হাজীগঞ্জে গোল্ডেন হসপিটালের কাণ্ডে হতবাক রোগির পরিবার

  • আপডেট: ০৯:৩৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২
  • ৪১

ছবি-নতুনেরকথা।

নিজস্ব প্রতিনিধি:

হাজীগঞ্জ বাজারস্থ গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের ভুল রিপোর্টে তাছলিমা বেগম (৪২) নামের এক সাবেক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী মৃত্যুর পথযাত্রী ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে হসপিটলারে বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগী ও তার পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, গলায় কিছু একটা আটকে দম বন্ধ হয়ে আসছে এমন সমস্যা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবে তাছলিমা বেগমকে নিয়ে যান রোগীর স্বজনেরা। সেখানে তাঁর গলার এক্সরে করানো হলে কোন সমস্যা চিহ্নিত হয়নি বলে হসপিটাল সংশ্লিষ্টরা জানান।

কিন্তু তাছলিমা বেগমের দম বন্ধ হয়ে আসায় তার পরিবারের লোকজন জরুরি ভিত্তিতে কুমিল্লার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর গলা থেকে দাঁতের একটি ক্যাপ বের করা হয়। যেই ক্যাপটি তাঁর দাঁতে লাগানো ছিল। ওইদিন তিনি দুপুরে যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন ঘুমন্ত অবস্থায় দাঁতের ক্যাপটি তার গলার ভিতরে চলে যায়।

এ বিষয়ে তাছলিমা বেগমের মেয়ে নাছরিন আক্তার রেশমা জানান, ওই দিনে বিকালে মায়ের দম বন্ধ হয়ে আসায় তাকে গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবে নিয়ে যাই। সাথে আমার খালাতো ভাই (সংবাদকর্মী) সাথে ছিলেন। এসময় হাসপাতালের মায়ের এক্সরে করানো হয়।

তিনি বলেন, এক্সরে করানোর পর হাসপাতালের লোকজন আমাকে ও আমার খালাতো ভাইকে কম্পিউটারে জুম (বড়) এবং প্রিন্ট করে এক্সরে রিপোর্ট দেখিয়ে বলেন, তাঁর (মা) গলায় কোন কিছু আটকানো নেই। এটা ওনার মনের সমস্যা। পরে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে মাকে কুমিল্লায় নিয়ে যাই। সেখানে মায়ের গলা থেকে একটি ক্যাপ বের করা হয়। অথচ তাদের ভুল তথ্যে আমার মা মরতে বসেছিলো!

এ বিষয়ে গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের চেয়ারম্যান ডা. রাইসুল ইসলাম রুবেলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ওই দিন তারা (তাছলিমা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা) এক্সরে করানোর পর রিপোর্ট না নিয়ে শুধুমাত্র এক্সরে কপিটি নিয়ে চলে যায়। এমনকি ওই এক্সরে কপিটি আমাকে বা হসপিটালের কোনো চিকিৎসককে দেখায়নি তারা।

এ সময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যেহেতু তারা এক্সরে রিপোর্ট নেয়নি, কোন চিকিৎসককে এক্সরে দেখায়নি এবং চিকিৎসকের সেবা নেয়নি, তাহলে ভুল রিপোর্ট হলো কিভাবে..?

এমন প্রশ্নের জবাব দিয়ে রোগীর সাথে থাকা স্বজন শাখাওয়াত হোসেন শামীম বলেন, এক্সরে করানোর পর হাসপাতালের লোকজন এক্সরে রিপোর্ট হাতে দিয়ে আমাদেরকে কম্পিউটার রুমে নিয়ে যায়। এরপর কম্পিউটারে এক্সরে জুম করে দেখিয়ে বলে যে রোগীর গলায় কিছু নেই। এটি তার মনের সমস্যা।

তিনি আরো বলেন, অথচ সেসময় দম বন্ধ (শ্বাসরুদ্ধ) হয়ে রোগী চটপট করছেন। তখন কোন উপায়ন্তর না দেখে আমরা রোগীকে অক্সিজেন দিয়ে কুমিল্লায় নিয়ে যাই এবং সেখানে তার গলা থেকে একটি দাঁতের ক্যাপ বের করা হয়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে সিমস্ প্রকল্প বিষয়ক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

হাজীগঞ্জে গোল্ডেন হসপিটালের কাণ্ডে হতবাক রোগির পরিবার

আপডেট: ০৯:৩৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধি:

হাজীগঞ্জ বাজারস্থ গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের ভুল রিপোর্টে তাছলিমা বেগম (৪২) নামের এক সাবেক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী মৃত্যুর পথযাত্রী ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে হসপিটলারে বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগী ও তার পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, গলায় কিছু একটা আটকে দম বন্ধ হয়ে আসছে এমন সমস্যা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবে তাছলিমা বেগমকে নিয়ে যান রোগীর স্বজনেরা। সেখানে তাঁর গলার এক্সরে করানো হলে কোন সমস্যা চিহ্নিত হয়নি বলে হসপিটাল সংশ্লিষ্টরা জানান।

কিন্তু তাছলিমা বেগমের দম বন্ধ হয়ে আসায় তার পরিবারের লোকজন জরুরি ভিত্তিতে কুমিল্লার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর গলা থেকে দাঁতের একটি ক্যাপ বের করা হয়। যেই ক্যাপটি তাঁর দাঁতে লাগানো ছিল। ওইদিন তিনি দুপুরে যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন ঘুমন্ত অবস্থায় দাঁতের ক্যাপটি তার গলার ভিতরে চলে যায়।

এ বিষয়ে তাছলিমা বেগমের মেয়ে নাছরিন আক্তার রেশমা জানান, ওই দিনে বিকালে মায়ের দম বন্ধ হয়ে আসায় তাকে গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবে নিয়ে যাই। সাথে আমার খালাতো ভাই (সংবাদকর্মী) সাথে ছিলেন। এসময় হাসপাতালের মায়ের এক্সরে করানো হয়।

তিনি বলেন, এক্সরে করানোর পর হাসপাতালের লোকজন আমাকে ও আমার খালাতো ভাইকে কম্পিউটারে জুম (বড়) এবং প্রিন্ট করে এক্সরে রিপোর্ট দেখিয়ে বলেন, তাঁর (মা) গলায় কোন কিছু আটকানো নেই। এটা ওনার মনের সমস্যা। পরে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে মাকে কুমিল্লায় নিয়ে যাই। সেখানে মায়ের গলা থেকে একটি ক্যাপ বের করা হয়। অথচ তাদের ভুল তথ্যে আমার মা মরতে বসেছিলো!

এ বিষয়ে গোল্ডেন হসপিটাল এন্ড ট্রমা সেন্টার এন্ড ডিজিটাল ল্যাবের চেয়ারম্যান ডা. রাইসুল ইসলাম রুবেলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ওই দিন তারা (তাছলিমা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা) এক্সরে করানোর পর রিপোর্ট না নিয়ে শুধুমাত্র এক্সরে কপিটি নিয়ে চলে যায়। এমনকি ওই এক্সরে কপিটি আমাকে বা হসপিটালের কোনো চিকিৎসককে দেখায়নি তারা।

এ সময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যেহেতু তারা এক্সরে রিপোর্ট নেয়নি, কোন চিকিৎসককে এক্সরে দেখায়নি এবং চিকিৎসকের সেবা নেয়নি, তাহলে ভুল রিপোর্ট হলো কিভাবে..?

এমন প্রশ্নের জবাব দিয়ে রোগীর সাথে থাকা স্বজন শাখাওয়াত হোসেন শামীম বলেন, এক্সরে করানোর পর হাসপাতালের লোকজন এক্সরে রিপোর্ট হাতে দিয়ে আমাদেরকে কম্পিউটার রুমে নিয়ে যায়। এরপর কম্পিউটারে এক্সরে জুম করে দেখিয়ে বলে যে রোগীর গলায় কিছু নেই। এটি তার মনের সমস্যা।

তিনি আরো বলেন, অথচ সেসময় দম বন্ধ (শ্বাসরুদ্ধ) হয়ে রোগী চটপট করছেন। তখন কোন উপায়ন্তর না দেখে আমরা রোগীকে অক্সিজেন দিয়ে কুমিল্লায় নিয়ে যাই এবং সেখানে তার গলা থেকে একটি দাঁতের ক্যাপ বের করা হয়।