স্বামী সন্তান রেখে পরকীয়ার টানে লঞ্চে পাড়ি, ধর্ষণ করে প্রেমিকের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা

  • আপডেট: ০৫:০৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ৩২

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ঢাকা থেকে চাঁদপুর অভিমুখী সকাল সাড়ে ৯টায় ছেড়ে আসা আব-এ জমজম-১ লঞ্চে প্রেমিক কর্তৃক প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। প্রেমিকার ডাক চিৎকারে লঞ্চের যাত্রীরা ছুটে আসলে প্রেমিক যুবকটি লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে তাকে নদী থেকে উদ্ধার ও আটক করে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের কাছে সৌপর্দ করা হয়েছে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় মুন্সীগঞ্জে এই ঘটনা ঘটে ।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা সবুজবাগ থানার এলাকার রাজারবাগ কালীবাড়ি এলাকার মোঃ মামুন হোসেন তালুকদারের ছেলে মোঃ শুভ তালুকদারের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে খিলগাঁও থানা এলাকার তিলপাতা এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেনের মেয়ে ১ সন্তানের জননী ফারজানা আক্তার ইভার পরিচয় হয়।

এ পরিচয়ের মাধ্যমে ২ জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মঙ্গলবার শুভ তালুকদার প্রেমিকা ফারজানা আক্তার ইভাকে মোবাইল করে সদর ঘাট এলাকায় সকালে নিয়ে আসে। পরে তারা আবে জমজম-১ লঞ্চে ৩১৩ নম্বর কেবিনটি ভাড়া নেয়। লঞ্চটি সকাল সাড়ে ৯টায় সদর ঘাট থেকে ছাড়ার পর ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ অতিক্রম করাকালে ওই কেবিনের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে লঞ্চের যাত্রী ও স্টাফরা সেখানে ছুটে যায়। পরে দীর্ঘ সময় চেষ্টা করলেও ৩১৩নং কেবিনের দরজা কেউ খুলেনি। অনেক সময় পর প্রেমিক শুভ তালুকদার বিবস্ত্র অবস্থায় কেবিনের দরজা খুলে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

লঞ্চের স্টাফরা তাকে উদ্ধার করতে লঞ্চ ঘুরিয়ে তাকে নদীর মধ্যেই বেরিকেট দেয়। এ সময় শুভ একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। লঞ্চটি তার পিছু ধাওয়া করলে শুভ পুনরায় আবার ট্রলার থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আবারও পালানোর চেষ্টা করে। তখন লঞ্চ স্টাফরা নদীতে বয়া ও লাইফ জ্যাকেট পড়ে নদীতে নেমে শুভকে উদ্ধার করে বলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে এই ঘটনা ঘটলে লঞ্চের যাত্রীরা এক পাশ হয়ে গেলে লঞ্চটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছিল।

এই ঘটনা ঘটলে লঞ্চ থেকে জনৈক যাত্রী ৯৯৯ এ কল করলে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাদেকুর রহমান লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট থেকে শুভ ও ইভাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটক প্রেমিক শুভ জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের দু’জনের মধ্যে ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেই থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

ফারজানা আক্তার ইভা আমাকে সকালে মোবাইল করে চাঁদপুরে নিয়ে আসার জন্য লঞ্চে কেবিন ভাড়া করে এবং ওই কেবিনে সে আমাকে অনৈতিক কাজ করার জন্য বাধ্য করে। পরবর্তীতে সে আমার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করলে এই নিয়ে আমাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। অপরদিকে প্রেমিকা ফারজানা আক্তার ইভা জানান, তার স্বামীর নাম হাবিবুর রহমান জুয়েল, সে এক সন্তানের জননী। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর শুভ আমাকে চাঁদপুর এনে কলেজে অনার্সে ভর্তির জন্য আব-এ জমজম লঞ্চ যোগে নিয়ে আসে।

৩১৩নং কেবিন ভাড়া করে মুন্সিগঞ্জের কাছাকাছি আসলে সে আমাকে কেবিনের মধ্যে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি তাকে বাঁধা দিলে সে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদমভাবে মারধর করে। আমি নির্যাতন সইতে না পেরে ডাক চিৎকার দিলে সে আরও আমাকে মারতে থাকে। তখন লঞ্চের যাত্রীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে বিবস্ত্র অবস্থায় সে নদীতে ঝাঁপিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। বর্তমানে শুভ তালুকদার ও ইভা চাঁদপুর মডেল থানার হেফাজতে রয়েছে।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

সমন্বয়ক আর জামায়াতের কারণে ইউনুছ সরকার ব্যর্থ হবে-ইঞ্জি. মমিনুল হক

স্বামী সন্তান রেখে পরকীয়ার টানে লঞ্চে পাড়ি, ধর্ষণ করে প্রেমিকের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা

আপডেট: ০৫:০৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ঢাকা থেকে চাঁদপুর অভিমুখী সকাল সাড়ে ৯টায় ছেড়ে আসা আব-এ জমজম-১ লঞ্চে প্রেমিক কর্তৃক প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। প্রেমিকার ডাক চিৎকারে লঞ্চের যাত্রীরা ছুটে আসলে প্রেমিক যুবকটি লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে তাকে নদী থেকে উদ্ধার ও আটক করে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের কাছে সৌপর্দ করা হয়েছে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় মুন্সীগঞ্জে এই ঘটনা ঘটে ।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা সবুজবাগ থানার এলাকার রাজারবাগ কালীবাড়ি এলাকার মোঃ মামুন হোসেন তালুকদারের ছেলে মোঃ শুভ তালুকদারের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে খিলগাঁও থানা এলাকার তিলপাতা এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেনের মেয়ে ১ সন্তানের জননী ফারজানা আক্তার ইভার পরিচয় হয়।

এ পরিচয়ের মাধ্যমে ২ জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মঙ্গলবার শুভ তালুকদার প্রেমিকা ফারজানা আক্তার ইভাকে মোবাইল করে সদর ঘাট এলাকায় সকালে নিয়ে আসে। পরে তারা আবে জমজম-১ লঞ্চে ৩১৩ নম্বর কেবিনটি ভাড়া নেয়। লঞ্চটি সকাল সাড়ে ৯টায় সদর ঘাট থেকে ছাড়ার পর ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ অতিক্রম করাকালে ওই কেবিনের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে লঞ্চের যাত্রী ও স্টাফরা সেখানে ছুটে যায়। পরে দীর্ঘ সময় চেষ্টা করলেও ৩১৩নং কেবিনের দরজা কেউ খুলেনি। অনেক সময় পর প্রেমিক শুভ তালুকদার বিবস্ত্র অবস্থায় কেবিনের দরজা খুলে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

লঞ্চের স্টাফরা তাকে উদ্ধার করতে লঞ্চ ঘুরিয়ে তাকে নদীর মধ্যেই বেরিকেট দেয়। এ সময় শুভ একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। লঞ্চটি তার পিছু ধাওয়া করলে শুভ পুনরায় আবার ট্রলার থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আবারও পালানোর চেষ্টা করে। তখন লঞ্চ স্টাফরা নদীতে বয়া ও লাইফ জ্যাকেট পড়ে নদীতে নেমে শুভকে উদ্ধার করে বলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে এই ঘটনা ঘটলে লঞ্চের যাত্রীরা এক পাশ হয়ে গেলে লঞ্চটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছিল।

এই ঘটনা ঘটলে লঞ্চ থেকে জনৈক যাত্রী ৯৯৯ এ কল করলে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাদেকুর রহমান লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট থেকে শুভ ও ইভাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটক প্রেমিক শুভ জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের দু’জনের মধ্যে ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেই থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

ফারজানা আক্তার ইভা আমাকে সকালে মোবাইল করে চাঁদপুরে নিয়ে আসার জন্য লঞ্চে কেবিন ভাড়া করে এবং ওই কেবিনে সে আমাকে অনৈতিক কাজ করার জন্য বাধ্য করে। পরবর্তীতে সে আমার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করলে এই নিয়ে আমাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। অপরদিকে প্রেমিকা ফারজানা আক্তার ইভা জানান, তার স্বামীর নাম হাবিবুর রহমান জুয়েল, সে এক সন্তানের জননী। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর শুভ আমাকে চাঁদপুর এনে কলেজে অনার্সে ভর্তির জন্য আব-এ জমজম লঞ্চ যোগে নিয়ে আসে।

৩১৩নং কেবিন ভাড়া করে মুন্সিগঞ্জের কাছাকাছি আসলে সে আমাকে কেবিনের মধ্যে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি তাকে বাঁধা দিলে সে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদমভাবে মারধর করে। আমি নির্যাতন সইতে না পেরে ডাক চিৎকার দিলে সে আরও আমাকে মারতে থাকে। তখন লঞ্চের যাত্রীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে বিবস্ত্র অবস্থায় সে নদীতে ঝাঁপিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। বর্তমানে শুভ তালুকদার ও ইভা চাঁদপুর মডেল থানার হেফাজতে রয়েছে।