অনলাইন ডেস্ক:
তুরস্কের একই পরিবারের ৫ ভাই বোন আদিম মানুষের মতোই মুখটা ওপরের দিকে তুলে চার হাত-পায়ে ভর দিয়ে চলাফেরা করে। প্রথম এই পরিবারের খোঁজ পেয়েছিলেন তুরস্কের এক বিজ্ঞানী। নাম উনের ট্যান।
তুরস্ক-সিরিয়া সীমানার দক্ষিণ তুরস্কের হাতায় প্রদেশের ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করে এই পাঁচ ভাইবোন।
পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ২১ জনের মধ্যে এই পাঁচ ভাইবোন সোজা হয়ে দাঁড়াতেই পারে না। মেরুদণ্ডে, হাঁটুতে, পায়ে বা কোমরে কোনো গুরুতর সমস্যা না থাকলেও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না তারা।
২০০৫-এ বিবিসির একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে এই পাঁচ ভাইবোন বিষয়টি সাধারণ মানুষ জানতে পারে।
২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মস্তিষ্কের স্ক্যান, রক্তের নমুনা— কিছুই বাদ যায়নি। তবু তেমন কোনো সমস্যাই ধরতে পারেননি বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা।
বিজ্ঞানী ট্যান এই পাঁচ ভাইবোনকে দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করার পর নিজের গবেষণাপত্রে জানান, পাঁচ ভাইবোনের এই ভাবে চলাফেরা করার পেছনে রয়েছে বিপরীত বিবর্তন। যার অর্থ হলো যেমন বানর থেকে বিবর্তনের ফলে ক্রমশ আদিম মানুষ এবং ধীরে ধীরে বর্তমানের সভ্য মানুষে পরিণত হয়েছে, এ ক্ষেত্রে বিবর্তনের ধারা বিপরীতমুখী। তাই এই পাঁচ ভাইবোনের এ অবস্থা। ওই বিজ্ঞানীর নামানুসারে এই পরিস্থিতির নামকরণ করা হয় ‘উনের ট্যান সিনড্রোম’।
তবে ধারণা বদলাল ২০১৪ সালে। এই পাঁচ ভাইবোনের বিষয়ে ‘বায়োলজি জার্নাল প্লাস’-এ ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
সেখানে উনের ট্যানের তত্ব খারিজ করে এই প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, বিপরীত বিবর্তনের ফলে নয়, ‘সেরিবেলার হাইপোপ্লাসিয়া’ নামের বিরল জিনগত সমস্যার কারণে সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন না তুরস্কের এই পাঁচ ভাইবোন।
বিজ্ঞনীরা জানান, এই রোগে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সোজা হয়ে দাঁড়ানো একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে। কথাবার্তাও জড়িয়ে যেতে পারে।