নতুনেরকথা অনলাইন ডেস্ক:
দেশে ইউপি নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ শেষ হয়েছে। এতে নির্বাচনীয় সহিংসতায় প্রায় ৪৬জন মৃত্যুবরণ করেছে। এনিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে সর্বমহলে।
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে ৪র্থ ধাপের নির্বাচন থেকে উঠে যেতে পারে নৌকা প্রতীক। আগামী ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচনীয় ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হতে পারে।
তবে সরকার প্রধান আজ ১৭ নভেম্বর বিকেলে গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফর সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করতে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সফর নিয়ে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সরকারপ্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতায় ৪৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। অনেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় সহিংসতা বাড়ছে বলে মত দিচ্ছেন। এ অবস্থায় দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না করে আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা উন্মুক্ত করার মতো পদক্ষেপ নেবে কিনা?
জবাবে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, মুশকিল হচ্ছে এখানে আমরা শুধু চেয়ারম্যান পদে প্রতীক দিচ্ছি, কিন্তু মেম্বার পদে কোনো প্রতীক নেই। তাদের কোনো প্রতীক থাকে না। আপনারা যদি ঘটনাগুলো দেখেন, মেম্বারদের মধ্যেও গোলমাল, তাদের মধ্যেও কাটাকাটি। শুধু যে চেয়ারম্যান প্রতীক দিচ্ছি দেখেই মারামারি তা কিন্তু না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচনী সহিংসতা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে এটা ঠিক, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা আগেও হয়েছে। এখনো হোক সেটা চাই না। একটা হানাহানি, ভোট দিতে গিয়ে মানুষের প্রাণ যাবে এটা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। ’
তিনি বলেন, কোনো প্রাণহানি হোক, এটা আমরা কখনো চাই না। এটা হওয়া উচিত না। এটা যেখানে যেখানে ঘটেছে সেখানে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, সেটা কিন্তু আমরা রক্ষা করে যাচ্ছি।
দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপিসহ বিভিন্ন দল দলীয়ভাবে নির্বাচন না করলেও তাদের নেতারা অনেক জায়গায় স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছে। তৃণমূলে দেখা যায়, একজনকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে, অনেকের আকাঙ্ক্ষা থাকে। আমরা যাদের মনোনয়ন দিয়েছি, তাদের বাইরে গিয়ে যারা নির্বাচন করেছে, যতই ভালো প্রার্থী হোক… যারাই দলের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে, আমরা কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা কিন্তু ছাড়ব না।
এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন তো সবাই করছে, আমরা যেমন আওয়ামী লীগের নামে করছি, বিএনপি নাম ছাড়া করছে, অন্যান্য দলও করছে। এই যে হানাহানি মারামারি, কোথায় কোথায়, কাদের মধ্যে হচ্ছে- সেটা আপনারা দেখেন। ’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের দলের মধ্যে যেগুলো হবে, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। কিন্তু এদের (আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী) বাইরে যারা নির্বাচনে হানাহানি করল, এখন তো তারা দলীয়ভাবে নির্বাচনে আসছে না, সেদিক দিয়ে তারা চালাকিটা ভালোই করল।… নির্বাচনও করছে মারামারিও করছে। উস্কেও দিচ্ছে, আবার বিজয়ীকে সমর্থন দিয়ে আরেকটা মারামারি বাঁধিয়ে দিচ্ছে। কাজেই সেটাও দেখতে হবে…।’
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বুধবার বিকাল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।