চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে টোরাগড় ও মকিমাবাদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত কিশোর মো. সাইমুন হোসেন (১৬) মারা গেছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তার সৎ বাবা (মায়ের দ্বিতীয় স্বামী) মো. ইউনুছ ও মামা গোলাম সরোয়ার।
নিহত সাইমুন হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন তাহফিজুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তার নানার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের দিঘদাইর গ্রামে এবং তার সৎ বাবার বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া চরবাকিলা প্রধানীয়া বাড়ি। সে তার সৎ বাবা ও মায়ের সাথে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন খাটরা-বিলওয়াই কোকাকোলা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে।
বাবা ইউনুছ সংবাদকর্মীদের জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় সাইমুন হাজীগঞ্জ বাজারে যায়। সে বড় মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে সাধনার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। এ সময় মারামারি মধ্যে পড়ে গেলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে কুপিয়ে ফেলে রাখে। পরে কয়েকজন লোকে তাকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সাইমুনের অবস্থা খারাপ হলে আমরা কুমিল্লা নিয়ে যাই। কুমিল্লায় তার অবস্থার অবনিত হলে আজ (শনিবার) দুপুরে ঢাকা নিয়ে যাই। সেখানে রাত আটটার দিকে সাইমুন মারা যায়।
এসময় কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি আরও বলেন, তার (সাইমুন) বাবা মারা যাওয়ার পর আমি তার মা বিউটিকে বিবাহ করি। এরপর থেকে আমার ছেলে হিসেবেই আমি তাকে লালন-পালন করছি এবং পড়ালেখা করাচ্ছি। যারা আমার বুকের ধন কেড়ে নিয়েছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুককে বলেন, সাইমুমের মৃত্যুর বিষয়টি আমি শুনেছি। বিষয়টি আমরা দেখছি এবং খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাজীগঞ্জে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন সন্ধ্যার পর হাজীগঞ্জ বাজার রনক্ষেত্রে পরিণত হয়। পৌরসভাধীন টোরাগড় ও মকিমাবাদ গ্রামের দুই গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইট, পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হন। এতে দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা এবং ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পথচারীসহ আহত হন অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তি। এরমধ্যে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত কয়েকজনকে কুমিল্লা ও ঢাকা পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে শনিবার রাতে সাইমুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।