নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরে পুলিশ পরিচয় দিয়ে অবৈধ ভাবে চাঁদপুর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে ইলিশে পোনা জাটকা পাচার কালে সে গাড়ির প্রতিরোধ করে গাড়ি থেকে বিরাট অংকের চাঁদাবাজি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ খবর পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ বলে তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে পুলিশ প্রতারকদের বিরুদ্বে আটকের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে জানান।
ৎএ জন্য ব্যাপক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদেরকে আটকের জন্য হর্নে হয়ে খুজছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তবে জাটকা পাচারকারী চক্রের সদস্য এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করা সত্বে বলেন, এ জাটকা পাচারকারী চক্রকে একটি সাংবাদিক পরিচয়কারী কয়েকজন ব্যক্তি ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতাকর্মী সহযোগিতা করায় জাটকা পাচারকারীদের পাচার সহজ হচেছ। বর্তমানে তাদের নিজেদের মধ্যে ভাগভাটওয়ারা নিয়ে সমস্যা হওয়া তারা পুলিশকে এ ঘটনা জানিয়ে দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে,বুধবার রাতে এই দুই বিতর্কিত ব্যক্তি মহাসড়কের ফরিদগঞ্জ ও হাজিগঞ্জ সড়কে জাটকা মাছের গাড়ি থামিয়ে সে গাড়ি থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ এসেছে।
আরো পড়ুন; ধানের বাম্পার ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে
চাঁদপুর নৌ-সীমানায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা ধরা প্রতিরোধ ও নিধন থেকে রক্ষা কল্পে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে সরকারের মৎস্য অধিদপ্তর। অভয়াশ্রম চলাকালীন সময় জাটকা মাছ ক্রয় বিক্রয় পরিবহন সম্পূর্ণ রুপে নিষিদ্ধ করা হয়। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ যখন ব্যস্ত সময় পার করছে ঠিক তখনই চাঁদপুর নৌ-সীমানার পদ্মা-মেঘনা নদীতে রেকর্ড পরিমাণ জাটকা মাছ নিধন করে জাটকা পিকআপ ব্যান গাড়ী ভর্তি করে পাইকারদের কাছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় জাটকা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে যাচেছ।
আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পুলিশের তালিকায় অপরাধি হিসেবে থাকা চাঁদপুরের চিহ্নিত দুই ব্যক্তি বুধবার রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে রাতের আঁধারে সুযোগ বুঝে জাটকা পাচারকারী ইলিশের পোনা মাছের গাড়ি গতিরোধ করে নিজেদেরকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে জাটকা পাচারকারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ এসেছে।
এদের একজন হলো ১৩নং হানারচর ইউনিয়নের যুবলীগের আহ্বায়ক মো: সাহাদাৎ হোসেন হাওলাদার ওরফে সাহাদাৎ ও অপরজন হলেন শহরের কোড়ালিয়া রোডস্থ ছৈয়ালবাড়ীর ৮নং ওয়ার্ডের উট মার্কা কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর হোসেন বাবু। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে বলে তাদের নামের তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তারা দুজন নিজেদেরকে ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি, কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো পুলিশ পরিচয় দিয়ে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে রাতের আধারে চাঁদাবাজি করছে বলে একাধিক ব্যাক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন রাত ৮ টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চাঁদপুর শহর, ফরিদগঞ্জ ও হাজিগঞ্জ সড়কে অবস্থান নিয়ে জাটকা মাছের গাড়িসহ অন্যান্য গাড়ি আটকের পর ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদাবাজি করছে বলে তাদের বিরুদ্বে পুলিশের কাছে একাদিক অভিযোগ এসেছে।
আরো পড়ুন; হাজীগঞ্জে টিসিবির পণ্য কিনতে লজ্জা ভেঙে লাইনে মধ্যবিত্তরাও
জাটকা বহনকারী এক সিএনজি চালক অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক শাহাদাৎ হওলাদার ও আলমগীর হোসেন বাবু নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমার সিএনজি আটক করে জাটকা মাছ বহন করার অপরাধ বলে ২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া গত দুইদিন পূর্বে ফরিদগঞ্জ আইল্লার রাস্তার মোড়ে রায়পুরের একটি গাড়ি থেকে দুই বস্তা সুপারি নামিয়ে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে।
৮নং ওয়ার্ড উট মাকার কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর বাবু মোটরসাইকেল নিয়ে গভীর রাতে জাটকা মাছের গাড়ি ধরে কখনো নিজেদের পুলিশ আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া জাটকা মাছ পাচারকারীদের সাথে সমঝোতা করে তারা সড়ক পথে জাটকার গাড়ি যাচেছ কিনা এ ধরনের খবরাখবর নিয়ে চাঁদপুর শহর পাড় করে দিচ্ছে বলে তাদের বিরুদ্বে অভিযোগ করেছেন অনেক।
আরো পড়ুন; হাইমচরে কোস্টগার্ডের অভিযানে ২ লাখ মিটার জাল ও ১ হাজার কেজি জাটকা জব্দ
মহাসড়কে পুলিশ জাটকা মাছের গাড়ি আটক করলে তারা খবর পেয়ে দুইজন ঘটনাস্থলে এসে নিজেদের ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি পরিচয় দিয়ে জাটকা পাচারকারীদের সাথে কন্টাক করে জাটকা মাছের গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে, কিছুদিন পূর্বে তারা বাগাদি চোরাস্তায় দুজন ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েকটা জাটকা মাছের গাড়ি আটক করে। এ সময় স্থানীয়দের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হলে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পূর্বে তারা সেখান থেকে পালিয়ে চলে যায়।
এই ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ অফিসার জানান, এই দুই অভিযুক্ত ব্যক্তির অপকর্মের বিষয়ে অনেকে থানায় ফোন করে জানিয়েছেন। তারা আইন লংঘন করে অপরাধ সংগঠিত করেছে। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: নাসিম উদ্দিনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোজ খবর নিয়ে দেখছি। প্রমান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।