চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় শিশুসহ ১১ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপরে হাজীগঞ্জে উপজেলার ৪নং কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের বাজনাখাল গ্রামে এক কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ১১ জন গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলেও ভ্যাকসিন না পেয়ে রোগিরা চলে যায়।
জানা যায়, ৪ নং কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের বাজনাখাল গ্রামের সিরাজ প্রধানীয়ার দোকানের সামনে এবং আশেপাশে একই গ্রামে পড়ন্ত বিকেলে বাদ আসর বাচ্চারা খেলাধুলা করা অবস্থায় একটি পাগলা কুকুর চারদিক দৌড়ে এসে এলোপাতাড়ি কামড়ে শিশুসহ ১১ জন গুরুতর আহত হয়।
আহতদের স্বজনরা তাৎক্ষণিক হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসার জন্য আসে সাত জন। তারা হলো, বাজনাখাল মিয়া বাড়ির আনম সাইফুল কিবরিয়া তুহিনের মেয়ে মোসাম্মৎ তাবিয়া ইবনে সেবা (৪) এর ডান পাশের গালের মধ্যে পাগলা কুকুর কামড় বসিয়ে দেয়, একই গ্রামের মো: মোস্তফা কামালের ছেলে মো: হাবিবুর রহমান প্রধানিয়া (১০) সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর মুখমণ্ডল ও নাকের মধ্যে কপাল সোজা পাগলা কুকুর কামড় দিয়ে দাঁত বসিয়ে দেয়, মোহাম্মদ জাবেদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ রাফসান হোসেন (৩) কে হাতে কামড় দিয়ে রক্তাক্ত যখন করে, মোহাম্মদ মবিন হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ কাউসার হোসেন (১৯) এর হাতে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গার কামড় ও আঁচলের দাগ রয়েছে, মোহাম্মদ কবির হোসেন এর মেয়ে মোসাম্মদ হুজাইফা আক্তার (৮) এর বাম গালে কামরের আঘাত, মো: মাহবুব আলমের ছেলে মো: আবু জাফর (৭) এর মুখে পাগলা কুকুর কামড় দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।
পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত ৭ জন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসার জন্য আসলেও অন্যান্যরা জেলা সদরসহ অন্যান্য জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা যায়। এ ঘটনার পর থেকে ওই ইউনিয়নের শিশু কিশোর ও বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ রোগী নিয়ে আসার পর ভ্যাকসিন না থাকার কারণে গরিব অসহায় রোগীর পরিবার হতাশার মধ্যে পড়ে। অর্থ ও বিত্তবানরা অধিক টাকার বিনিময়ে বাহির থেকে ভ্যাকসিন কিনে এনে দিলেও নিম্ন বিত্তবানরা ভ্যাকসিন কিনে আনতে হিমশিম খেতে দেখা যায়।
এছাড়াও পাগলা কুকুরের কামড়ে গরু ছাগল ভেড়া হাঁস মুরগি সহ পশু পাখির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। দিন মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তি বলে, ৪-৫ টি পাগলা কুকুর একসাথে ছোট ছোট গরুর বাছুর, ছাগল বেড়াসহ পশু পাখি চার পায়ে কামড় দিয়ে চার দিকটা টেনে হেঁচড়ে ছিড়ে ফেলে তারা খিদা নিবারণ করে। একই কায়দায় শিশু বাচ্চাদেরকে একা ফেলে চারদিক থেকে আক্রমণ শুরু করে। হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর এলাকায় বহু ঘটনার ঘটেছে পাগলা কুকুরের কামড়ে অনেকে আহত হয়েছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ রবিউল আলম সবুজ বলেন, ভ্যাকসিন একমাত্র সদর হাসপাতালে ও মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে সাপ্লাই আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন সাপ্লাই নেই বলে রোগীরা বাহির থেকে ক্রয় করে আনতে হয়। হাসপাতালে ভ্যাকসিন থাকলে আমরা কুকুরে কামড়ানো সকল রোগীকে দিতে পারতাম। হাসপাতালে নেই বলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে তাদেরকে বাহির থেকে কিনে আনার পরামর্শ দেই। এছাড়া তো আমাদের কিছুই করার নেই।