রুশ ও থাইয়ের পাশা-পাশি চাহিদা মতো পাহাড়ি মেয়েদেরও সাপ্লাই দিতো পাপিয়া

  • আপডেট: ০৪:০৯:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০
  • ২৩

অনলাইন ডেস্ক:

শুধু রুশ আর থাই-ই নয়, পাহাড়ি মেয়েদের নিয়েও আসতো পাপিয়ার রঙ্গমহলে। শিল্পপতি, রাজনীনৈতিক নেতা, আমলা যার যা পছন্দ সবই ছিল তার হতে।  বর্তমানে আলোচিত নাম যুব মহিলা লীগের সদ্যবহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া এভাবেই ফাঁদে ফেলতেন তরুণ শিল্পপতি, আমলা রাজনৈতিক নেতাদের।

অস্ত্র, মাদক ও জাল টাকার পৃথক তিন মামলায় রিমান্ডে আছেন পাপিয়া পিউ। তবে এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ওরফে পিউদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে অনেক পিলে চমকানো তথ্য। তবে গুরুতর অপরাধ সম্পর্কিত প্রশ্নে নীরব থাকছেন তিনি। কিছু প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন কৌশলে। আবার প্রশ্নের উত্তরে পাল্টা প্রশ্নও করছেন তিনি।

পাপিয়া ও স্বামী মতি সুমনসহ গ্রেফতার চারজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের যাচাই-বাছাই চলছে। তাদের কখনো আলাদাভাবে, কখনো দু’জনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিমান্ডে তাদের দুই সহযোগী সাব্বির ও তায়্যিবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পাপিয়া ও সুমন চৌধুরীর অপরাধ জগত সম্পর্কে তায়্যিবা ডিবিকে জানিয়েছেন, অনেক সময় চাহিদামতো থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ভুটান ও রাশিয়া থেকে মেয়েদের নিয়ে আসা হতো। পার্বত্য অঞ্চল থেকেও পাহাড়ি মেয়েদের নিয়ে আসতেন পাপিয়া।

জানা গেছে, বিভিন্নজনের কাছে ‘নারী সরবরাহকারী’ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন পাপিয়া। একাধিক সূত্র বলছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মনোরঞ্জনের জন্য পাপিয়ার কাছে সুন্দরী নারী চাইতেন ক্যাসিনো অভিযানের সময় গ্রেফতার টেন্ডার মাফিয়া জি কে শামীমসহ আরও কয়েকজন টেন্ডারবাজ। তাদের চাহিদা অনুযায়ী সুন্দরীদের পাঠিয়ে দেওয়া হতো সরকারি-বেসরকারি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে। ওই সুন্দরীদের মাধ্যমে টেন্ডারবাজরা হাসিল করে নিতেন বড় বড় টেন্ডার। পাপিয়া ওই সুন্দরীদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করতেন। তাদের ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগ কিংবা অন্যান্য সামগ্রীতে পাপিয়া কৌশলে লাগিয়ে দিতেন অত্যাধুনিক ডিভাইস। সেই সব ডিভাইসে ধারণকৃত মনোরঞ্জনের দৃশ্যগুলো পরবর্তী সময়ে কাজে লাগাতেন লেডি মাফিয়া পাপিয়া। এছাড়া হাই সোসাইটির খদ্দেরদের চাহিদা অনুযায়ী পাপিয়া তার সংগ্রহে রাখতেন দেশি-বিদেশি নারী। চাহিদা ও রেট মিলে গেলে পাপিয়া তাদের ঢাকায় নিয়ে আসতেন।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের করা যৌনব্যবসা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পাপিয়া বলেন, নারীদের প্রতি আকর্ষণ কার নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে পাপিয়া বলেন, ‘নারীদের প্রতি আকর্ষণ কার নেই। এখন সব দোষ পাপিয়ার হবে কেন? প্রায় পুরুষই নারীলোভী।’

প্রসঙ্গত, গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পিউসহ গ্রেফতার চারজনকে তিন মামলায় পাঁচ দিন করে ১৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

অধ্যক্ষ চিন্ময় দাস ইস্যুতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি যা বললো

রুশ ও থাইয়ের পাশা-পাশি চাহিদা মতো পাহাড়ি মেয়েদেরও সাপ্লাই দিতো পাপিয়া

আপডেট: ০৪:০৯:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

শুধু রুশ আর থাই-ই নয়, পাহাড়ি মেয়েদের নিয়েও আসতো পাপিয়ার রঙ্গমহলে। শিল্পপতি, রাজনীনৈতিক নেতা, আমলা যার যা পছন্দ সবই ছিল তার হতে।  বর্তমানে আলোচিত নাম যুব মহিলা লীগের সদ্যবহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া এভাবেই ফাঁদে ফেলতেন তরুণ শিল্পপতি, আমলা রাজনৈতিক নেতাদের।

অস্ত্র, মাদক ও জাল টাকার পৃথক তিন মামলায় রিমান্ডে আছেন পাপিয়া পিউ। তবে এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ওরফে পিউদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে অনেক পিলে চমকানো তথ্য। তবে গুরুতর অপরাধ সম্পর্কিত প্রশ্নে নীরব থাকছেন তিনি। কিছু প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন কৌশলে। আবার প্রশ্নের উত্তরে পাল্টা প্রশ্নও করছেন তিনি।

পাপিয়া ও স্বামী মতি সুমনসহ গ্রেফতার চারজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের যাচাই-বাছাই চলছে। তাদের কখনো আলাদাভাবে, কখনো দু’জনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিমান্ডে তাদের দুই সহযোগী সাব্বির ও তায়্যিবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পাপিয়া ও সুমন চৌধুরীর অপরাধ জগত সম্পর্কে তায়্যিবা ডিবিকে জানিয়েছেন, অনেক সময় চাহিদামতো থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ভুটান ও রাশিয়া থেকে মেয়েদের নিয়ে আসা হতো। পার্বত্য অঞ্চল থেকেও পাহাড়ি মেয়েদের নিয়ে আসতেন পাপিয়া।

জানা গেছে, বিভিন্নজনের কাছে ‘নারী সরবরাহকারী’ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন পাপিয়া। একাধিক সূত্র বলছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মনোরঞ্জনের জন্য পাপিয়ার কাছে সুন্দরী নারী চাইতেন ক্যাসিনো অভিযানের সময় গ্রেফতার টেন্ডার মাফিয়া জি কে শামীমসহ আরও কয়েকজন টেন্ডারবাজ। তাদের চাহিদা অনুযায়ী সুন্দরীদের পাঠিয়ে দেওয়া হতো সরকারি-বেসরকারি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে। ওই সুন্দরীদের মাধ্যমে টেন্ডারবাজরা হাসিল করে নিতেন বড় বড় টেন্ডার। পাপিয়া ওই সুন্দরীদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করতেন। তাদের ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগ কিংবা অন্যান্য সামগ্রীতে পাপিয়া কৌশলে লাগিয়ে দিতেন অত্যাধুনিক ডিভাইস। সেই সব ডিভাইসে ধারণকৃত মনোরঞ্জনের দৃশ্যগুলো পরবর্তী সময়ে কাজে লাগাতেন লেডি মাফিয়া পাপিয়া। এছাড়া হাই সোসাইটির খদ্দেরদের চাহিদা অনুযায়ী পাপিয়া তার সংগ্রহে রাখতেন দেশি-বিদেশি নারী। চাহিদা ও রেট মিলে গেলে পাপিয়া তাদের ঢাকায় নিয়ে আসতেন।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের করা যৌনব্যবসা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পাপিয়া বলেন, নারীদের প্রতি আকর্ষণ কার নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে পাপিয়া বলেন, ‘নারীদের প্রতি আকর্ষণ কার নেই। এখন সব দোষ পাপিয়ার হবে কেন? প্রায় পুরুষই নারীলোভী।’

প্রসঙ্গত, গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পিউসহ গ্রেফতার চারজনকে তিন মামলায় পাঁচ দিন করে ১৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।