‘কোনো দিন ভাবিনি স্যার আমার সঙ্গে …’

  • আপডেট: ০৬:২০:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২১

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের গোয়ার প্রধান সাঁতার কোচ সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এক কিশোরী সাঁতারুকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ওই কিশোরী সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর নিজের কোচের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলে জাতীয় পদক জেতা পশ্চিমবঙ্গের এই সাঁতারু।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালেই টুইট করে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু। অভিযুক্ত সাঁতার কোচের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
এদিন দুপুরে ওই কিশোরী সাঁতারুর কাছে ফোন আসে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর দফতর থেকে। কী কথা হল? বিকেলে ভারতীয় গণমাধ্যমটিকে ওই কিশোরী বলে, ‘‘ক্রীড়ামন্ত্রীর সচিব আমাকে ফোন করেছিলেন। আমাকে অনেকটা সাহস জুগিয়েছেন। ক্রীড়ামন্ত্রী গোটা বিষয়টা দেখছেন বলে আমাকে জানান ওঁর সেক্রেটারি। সব রকম ভাবে আমার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।’’ এরপর কিছু ক্ষণ চুপচাপ ফোনের ও পার। তার পর ভাঙা গলায় ভেসে এল, ‘‘সব কেমন যেন ওলটপালট হয়ে গেল!’’

কিশোরী বলেন, কোচের ডাকে সাড়া দিয়ে চলতি বছরের মার্চে সপরিবার গোয়ায় যান তারা। সেখানে যাওয়ার পর থেকেই যৌন হেনস্তার শুরু। দীর্ঘ ছ’মাস নানা বাহানায় কোচ সুরজিৎ জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ওই কিশোরী সাঁতারুর যৌন হেনস্তা করতেন বলে অভিযোগ। লজ্জায়, অপমানে, ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখত মেয়েটি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় এক দিন নিজেই ঠিক করে ফেলে, সব ফাঁস করে দেবে। সেই মতোই কোচের দুষ্কর্মের ভিডিও মোবাইলবন্দি করেন তিনি। এদিন কিশোরী বলেন, ‘‘গোয়া যাওয়ার পর থেকেই স্যার আমার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করতেন। ব্ল্যাকমেল করতেন। আমি আর মানসিকভাবে নিতে পারছিলাম না। তখনই ঠিক করি, কিছু একটা করতে হবে। সেই মতো মোবাইলে ওই ভিডিও রেকর্ড করি।’’

জাতীয় প্রতিযোগিতা থেকে পদক জেতা বাংলার ওই কিশোরী সাঁতারু গোয়া থেকে পালিয়ে আসার কাহিনীও এ দিন শোনান। তার কথায়, ‘‘স্যার তখন গোয়ায় ছিলেন না। সিনিয়র ন্যাশনাল মিটের জন্য ভোপালে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই আমরা পালিয়ে আসি রিষড়ার বাড়িতে। স্যর ওখানে থাকলে আমরা হয়তো ফিরতেই পারতাম না। আরও বড় ক্ষতি হয়ে যেত আমার।’’

এরপর অনেকটা স্বগতোক্তির মতোই কয়েকটা বাক্য উঠে এল ওই কিশোরীর বুজে আসা গলায়, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে স্যারের পরিবারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। খুবই ভাল ছিল। স্যারের ছেলেও খুব ভাল সাঁতারু।’’ একটু থেমে, ‘‘কোনও দিন ভাবিনি, স্যার আমার সঙ্গে এ রকম…!’’ কথা আর শেষ করতে পারে না কিশোরী। অপর প্রান্ত থেকৈ ফোনটা সাইলেন্ট হয়ে যায়

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

‘কোনো দিন ভাবিনি স্যার আমার সঙ্গে …’

আপডেট: ০৬:২০:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের গোয়ার প্রধান সাঁতার কোচ সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এক কিশোরী সাঁতারুকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ওই কিশোরী সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর নিজের কোচের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলে জাতীয় পদক জেতা পশ্চিমবঙ্গের এই সাঁতারু।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালেই টুইট করে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু। অভিযুক্ত সাঁতার কোচের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
এদিন দুপুরে ওই কিশোরী সাঁতারুর কাছে ফোন আসে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর দফতর থেকে। কী কথা হল? বিকেলে ভারতীয় গণমাধ্যমটিকে ওই কিশোরী বলে, ‘‘ক্রীড়ামন্ত্রীর সচিব আমাকে ফোন করেছিলেন। আমাকে অনেকটা সাহস জুগিয়েছেন। ক্রীড়ামন্ত্রী গোটা বিষয়টা দেখছেন বলে আমাকে জানান ওঁর সেক্রেটারি। সব রকম ভাবে আমার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।’’ এরপর কিছু ক্ষণ চুপচাপ ফোনের ও পার। তার পর ভাঙা গলায় ভেসে এল, ‘‘সব কেমন যেন ওলটপালট হয়ে গেল!’’

কিশোরী বলেন, কোচের ডাকে সাড়া দিয়ে চলতি বছরের মার্চে সপরিবার গোয়ায় যান তারা। সেখানে যাওয়ার পর থেকেই যৌন হেনস্তার শুরু। দীর্ঘ ছ’মাস নানা বাহানায় কোচ সুরজিৎ জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ওই কিশোরী সাঁতারুর যৌন হেনস্তা করতেন বলে অভিযোগ। লজ্জায়, অপমানে, ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখত মেয়েটি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় এক দিন নিজেই ঠিক করে ফেলে, সব ফাঁস করে দেবে। সেই মতোই কোচের দুষ্কর্মের ভিডিও মোবাইলবন্দি করেন তিনি। এদিন কিশোরী বলেন, ‘‘গোয়া যাওয়ার পর থেকেই স্যার আমার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করতেন। ব্ল্যাকমেল করতেন। আমি আর মানসিকভাবে নিতে পারছিলাম না। তখনই ঠিক করি, কিছু একটা করতে হবে। সেই মতো মোবাইলে ওই ভিডিও রেকর্ড করি।’’

জাতীয় প্রতিযোগিতা থেকে পদক জেতা বাংলার ওই কিশোরী সাঁতারু গোয়া থেকে পালিয়ে আসার কাহিনীও এ দিন শোনান। তার কথায়, ‘‘স্যার তখন গোয়ায় ছিলেন না। সিনিয়র ন্যাশনাল মিটের জন্য ভোপালে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই আমরা পালিয়ে আসি রিষড়ার বাড়িতে। স্যর ওখানে থাকলে আমরা হয়তো ফিরতেই পারতাম না। আরও বড় ক্ষতি হয়ে যেত আমার।’’

এরপর অনেকটা স্বগতোক্তির মতোই কয়েকটা বাক্য উঠে এল ওই কিশোরীর বুজে আসা গলায়, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে স্যারের পরিবারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। খুবই ভাল ছিল। স্যারের ছেলেও খুব ভাল সাঁতারু।’’ একটু থেমে, ‘‘কোনও দিন ভাবিনি, স্যার আমার সঙ্গে এ রকম…!’’ কথা আর শেষ করতে পারে না কিশোরী। অপর প্রান্ত থেকৈ ফোনটা সাইলেন্ট হয়ে যায়