আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতে বাঙালিরা, হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে, মানসিকভাবে অসাম্প্রদায়িক। অন্তত তেমনটাই ধারণা ছিলো। কিন্তু গত ১০ বছরে এই ধারণাটা একটু একটু করে ভেঙে পড়েছে। হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল যখন নিজেদের ঘাঁটি গড়তে ব্যস্ত, তখনই মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে মুসলিম বিদ্বেষ। গত জুনে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মুসলিম ধর্মালম্বী তবরেজ আনসারিকে। আর এবার তবরেজের পর ফের নৃশংস গণপিটুনির সাক্ষী হলো ঝাড়খন্ড। গোমাংস বিক্রেতা সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হলো একজনকে। বেদম মারে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরো দু’জন।
ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ঝাড়খন্ডের খুন্তি জেলায় এই ঘটনাটি ঘটে। হোয়াটসঅ্যাপে গোমাংস বিক্রির খবর ছড়ানোর পর প্রতিবেশী জালটান্ডা সুয়ারি গ্রামে তিনজনের উপর চড়াও হয় ১২ থেকে ১৫ জনের একটি দল। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের দেখে পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন ওই তিনজন। তারা জনতার হাতে ধরা পড়ে যান। এরপরই শুরু হয় বেধড়ক মার। গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় কালান্তুস বারলা নামে এক যুবকের। আহতরা হলেন ফাগু কাচ্চাপন্দ ও ফিলিপ হাহোরো। তারা তিনজনই আদিবাসী খ্রিস্টান।
স্থানীয় ডিআইজি জানান, জালটান্ডা সুয়ারি গ্রামে কী ঘটেছিল তা এখনো স্পষ্ট নয়, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
গত তিন মাসে এই নিয়ে ঝাড়খণ্ডে দুটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল। জুনে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তবরেজ আনসারিকে। ১৭ জুন ঝাড়খন্ডের খরসওয়ান জেলায় তবরেজ আনসারিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে, চোর সন্দেহে পেটানো হয়েছিল। তবরেজকে গণপিটুনির সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলে। ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু অতিউত্সাহী নৃশংস ভাবে তাকে পেটাতে পেটাতে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করছে। ঘটনার পাঁচ দিন পর, ২২ জুন পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন মারা যান ওই যুবক।