করোনার উপসর্গ নিয়ে রাজবাড়ী পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর সেনগ্রামের মৃত ট্রাক চালক রুহুল আমিন শেখ (৩২) এর টর্চের আলোতে জানাযা নামাজ পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন পুলিশ। পুলিশই শেষ বিদায়ের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির শাকিলসহ ৫জন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) লাবীব আব্দুল্লাহ ও পাংশা থানার ওসি আহসান উল্লাহসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য এ জানাযায় অংশ নেয়।
পরবর্তীতে জানাযা শেষে ওই ব্যক্তির ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সেনগ্রাম কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এ সময় ভয়ে জানাযায় আসেনি স্থানীয়ারা । জানাযা নামাজ পড়ান সেনগ্রাম বাজার জামে মসজিদের ইমাম আব্দুস সালাম।
এদিকে পুলিশের নিজ উদ্দ্যোগে মৃত ব্যক্তির জানাযা ও দাফনের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পুলিশের এমন মহতি উদ্দ্যোগে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ এবং বলছেন দেশের এর দুর্যোগকালীন সময়ে পুলিশই জনগনের পাশে অাছে। করোনা ভাইরাস সন্দেহে মৃত ব্যক্তির জানাযা নামাজ পড়ানোর ব্যবস্থা ও কবর দেওয়ার মাধ্যমেই তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। পুলিশ প্রকৃতই জনগনের বন্ধু।
এর আগে বিকালে রুহুল অামিন শেখ করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সেনগ্রাম ও বাজার লকডাউন ঘোষনা করেন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ মৃতের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছেন বলে জানান।
মৃত রুহুল আমিন শেখ সেনগ্রাম এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। সে পেশায় একজন ট্রাক টালক।
স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানাগেছে, রুহুল আমিন ঢাকার সাভারে ড্রাম ট্রাক চালাতেন। কয়েকদিন আগে সে পাবনায় তার শশুর বাড়ীতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে জ্বর ও বিভিন্ন আলামত নিয়ে গত রোববার তার গ্রামের বাড়ীতে আসেন। এরপর তার অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন। পরবর্তীতে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে গতকাল সোমবার বিকালে তিনি মানা যান।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, রোববার বিকালে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সেনগ্রাম এলাকায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং ওই ব্যক্তির আশে পাশের বাড়ীসহ গ্রাম ও বাজার লকডাউন করা হয়েছে।
পাংশা থানার ওসি মোঃ অাহসান উল্লাহ জানান, স্থানীয়রা কেউ ভয়ে করোনা সন্দেহে মৃত ব্যক্তির জানাযায় এগিয়ে আসে নাই। ফলে পুলিশ রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল)সহ থানার পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ধর্মীয় বিধান মেনে যথাযথ নিয়মে ওই ব্যক্তির জানাযা নামাজ পড়ানোর ব্যবস্থা ও দাফন সম্পন্ন করে (ফেইসবুক থেকে সংগৃহিত)
লেখক: জিহাদুল কবির
অ্যাডিশনাল ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশ