নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ৩৫ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল পাচারের কালে আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়ারা। এই অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা ওইসব চালের বস্তাসহ একটি মিনি ট্রাক আটক করেছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে যেয়ে ওইসব চাল উদ্ধার করেছে। চালগুলো পুলিশের হেফাজতে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় রয়েছে। এই ঘটনার পর ইউপি চেয়ারম্যান রনি গাঢাকা দিয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, কল্যাণপুর ইউনিয়নের অসহায় ও দু:স্থদের মাঝে বিতরণের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে দফায় দফায় কয়েক টন ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি পাটোয়ারী অসহায়দের মাঝে সামান্য কিছু চাল বিলি করার পর তার বাড়িতে গোপনে ৩৫ বস্তা চাল লুকিয়ে রাখেন।
বুধবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানার শহরের ট্রাক রোডস্থ পালপাড়ার বাসা থেকে ত্রানের ২টন অর্থাৎ ৩০ কেজি ওজনের ৬৭ বস্তা চাল সদর নিবার্হী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা কর্তৃক চাল জব্দ করার খবর জানতে পেয়ে নিজেকে রক্ষার জন্য বুধবার রাতে চাঁদপুর সদরের ৩নং কল্যানপুর ইউপি চেয়ারম্যান রনি পাটওয়ারী তার বাড়িতে মজুদ করা চাল একটি মিনি ট্রাকযোগে পাচার করার চেষ্টা করেন। পথিমধ্যে দক্ষিণ দাসাদী গ্রাামের গাজীরহাট বাজারে ট্রাকভর্তি ত্রাণের চাল দেখে লোকজন তা আটকে রেখে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশে খবর দেয়। মুহূর্তের মধ্যে চেয়ারম্যান রনি পাটোয়ারী কর্তৃক ইতিপূর্বে হয়রানির শিকার শত শত লোক ঘটনাস্থলে এসে ভিড় জমায় এবং তারা বিক্ষোভ করতে থাকে।
এ সময় তারা চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে জোর দাবি জানান। বিক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যান রনি পাটওয়ারীর বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রনি পাটওয়ারীর সহযোগী সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে দালালি করতে চাইলে সফিকুল ইসলাম সফুকে বিক্ষুব্ধ জনতা তাৎক্ষনিক বেধক মারধর করে। পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন।
দাসাদী গ্রামের বাসিন্দা ডালিম, সুমন হাওলাদার, জাকির, শাখাওয়াত, রাজন, সুমন পাটওয়ারী, জসিম খান জানান, আমরা অনেক কষ্টে আছি। আমাদের কোন সহায়তা না দিয়ে চেয়ারম্যান রনি সরকারি চাল পাচার করেন। জেলে কার্ডের ৪০ কেজি চালের বিপরীতে দিয়েছে ২০ কেজি। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে আমাদের তার পালিত লোকদের মাধ্যমে মারধর করে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। জনগণের হক মেরে রনি পাটওয়ারী ইউনিয়নে ৩টি আলিশান বাড়ি করেছে।
সরকার কর্তৃক তৈরি করে দেওয়া ইউনিয়ন পরিষদে অফিসে সে অফিস না করে তার নিজ বাড়িতে অস্থায়ী অফিস করে কার্যক্রম চালান। রাত সাড়ে ১০টায় চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত এলাকাবাসীকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে বিক্ষুদ্ধ জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্তনে আনেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যস্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান করছে। তবে এ ব্যাপরে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৩নং কল্যাণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি পাটোয়ারীর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,চাল পাচার করা হয়নি। চাল আমার বাড়ি থেকে অন্যত্র রাখার জন্য ট্রাক যোগে পাঠানো হচিছল। রাতে পাঠানো হচিছল কেন? যানতে চাইলে তিনি বলে দিনে কাজ ছিল বলে পাঠাতে পারিনাই।