ভারতে কমান্ডারদের নিয়ে বৈঠকে সেনাপ্রধান

  • আপডেট: ০৯:৪০:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০
  • ৩২

নতুনেরকথা ডেস্ক:

ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ায় নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। দিল্লির প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কার্যালয়ে ভারতীয় সেনার সিনিয়র কমান্ডারদের নিয়ে দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে। সেনা কমান্ডারদের ওই সম্মেলনে লাদাখে যেভাবে চীনা সেনা আগ্রাসন দেখিয়েছে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হচ্ছে বলে খবর। সেইসঙ্গে ভারতের সীমান্ত-সুরক্ষা সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা।

মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের সঙ্গে ভারতের পারস্পরিক অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত।

ভারতীয় সেনাবাহিনী লাদাখ সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিভিন্ন স্থানে আরও বেশি করে সেনা মোতায়েন করার কথা ভাবা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই সীমান্ত এলাকায় চীন নতুন করে আরও ৫,০০০ সেনা মোতায়েন করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত ঠিক কী রণকৌশল নেবে তা নিয়ে আলোচনা করতেই আজ থেকে দু’দিনের বৈঠক শুরু করেছেন দেশের অভিজ্ঞ সেনা আধিকারিকরা।

সিকিম ও লাদাখ সীমান্তে হঠাৎই চীন এবং ভারতীয় সেনার মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে যে বেজিং লাদাখের কাছে তাদের বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চালাচ্ছে। এমনকী বেশ কিছু চিত্রে এও দেখা গেছে যে, কয়েকটি যুদ্ধবিমানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ভারতের পক্ষ থেকে সীমান্তবর্তী গালওয়ান এলাকায় একটি সড়ক ও সেতু নির্মাণ শুরু করতেই সে বিষয়ে চরম অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে চীন। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। ‘অথচ শুধুমাত্র স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্যেই এই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়’ জানান এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তা।

৯ মে, একটি ভারতীয় টহলদারী দলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চীনা সেনারা। ভারতের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, ভারত-চীন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে চীনের সেনাবাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তখনই জানানো হয় যে মোটরচালিত নৌকাগুলির সাহায্যে পানগং হ্রদে ঘোরাফেরা করছে তাঁরা।

ওদিকে চীনের তরফ থেকে গালওয়ান নদীর কাছেও তাঁবু খাটানোর চেষ্টা করা হয়। এর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযোগ ছিল যে, চীনা হেলিকপ্টারগুলি লাদাখের বিতর্কিত অঞ্চলে প্রবেশ করে ঘোরাফেরা করছে। একটি সাক্ষাৎকারে, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদৌরিয়া বলেন, “(চীনা) হেলিকপ্টারের আনাগোণা লাদাখে ক্রমেই বাড়ছে”। এরপরেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে গালওয়ান অঞ্চলে সেনার সংখ্যা বাড়িয়ে সেখানকার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। – ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের সময় এটা ছিল একটি ফ্ল্যাশপয়েন্ট। পাশাপাশি প্যাংগ তসো এবং ডেমচোকের উত্তর দিকেও অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাজীগঞ্জে বাজার তদারকি অভিযানে ২ প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা

ভারতে কমান্ডারদের নিয়ে বৈঠকে সেনাপ্রধান

আপডেট: ০৯:৪০:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০

নতুনেরকথা ডেস্ক:

ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ায় নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। দিল্লির প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কার্যালয়ে ভারতীয় সেনার সিনিয়র কমান্ডারদের নিয়ে দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে। সেনা কমান্ডারদের ওই সম্মেলনে লাদাখে যেভাবে চীনা সেনা আগ্রাসন দেখিয়েছে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হচ্ছে বলে খবর। সেইসঙ্গে ভারতের সীমান্ত-সুরক্ষা সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা।

মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের সঙ্গে ভারতের পারস্পরিক অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত।

ভারতীয় সেনাবাহিনী লাদাখ সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিভিন্ন স্থানে আরও বেশি করে সেনা মোতায়েন করার কথা ভাবা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই সীমান্ত এলাকায় চীন নতুন করে আরও ৫,০০০ সেনা মোতায়েন করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত ঠিক কী রণকৌশল নেবে তা নিয়ে আলোচনা করতেই আজ থেকে দু’দিনের বৈঠক শুরু করেছেন দেশের অভিজ্ঞ সেনা আধিকারিকরা।

সিকিম ও লাদাখ সীমান্তে হঠাৎই চীন এবং ভারতীয় সেনার মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে যে বেজিং লাদাখের কাছে তাদের বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চালাচ্ছে। এমনকী বেশ কিছু চিত্রে এও দেখা গেছে যে, কয়েকটি যুদ্ধবিমানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ভারতের পক্ষ থেকে সীমান্তবর্তী গালওয়ান এলাকায় একটি সড়ক ও সেতু নির্মাণ শুরু করতেই সে বিষয়ে চরম অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে চীন। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। ‘অথচ শুধুমাত্র স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্যেই এই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়’ জানান এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তা।

৯ মে, একটি ভারতীয় টহলদারী দলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চীনা সেনারা। ভারতের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, ভারত-চীন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে চীনের সেনাবাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তখনই জানানো হয় যে মোটরচালিত নৌকাগুলির সাহায্যে পানগং হ্রদে ঘোরাফেরা করছে তাঁরা।

ওদিকে চীনের তরফ থেকে গালওয়ান নদীর কাছেও তাঁবু খাটানোর চেষ্টা করা হয়। এর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযোগ ছিল যে, চীনা হেলিকপ্টারগুলি লাদাখের বিতর্কিত অঞ্চলে প্রবেশ করে ঘোরাফেরা করছে। একটি সাক্ষাৎকারে, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদৌরিয়া বলেন, “(চীনা) হেলিকপ্টারের আনাগোণা লাদাখে ক্রমেই বাড়ছে”। এরপরেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে গালওয়ান অঞ্চলে সেনার সংখ্যা বাড়িয়ে সেখানকার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। – ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের সময় এটা ছিল একটি ফ্ল্যাশপয়েন্ট। পাশাপাশি প্যাংগ তসো এবং ডেমচোকের উত্তর দিকেও অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি