আসামে রাষ্ট্রপতি পদক পাওয়া সেনা কর্মকর্তাও এনআরসি থেকে বাদ

  • আপডেট: ০৮:২৮:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৯
  • ২৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতীয় আসাম রাজ্য নাগরিক নিবন্ধনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। দেড় বছর আগে খসড়া প্রকাশের পর শনিবার সকাল ১০টায় এই চূড়ান্ত তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

তিন কোটি ৩০ লাখ আবেদেনকারীর মধ্যে তিন কোটি ১১ লাখ লোককে চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কাজেই ১৯ লাখ লোক রাষ্ট্রহীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শনিবার প্রকাশিত চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় স্থান হয়নি মোহাম্মদ সানাউল্লাহ নামের এক ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় এই সেনা কর্মকর্তার তিন সন্তান, দুই মেয়ে ও এক ছেলের নাম নেই। কিন্তু স্ত্রীর নাম রয়েছে সেখানে।

মোহাম্মদ সানাউল্লাহ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) পদধারী ছিলেন। তিনি কারগিল যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি পদকও রয়েছে তার।

এমন সাবেক সেনা কর্মকর্তার ঠাঁই হয়নি আসামের নাগরিক সনদে।

চলতি বছরের শুরুতেই ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাকে বিদেশি ঘোষণা করে। সে ঘটনা ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রকাশ হয়।

সেসব সংবাদ থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালে সন্দেহজনক ভোটার হিসেবে সানাউল্লাহর নাম তালিকাভূক্ত হয়।

আসাম সরকারের কর্মকর্তা চন্দ্রমাল দাস সানাউল্লাহকে বিদেশি আখ্যায়িত করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন।

এর পর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে তার নামে মামলা হলে ২০১৮ সালে তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। ২৩ মে তাকে বিদেশি ঘোষণা করে গোয়ালপাড়ার একটি বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়। পরে গুয়াহাটি হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সানাউল্লাহ ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায় গুয়াহাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকায় এনআরসির ধারা অনুসারে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্তি করা হয়নি।

শনিবার স্থানীয় সময় সকাল দশটায় প্রকাশিত আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ।

এক বিবৃতিতে এনআরসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় মোট আবেদনকারী ৩ কোটি ৩০ লাখ ১৭ হাজার ৬৬১ জনের মধ্যে নাগরিক হিসেবে স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন।

কাজেই ১৯ লাখ লোক রাষ্ট্রহীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে প্রকৃত ভারতীয়দের ভয় নেই জানিয়ে সরকার পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে, সংশোধিত তালিকা থেকে বাদ পড়া আবেদনকারীরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করার সুযোগ পাবেন।

তালিকায় নাম ওঠাতে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া শৈলেশ।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

আসামে রাষ্ট্রপতি পদক পাওয়া সেনা কর্মকর্তাও এনআরসি থেকে বাদ

আপডেট: ০৮:২৮:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতীয় আসাম রাজ্য নাগরিক নিবন্ধনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। দেড় বছর আগে খসড়া প্রকাশের পর শনিবার সকাল ১০টায় এই চূড়ান্ত তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

তিন কোটি ৩০ লাখ আবেদেনকারীর মধ্যে তিন কোটি ১১ লাখ লোককে চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কাজেই ১৯ লাখ লোক রাষ্ট্রহীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শনিবার প্রকাশিত চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় স্থান হয়নি মোহাম্মদ সানাউল্লাহ নামের এক ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় এই সেনা কর্মকর্তার তিন সন্তান, দুই মেয়ে ও এক ছেলের নাম নেই। কিন্তু স্ত্রীর নাম রয়েছে সেখানে।

মোহাম্মদ সানাউল্লাহ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) পদধারী ছিলেন। তিনি কারগিল যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি পদকও রয়েছে তার।

এমন সাবেক সেনা কর্মকর্তার ঠাঁই হয়নি আসামের নাগরিক সনদে।

চলতি বছরের শুরুতেই ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাকে বিদেশি ঘোষণা করে। সে ঘটনা ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রকাশ হয়।

সেসব সংবাদ থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালে সন্দেহজনক ভোটার হিসেবে সানাউল্লাহর নাম তালিকাভূক্ত হয়।

আসাম সরকারের কর্মকর্তা চন্দ্রমাল দাস সানাউল্লাহকে বিদেশি আখ্যায়িত করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন।

এর পর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে তার নামে মামলা হলে ২০১৮ সালে তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। ২৩ মে তাকে বিদেশি ঘোষণা করে গোয়ালপাড়ার একটি বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়। পরে গুয়াহাটি হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সানাউল্লাহ ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায় গুয়াহাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকায় এনআরসির ধারা অনুসারে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্তি করা হয়নি।

শনিবার স্থানীয় সময় সকাল দশটায় প্রকাশিত আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ।

এক বিবৃতিতে এনআরসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় মোট আবেদনকারী ৩ কোটি ৩০ লাখ ১৭ হাজার ৬৬১ জনের মধ্যে নাগরিক হিসেবে স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন।

কাজেই ১৯ লাখ লোক রাষ্ট্রহীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে প্রকৃত ভারতীয়দের ভয় নেই জানিয়ে সরকার পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে, সংশোধিত তালিকা থেকে বাদ পড়া আবেদনকারীরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করার সুযোগ পাবেন।

তালিকায় নাম ওঠাতে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া শৈলেশ।