অনলাইন ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে এই বৈশ্বিক মহামারীতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২০ জনে।
বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা বলেন, গত একদিনে দেশে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯০ জন। এতে সর্বমোট আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৭৭২ জন।
তিনি বলেন, এ সময়ে তিন হাজার ৫২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগেরও কিছু নমুনা আমাদের ছিল। সবমিলিয়ে তিন হাজার ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যেটার হার গতকালের চেয়ে চার দশমিক এক শতাংশ বেশি।
গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯২ জন সুস্থ হয়েছেন বলেও জানান এই চিকিৎসক।
সুস্থ হওয়ার সংখ্যা কম কেন, এমন ধারনা প্রসঙ্গে নাসিমা সুলতানা বলেন, এ রোগে আক্রান্তদের সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। অনেক সময় উপসর্গ ও লক্ষণ নিয়েই তারা ১৪-১৫ দিন থাকেন, তারপর লক্ষণ কিংবা উপসর্গ কমতে শুরু করে।
অর্থাৎ আক্রান্ত হওয়ার পর একজন রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে মাসখানেক সময় লেগে যায়। তিনি জানান, একজন ব্যক্তিকে আমরা তখনই সম্পূর্ণ সুস্থ বলবো, যখন তার পরপর দুটি পরীক্ষায় নেগেটিভ আসবে।
মৃত ১০ জনের বিবরণ দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই পরিচালক বলেন, তাদের মধ্যে পুরুষ সাত জন, আর নারী তিন। আর মৃতদের সাতজন ঢাকার ভেতরে, বাকিরা বিভিন্ন এলাকার। ঢাকার বাইরের তিন জন হলেন ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের।
‘বয়সের বিশ্লেষণে তাদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব তিনজন, ৫১-৬০ বছর বয়সী দুজন, ৪১-৫০ বছরের তিনজন ও ২১-৩০ বছর বয়সী দুজন মারা গেছেন।’
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম করোনায় মৃত্যুর খবর দেয় আইইডিসিআর। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীর রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়।
১৮ মার্চ থেকে এক-দুই-তি দিন পরপর মৃত্যুর খবর দিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ৩ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন মৃত্যুর খবর দিয়ে আসছে তারা। এরই মধ্যে ১৭ এপ্রিল ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য দেয়া হয়। এটি ছিল একদিনে সর্বাধিক মৃত্যু।
বাংলাদেশে আক্রান্তদের মধ্যে তিন দশমিক ৪ শতাংশ মৃত্যুরহার। তবে কারও কারও ধারনা, এটি বাস্তব পরিস্থিতি নয়। আক্রান্তদের অনেকেই শনাক্ত হচ্ছেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বৈশ্বিকভাবে মৃত্যুর হার তিন শতাংশ। যাদের বয়স বেশি, যারা আগে থেকে অন্য রোগে ভুগছেন, তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি।
জনস্বাস্থ্যবিদ ও রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যু কিছুটা বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলার সময় আসেনি। আমরা শুধু রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষার তথ্যই ব্যবহার করছি। চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট তথ্য ব্যবহার করতে পারছি না।