দীর্ঘদিন পর কক্সবাজার সম্দ্রু সৈকতের খুব কাছে দেখা গেল ডলফিনের দল। দল বেঁধে সাগর জলে সাঁতার-ডোবা খেলায় মাতে তারা। ডলফিনের এই দুর্লভ দৃশ্যগুলো উপভোগ করেছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা। দুই দিন ধরে কক্সবাজার সৈকতের কাছাকাছি সমুদ্র জলে দেখা মিলেছে এসব ডলফিনের। ভোরের প্রথম সূর্যের আলোয় মজার এই প্রাণীটি দাপাদাপি করে সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পয়েন্টের সীমানায়।
স্থানীয়রা জানান, ভোরের কুয়াশা ছেদ করে সূর্য ওঠা মাত্রই রশ্মি ঢেলেছে সাগরের নীল জলে। এ সময় সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে না। সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পয়েন্টের সমুদ্রের একটু দূরে দেখা মিলছে ডলফিন পালের। ডলফিনের ছুটাছুটির দৃশ্য ধারণ করেন সৈকতের জেটস্কি চালক সোনামিয়া। ১৩ মিনিট ধরে ডলফিনের সঙ্গে খেলায় মেতেছিলেন তিনি। সোনামিয়া জানান, সাগরের সাথে সব সময় যাদের সখ্য সেই লাইফগার্ড কর্মীরা বলছেন, শীত মৌসুমে মাছ চলে আসে সাগরের কিনারায়। তাই ডলফিনও মাছ শিকারে আসে সমুদ্র পাড়ের কাছাকাছি। স্থানীয় জেলেদের ভাষ্যমতে, গত বছর লকডাউনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কিছু ডলফিন খেলা করতে দেখা যায়। এর পর উধাও হয়ে যায়। এ বছর গত দুই দিনের বেশি সময় ধরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ডলফিনের বিচরণ চোখে পড়ে। উখিয়ার সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় জেলে সোনারপাড়া এলাকার ফরিদ মাঝি জানান, সাগরে মাছ ধরতে গেলে গভীর সাগরে মাঝে মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিনের দেখা মেলে। বিশেষ করে শীত মৌসুমের শেষের দিকে এসব ডলফিনের দল সাগরে ঘুরে বেড়ায়। তবে গত দুই-তিন বছর আগেও একবার এসব ডলফিনকে সাগর উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে দেখা গেছে। তবে এটি অহরহ ঘটে এমন নয়। কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, স্তন্যপায়ী এই প্রাণীটি বহু জাতের হয়। তবে সমুদ্র উপকূলে যা দেখা যায়, তা মূলত শুশুক জাতের ডলফিন। তিনি জানান, ডলফিন মূলত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ পানিতে বিচরণ করে। স্বচ্ছ পানিতে এসব স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলো খেলায় মেতে উঠে। বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সাঈদ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, কক্সবাজারের সোনাদিয়া ও মহেশখালী বঙ্গোপসাগর চ্যানেলে দুটি ডলফিন পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। একেকটি পরিবারে ১০-১২টির বেশি ডলফিন থাকে। সাগরে মূলত তারা দল বেঁধে চলাফেরা করে। বর্তমানে চ্যানেলগুলোতে প্রতিনিয়ত তাদের দেখা মেলে।