নিজস্ব প্রতিনিধি:
হাজীগঞ্জে ঔষধের ফার্মেসীতে হাড় ভাঙার চিকিৎসা নিয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে প্রতিবন্ধী শিশু আরাফাত। খেলতে গিয়ে ডান হাতের কনুইর নিচের অংশের হাঁড় ভেঙ্গে যায় প্রতিবন্ধি শিশু আরাফাতের (১৩)। সেই হাঁড় ভাঙ্গার চিকিৎসা করতে গিয়ে দেড় মাস ধরে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
ইতোমধ্যে ডান হাতের দুইটি আঙ্গুল কেটে ফেলা হয়েছে। এখন শিশুর পুরো ডান হাত নিয়ে শংকা প্রকাশ করছেন চিকিৎসকেরা। হাজীগঞ্জ বাজারের ডিগ্রি কলেজ রোডে জান্নাত ফার্মেসীতে বসে চিকিৎসা দেয়া কথিত ডাক্তার আলাউদ্দিনের হাঁড়ভাঙ্গার পর ভুল চিকিৎসায় মাশুল গুনতে হচ্ছে শিশুর পরিবার ।
কথিত ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ও ভিজিটিং কার্ডের তথ্যমতে বি.এম.ডি.সি রেজি: নং-ডি-২০৭৩৯। অনলাইনে যাচাই করে সনদ নম্বরটিতে পরিচয় মিলে ফৌজিয়া রহমান নামে এক নারী চিকিৎসকের। ডিএমএফ, ফার্মাসিষ্ট ছাড়া চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মত তার কোনও সরকারি সনদ নেই।
গত ৩ জানুয়ারী দুষ্টামি করতে গিয়ে ডান হাতের কনুই নিচের অংশের হাঁড় ভেঙ্গে যায় আরাফাতের। সে ফরিদঞ্জ উপজেলার ৫নং পূর্ব গুপ্টি ইউনিয়নের মানুরী নোয়া বাড়ির হাছানের ছেলে। শিশু আরাফাত স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
শিশুর বাবা হাছান জানান, ৩ জানুয়ারী স্থানীয় কম্পিউটার ব্যবসায়ী জামালের প্ররোচনায় চিকিৎসা করাতে কথিত চিকিৎসক আলাউদ্দিনের কাছে যায়। তারপর থেকে এমন করুণ পরিণতি শিকার তার ছোট ছেলের। হাত প্লাস্টারের তিন দিন পর ব্যাথ্যার যন্ত্রনা সহজ্য করতে না পারার কারণে সেই জামাল ও আলাউদ্দিনের সহযোগিতা প্লাস্টার কেটে ফেলা হয়। এতে হাতের মধ্যে হালকা ফোসকা উঠে। ওইদিন রাতে পুরো হাত পুলে যায় এবং বড় বড় ফোসকা উঠে। পরদিন আলাউদ্দিনের কাছে গেলে তিনি ব্যবস্থাপত্রে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করার বিষয়টি একই প্রেসক্রিপনে লিখে দেয়।
শিশুর বাবা হাছান ইটের ভাটার একজন শ্রমিক । চার ছেলের মধ্যে আরাফাত সবার ছোট। সে বাক-প্রতিবন্ধি। তার পক্ষে চিকিৎসার খরচ বহন করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। সম্প্রতি তিনি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে ভুয়া চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডাক্তার শোয়েব আহম্মেদ চিশতী বলেন, শিশুর বাবা লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছি। বিষয়টি সিভিল সার্জনের সাথে পরামর্শ নিয়ে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানতে চাইলে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের অর্থপেডিকেস চিকিৎসক আওলাদুজ্জামান সৌরভ বলেন, শিশুর চিকিৎসার সকল কাগজপত্র হাতের অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা গেল হাতটি প্লাষ্টার করা সঠিক নিয়মে হয়নি। ওইসময় অতিরিক্ত মেডিসিন ব্যবহার করা হয়েছে।