নিজস্ব প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে হাজীগঞ্জে বিক্ষুদ্ধ জনতার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূজামন্ডপগুলো পরিদর্শন করেছেন, চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম।
শুক্রবার বিকালে তিনি কালচোঁ দক্ষিণ রামপুর চৌধুরী বাড়ি সার্বজনিন পূজা মন্দির ও পৌরসভাধীন হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও সমবেদনা জানিয়ে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বলেন, এদের মতো (ক্ষতিগ্রস্ত) মানুষকে রক্ষার জন্য সেদিন (১৯৭১) বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে আমি ও আমার মত মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার পাকিস্তানিদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। কারণ, তার ধর্মকে ব্যবহার করে শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, মুসলমানদেরও হত্যা করেছিলো। সেই রাজাকারদেও বংশধরেরা আবার ফনা তুলে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আগামীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের যে কোন উৎসবে আমি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেও সাথে নিয়ে নিরাপত্তা দিবো। হামলাকালীদের বিষ দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। এই সাপের বিষ আমরা এদেশে রাখতে দিবো না।
প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এই সাপের বিষ দাঁত ভেঙ্গে দিবো আমরা। আমি ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে এই বিষয়ে কথা বলবো এবং পুরো পরিস্থিতি তাঁর সামনে তুলে ধরবো। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই এমন ব্যবস্থা নিবো, যাতে এরা আর দাঁড়াতে না পারে। এদের চিহিৃত করা হয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে তদন্তকাজ চলছে।
এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে দেখানোর দরকার নেই। তোমাদের কাজ হলো, আমাদের মা-বোনদের রক্ষা করা। মসজিদ, মন্দির ও গির্জাকে রক্ষা করা। এটা আমার বক্তব্য নয়, রাসূল (সা:) এর বক্তব্য। যারা এই কাজটা করবেনা, তারা সঠিক মুসলমান না। তাছাড়া, আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়ীক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তাই যারা আওয়ামী লীগ করবেন, তাদেরকে অবশ্যই সম্প্রীতি রক্ষায় কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, হাজীগঞ্জে গত দেড়শ বছরে যে ঘটনা ঘটে নাই, আজকে এই লোকগুলোর এতো সাহস কিভাবে হলো। কে তাদের ইন্ধন দিয়েছে। আমরা খুঁেজ বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করবো। প্রশাসন চেষ্টা করছে এবং তদন্তকাজ চলমান। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রোটা. রুহিদাস বনিক। বক্তব্যের আগে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের কাছে সেদিনের ঘটনা তুলে ধরেন, ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক শ্যামল শীল এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে স্বপ্না রানী ও মঞ্জু রানী। এ দিকে হাজীগঞ্জ বাজারের ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলো বিষয়টি তুলে ধরেন, শ্রী শ্রী রাজা লক্ষ্মী নারায়ন জিউর আড়খা ও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের নেতৃবৃন্দ।
এ দিকে রামপুরে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমে স্বাগত জানিয়ে শোভাযাত্রা বের করেন, কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী রোটা. এস.এম মানিক। পরিদর্শণকালে শাহরাস্তি উপজেলা চেয়ারম্যান নাসরিন জাহান শেপালী, পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ, হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার, অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সফিকুল ইসলাম মীর উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ রোটা. আহসান হাবিব অরুন, জেলা পরিষদের সদস্য আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মাসুদ ইকবাল, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন সোহেল, পৌর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল আলম বেপারী, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বি, যুবলীগ নেতা নাহিদুল ইসলাম সোহেলসহ উপজেলা, পৌর আওয়ামী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।