পূর্বেও অবৈধ সংযোগ ব্যবহারের অপরাধে আড়াই লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়
রেজাউল করিম নয়ন॥
হাজীগঞ্জে বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ দেয়ায় ডিস ব্যবসায়ী নাহিদের বাসার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ২৯ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টায় চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ হাজীগঞ্জ এর কর্মকর্তাগণ গিয়ে ডিস ব্যবসায়ী নাহিদুল ইসলাম এর বাসার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
তথ্য সুত্রে জানাযায়, দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ একাধিক বৈদ্যুতিক সংযোগ তার বৈধ সংযোগের আড়ালে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছিলো। এতে প্রতি মাসে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকার বিদ্যুৎ বিল কর্তৃপক্ষ পায় না। এ অবৈধ ডিস ব্যবসায়ী এলাকায় দাপটশীল হওয়ায় ব্যাপারটি স্থানীয় অনেকেই জানলেও কেউ ভয়ে মুখ খোলেনি।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ হাজীগঞ্জ এর তথ্য সুত্রে জানাযায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবৈধ সংযোগ এর তথ্য পায় চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ হাজীগঞ্জ এর জিএম মো. কেফায়েত উল্যাহ। তাৎক্ষনিক জিএম মো. কেফায়েত উল্যাহর নির্দেশে অবৈধ এ বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থলে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ এর এজিএম (ইএনসি) আব্দুল মালেক, এজিএম দেবব্রত ভৌমিক (ওএন্ডএম) এর নেতৃত্বে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল কবির, লাইন টেকনেশিয়ান ফেরদাউস, আজাদ, সহকারী হিসাব রক্ষক মুনছুর আলীসহ একটি টিম পাঠায় ঘটনাস্থলে।
সেখানে গিয়ে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ কর্মকর্তাগণ গিয়ে যেই বৈদ্যুতিক খুটি থেকে ডিস ব্যবসায়ী নাহিদ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসায় সংযোগ দিয়েছেন। তাতে দেখা যায় অবৈধ ভাবে ডিস নোট বক্স এর ভিতর থেকে অবৈধ তার দিয়ে তার বাসায় সংযোগ নিয়ে ৭.১ অ্যাম্পিয়ার ওভার বিদ্যুৎ তার বৈধ সংযোগের আড়ালে ব্যবহার করছে। তাৎক্ষনিক এ অবস্থা দেখে বৈদ্যুতিক খুটি থেকে নেমে তার বাসায় কর্মকর্তাগন যান।
কিন্তু গেইট বন্ধ থাকায় ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি। যে দিক দিয়ে বাসার বাহিরে থেকে অবৈধ সংযোগ গুলো ভিতরে প্রবেশ করেছে সেখানে গিয়ে কর্মকর্তাগণ তাদের যন্ত্র (অ্যামিটার) দিয়ে পরিমাপ করে দেখেন ৭.১ অ্যাম্পিয়ারের অধিক বিদ্যুৎ অবৈধ উপয়ে ব্যবহার হচ্ছে। তাৎক্ষনিক কর্মকর্তাগণ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সংযোগস্থল বিভিন্ন বৈদ্যুতিক খুটিতে খোঁজা খুঁজি করার পরও শেষ পর্যন্ত খুঁজে পায়নি।
কিন্তু ডিস ব্যবসায়ী নাহিদের ভবনের নিচ থেকে অনেক গুলো তার দেখতে পায় কর্মকর্তাগণ। মাটির নিচ দিয়ে অবৈধ উপায়ে দূর থেকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কি না তা তাৎক্ষনিক কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কর্মকর্তাগণ।
পরবর্তীতে ডিস ব্যবসায়ী নাহিদের বাবা মো. শহীদুল্লাহ এসে জানতে চান কি কারনে তার বাসার সামনে এতো লোকজন? এ প্রশ্ন করার পর চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ কর্মকর্তাগণ অবৈধ ভাবে চুরি করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের অভিযোগের আলোকে কথা বলে প্রমান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডিস ব্যবসায়ী নাহিদের বাবা মো. শহীদুল্লাহ এ ব্যাপারে বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ। এটি একটি ষড়যন্ত্র। আমরা আইনের আশ্রয় নিবো।
তার জবাবে কর্মকর্তাগন বলেন, আমরা সরজমিনে অবৈধ সংযোগের আলামত পেয়েছি। এ বিষয়ে আপনি মিথ্যা বা বানোয়াট বক্তব্য দিতে পারেন না। যার কারনে আমরা অবৈধ সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেছি।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ হাজীগঞ্জ এর কর্মকর্তাগণ জানান, এর পূর্বেও অবৈধ সংযোগ ব্যবহারের অপরাধে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ডিস ব্যবসায়ী নাহিদের।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ০১ জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. কেফায়েত উল্যাহ জানান, আমি তথ্যটি পাওয়ার পর একটি টিম গঠন করি। তারা গিয়ে সরজমিনে অবৈধ সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রমাণ পায়। প্রমান পাওয়ার পর তার বাসা ও অফিসের ৬টি মিটারের সংযোগের মধ্যে তাৎক্ষনিক দুটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
কর্মকর্তাগণ অফিসে এসে এ ব্যাপারে লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছেন। তা পরিক্ষা নিরিক্ষা করে কি পরিমান বিদ্যুৎ সে এতো দিন অবৈধ উপায়ে ব্যবহার করেছে তা নির্নয় করে জরিমানা নির্ধারন করে তার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তিনি আরো জানান, যেহেতু সে পূর্বেও এ ধরনের অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার করার অপরাধে আমরা তার ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি, সেহেতু ২য় বার এ জঘন্য অপরাধ করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।