অনলাইন ডেস্ক:
স্কুলে কোচিং না করায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মারধর করে আহত করেছে প্রধান শিক্ষক। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের প্রতিবাদ করায় ওই ছাত্রী ও তার মাকে মারধর করাসহ প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে আটকে রাখা হয়।
সাভার উপজেলার আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে।
থানা সূত্র জানায়, আশুলিয়ার পলাশবাড়ি বটতলা এলাকার ক্রিয়েটিভ স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তা আক্তার। স্কুলটির ৪র্থ তলায় সে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করে। স্কুলে কোচিং না করে অন্যত্র কোচিং করায় মঙ্গলবার ওই ছাত্রীকে ক্লাসে বেদম মারধর করেন শবু নামের এক শিক্ষক।
বুধবার সকালে এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদের ও তার ছেলে ইমরান হোসেনসহ আরও কয়েক জন, পুনরায় মুক্তা ও তার মা কুলসুম আক্তারকে প্রকাশ্যে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে।
খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে যান মুক্তার চাচাত ভাই আরিফ। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকেও মারধর করে স্কুল ও বাড়ি ভাড়াসহ যাবতীয় পাওনা সন্ধ্যার মধ্যে পরিশোধ করার জন্য আরিফকে ছেড়ে দেয়।
খবর পেয়ে আশুলিয়া থানার এসআই আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন।
মুক্তার পিতা সালাম শেখ বলেন, প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদের একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। স্কুলের অন্য ছাত্রছাত্রীকে কোচিং করতে বাধ্য করেছেন। আমার মেয়ে স্কুলে কোচিং না করায় তিনি তাকে মারপিট করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটি কক্ষে আটকে রাখেন।
মুক্তার মা কুলসুম আক্তার অভিযোগ করেন, মেয়েকে মারার কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদের ক্ষেপে যান এবং খারাপ ভাষায় গালাগালি করেন। তিনি আমাদের বলেন, ‘তোরা আমার বিচার করতে এসেছিস, তোদের ব্যবস্থা করছি।’
কুলসুম আক্তার আরও বলেন, এরপর তিনি তার ছেলে ইমরানকে ফোন করে ডেকে আনেন। পরে বাবা ও ছেলে তাকে প্রকাশ্যে মারধর করে আটকে রেখে এবং পরে শ্লীলতাহানি করেন। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে আশুলিয়া থানার এসআই আব্দুস সালাম যুগান্তরকে বলেন, ওই ছাত্রী ও তার মাকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, মূলত কোচিং না করায় স্কুল কর্তৃপক্ষ মুক্তা ও তার পরিবারের ওপর আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল।
ছাত্রী ও তার মাকে মারধর করার কারন জানতে চাইলে ক্রিয়েটিভ স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদের বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটে নাই। এখানে আশুলিয়া থানার পুলিশ এসেছে। তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। পরে ফোন দিয়েন, বিস্তারিত কথা বলবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. কামরুন্নাহার যুগান্তরকে বলেন, উপজেলায় এত অসংখ্য স্কুলের মধ্যে কে ছাত্রছাত্রীদেরকে কোচিং করতে বাধ্য করছে, তা আমরা জানি না। আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি। আর এই বিষয়টি যেহেতু থানায় অভিযোগ হয়েছে, তাই আমাদের কিছু করার নাই।