মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ঃ
এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা, সবার পরিচিত এবং চেনা-জানা ব্যক্তি। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, বাত ব্যাথা, দাঁত ও টনসিলের সমস্যা সহ নানা শারিরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। ছিলো না করোনা উপসর্গ। কিন্তু তার মৃত্যুর পর দাফনে-কাপনে কেউ এগিয়ে আসলেন না।
অথচ এলাকায় কেউ মারা গেলে, যারা গোসল দিতেন, কবর করতেন, জানাযা পড়াতেন। এক কথায় দাফন-কাপনে যারা এগিয়ে আসতেন, আজ তারা সবাই নানান অজুহাতে এড়িয়ে গেলেন। নিহতের পরিবারের লোকজন বার বার অনুনয়-বিনয় করার পরও কোন লাভ হয়নি।
লাশ পড়ে রইলো দীর্ঘ সাত ঘন্টা। শুরু হলো কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টি। দূশ্চিন্তায় পরিবারের লোকজন। বলছি নিহত সিরাজুল ইসলামের (৬০) কথা। তিনি হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড টোরাগড় গ্রামের দক্ষিণ পাড়া ফকির বাড়ীর মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
বৃহস্পতিবার বিকালে অসুস্থতাজনিত কারনে সিরাজুল ইসলাম নিজ বাড়ীতে মারা যান। তিনি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও সবার চেনা-জানা। কিন্তু তার মৃত্যুর পর করোনা সন্দেহে দাফন-কাপনে স্থানীয় ও এলাকার কেউ এগিয়ে আসেনি। নানান অজুহাতে সবাই এড়িয়ে গেছেন বলে জানান, নিহতের ছোট ভাই মনা মিয়া।
বিষয়টি স্থানীয় ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সর্দার জানার পর, তিনি খবর দিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দকে। তিনি নিজেও দ্বীনি সংগঠন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক।
খবর পেয়ে এই ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ছুটে এলেন ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও করোনা সংক্রমণে নিহতের দাফন-কাপন বিষয়ক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক কমিটির সমন্বয়কারী হাফেজ শাহাদাত হোসেন প্রধানীয়া। সাথে ছিলেন, কমিটির সদস্য মাও.শরাফত উল্যাহ ও কামাল গাজী।
অবশেষে ইসলামী রীতি অনুযায়ী নিহত সিরাজুল ইসলামের মরদেহ গোসল, কবর খনন, জানাযা ও দাফন-কাপনসহ সকল কাজ সম্পন্ন করেন ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। আর এই কাজটি সম্পন্ন করতে এ দিন (বৃহস্পতিবার) রাত প্রায় একটা বেজে যায় তাদের।
ইসলামী আন্দোলন নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে নিহতের ছোট ভাই মনা মিয়া বলেন, করোনা সন্দেহে আমার ভাইয়ের লাশ দাপনে কেউ এগিয়ে আসেনি। চরমোনাইর হুজুরদের (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দ) প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম (কমিটি) এর সমন্বয়কারী হাফেজ মো. শাহদাত হোসেন প্রধানীয়া জানান, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমির ও পীর সাহেব চরমোনাইয়ের নির্দেশে করোনা ভাইরাসে নিহত মুসলিম ভাই-বোনের মৃতদেহ দাফনে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট এই টিম (কমিটি) গঠণ করা হয়।