অনলাইন ডেস্ক:
২৪ ঘণ্টা এখনো পার হয়নি, তাই এখনো হয়তো আফগানিস্তানের কাছে হারের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। মাত্র দুই টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এক দলের কাছে নিজেদের মাঠে ২২৪ রানে হারের ধাক্কা সামলানো সহজও নয়। তবে বাংলাদেশ চাইলে একটি বিষয়ে তৃপ্তি খুঁজে নিতে পারে। বহুদিনের এক অর্জন যে তারা অক্ষুণ্ন রাখতে পেরেছে। এমনই এক অর্জন, যা এক আয়ারল্যান্ড ছাড়া আর কারও পক্ষেই কখনো ভাঙা সম্ভব নয়।
টেস্টে শুধু আয়ারল্যান্ডের সঙ্গেই খেলেনি বাংলাদেশ। এ ছাড়া আর সবার সঙ্গেই সাদা পোশাকে অন্তত একবার করে দেখাসাক্ষাৎ হয়েছে তাদের। আফগানিস্তান ম্যাচের আগেই একটি রেকর্ড ছিল তাদের। আর সেটা হলো সব দলের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। হারগুলোও বেশ বড়সড় ব্যবধানের। ৯ ম্যাচের ৭টিতেই ইনিংস ব্যবধানে হার। সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হারটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ঢাকায় এসে বাংলাদেশকে ইনিংস ও ৩১০ রানে হারিয়েছিল উইন্ডিজরা। আর সবচেয়ে ছোট হার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেটাও ঢাকায়, ৭ উইকেটে হেরেছিল স্বাগতিকেরা।
এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুযোগ ছিল কোনো নতুন প্রতিপক্ষ পেলেই হেরে যাওয়ার রেকর্ড থেকে মুক্তি মেলার। কিন্তু নিজেদের এত বড় ঐতিহ্যকে ঝেড়ে ফেলার সাহস দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। শুধু তা–ই নয়, প্রথমবারের দেখায় বিপুল ব্যবধানে হার স্বীকার করে নেওয়ার প্রবণতা থেকেই হয়তো ২২৪ রানের ব্যবধানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। বলাবাহুল্য, নিজেদের দুই ইনিংসেই এত রান নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ওদিকে প্রথম দেখাতেই বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে এমন রেকর্ডের হাত থেকে শুধু বাঁচেনি আফগানিস্তান, সে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দ্রুততম ২ টেস্ট জয়ের রেকর্ডেও নাম লিখিয়েছে।
এমন এক হারে আরেকটি রেকর্ডও হয়ে গেল বাংলাদেশের। সেটা হলো প্রথম কোনো দেশ হিসেবে ১০টি ভিন্ন প্রতিপক্ষের কাছে টেস্টে হারের রেকর্ড। বাংলাদেশের ধারেকাছে আছে শুধু জিম্বাবুয়ে। এখন পর্যন্ত ৯ প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলে সবার কাছে অন্তত একবার হেরেছে তারা। সেটাও তারা করেছে বাংলাদেশের পরে। সর্বপ্রথম দল হিসেবে ৯ দলের কাছে টেস্ট হারার রেকর্ডও বাংলাদেশই করেছিল। সেটাও টেস্ট খেলা শুরু করার তিন বছরের মধ্যেই!
হারের এ তৃতীয় স্থানের জন্য লড়াই করছে ছয়টি দল! শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯টি দলের বিপক্ষে খেলে আট দলের কাছে হার মেনেছে। আর ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের আট হার ১০ দলের বিপক্ষে খেলে। যদিও অস্ট্রেলিয়ার এই আট প্রতিপক্ষের একটি হলো বিশ্ব একাদশ। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কখনো হারেনি নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে ৭ দলের বিপক্ষে হার নিয়ে সবার শেষে আছে এ দুই দল।
জয়–পরাজয়ের অনুপাতেও বাংলাদেশ সবচেয়ে পিছিয়ে। ১১৫ ম্যাচে ১৩ জয়ের বিপরীতে ৮৬ টেস্টেই হেরেছে বাংলাদেশ। দলের জয়–পরাজয়ের অনুপাত ০.১৫১। টেস্ট ক্রিকেটে স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে আসা জিম্বাবুয়েও এদিক থেকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশের চেয়ে (০.১৭৬)।
টেস্ট দলগুলোর হারের খবর:
দল | প্রতিপক্ষ | ব্যাপ্তি | এখনো যারা হারায়নি |
বাংলাদেশ | ১০ (১০) | ২০ বছর | – |
জিম্বাবুয়ে | ৯ (৯) | ২৮ | – |
শ্রীলঙ্কা | ৮ (৯) | ৩৮ | জিম্বাবুয়ে |
পাকিস্তান | ৮ (৯) | ৬৮ | বাংলাদেশ |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ৮ (৯) | ৯২ | জিম্বাবুয়ে |
অস্ট্রেলিয়া | ৮ (৯) | ১৪২ | জিম্বাবুয়ে |
ভারত | ৮ (১০) | ৮৮ | বাংলাদেশ, আফগানিস্তান |
ইংল্যান্ড | ৮ (১০) | ১৪২ | জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড |
নিউজিল্যান্ড | ৭ (৯) | ৯০ | বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে |
দক্ষিণ আফ্রিকা | ৭ ( ৯) | ১৩১ | বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে |
আয়ারল্যান্ড | ৩ (৩) | ২ | – |
আফগানিস্তান | ১ (৩) | ২ | বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড |