগাহকে ঘিরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে। বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট অতিক্রম করে মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশ করতে হয়েছে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি ছাড়াও প্রতিটি মুসল্লিকেই আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হয়েছে। মুসল্লিদের মাঠে জায়নামাজ ছাড়া ব্যাগ, ছাতি বা অন্য কোনো কিছু সঙ্গে আনতে নিষেধ করা হয়েছিল। মাঠে ও মাঠের বাইরে ৭৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল। মাঠে নির্মাণ করা হয়েছিল ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার।আরো পড়ুন : সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরেরনামাজ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব মাহদী হাসান ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ।এ বছর জামাতে ইমামতি করেন বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ এবং ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

১৯২তম জামাতে শোলাকিয়ায় ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত 

আপডেট: ১২:১০:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

কড়া নিরাপত্তা এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর এই ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয় ১৯২তম জামাত।
ছাতা নিয়ে ঈদগাহে মুসল্লিদের প্রবেশ নিষেধ থাকলেও বৃষ্টির কারণে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়। অনেকেই মাথায় পলিথিন দিয়ে মাঠে প্রবেশ করে। মাঠে পানি জমে থাকায় মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে কিছুটা সমস্যা হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকেই মুসল্লিরা ঈদগাহে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদগাহমুখী বিভিন্ন সড়কে মানুষের ঢল নামে। মাইক্রোবাস, বাস, অটোরিকশা, টমটম, মোটরসাইকেল, সাইকেল ইত্যাদি যানবাহনে চড়ে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা কিশোরগঞ্জে আসেন এবং শহরের যানজট এড়ানোর জন্য ওইসব যানবাহন শহরের বাইরে রেখে মুসল্লিরা ঈদগাহের দিকে হেঁটে রওয়ানা হন।

ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’নামে দুটি বিশেষ ট্রেন সকাল ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ স্টেশনে এসে থামে । নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিদের নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে দুটি ট্রেনই স্ব স্ব গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়।ঈদের জামাত শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। কিন্তু নামাজের ইমাম মাঠ পৌঁছাতে বিলম্বে হওয়ায় নামাজ শুরু হয় ১০টা ২৫ মিনিটে। নামাজ শুরুর ১৫ মিনিট আগে তিন রাউন্ড, দশ মিনিট আগে দুই রাউন্ড এবং এক মিনিট আগে এক রাউন্ড বন্দুকের ফাঁকা ছুঁড়ে মুসল্লিদের নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সতর্কতামূলক সংকেত দেয়া হয়। এ বছরও দেশের অধিকাংশ জেলা থেকে মুসল্লিরা এসে শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজ আদায় করেন। দুই-তিন দিন আগে থেকেই মুসল্লিরা ট্রেন-বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে জেলা শহরে চলে আসেন। তারা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে, হোটেলে কিংবা জেলা শহর ও আশেপাশের বিভিন্ন মসজিদে এসে অবস্থান গ্রহণ করেন। মুসল্লিদের স্বাগত জানাতে শহর থেকে ঈদগাহগামী সড়কে নির্মাণ করা হয় অসংখ্য তোরণ।এদিকে মুসল্লিদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রায় ১২শত পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের সদস্য এবং সাদা পোশাকে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন শোলাকিয়া ঈদগাহকে ঘিরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে। বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট অতিক্রম করে মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশ করতে হয়েছে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি ছাড়াও প্রতিটি মুসল্লিকেই আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হয়েছে। মুসল্লিদের মাঠে জায়নামাজ ছাড়া ব্যাগ, ছাতি বা অন্য কোনো কিছু সঙ্গে আনতে নিষেধ করা হয়েছিল। মাঠে ও মাঠের বাইরে ৭৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল। মাঠে নির্মাণ করা হয়েছিল ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার।আরো পড়ুন : সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরেরনামাজ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব মাহদী হাসান ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ।এ বছর জামাতে ইমামতি করেন বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ এবং ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।