চসিকে কে হচ্ছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী

  • আপডেট: ০৫:৪৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২৯

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে হারলেও চাঙ্গা বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছেন, জোরজবরদস্তি না হলে বিএনপির প্রার্থীরা ঠিকই জয়ী হত। বিএনপির হাইকমান্ডও আগামী সব নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে। আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও অংশ নেবে দলটি।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন ছাড়াও ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৫টি সংরক্ষিত নারী আসনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দিবে বিএনপি। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে দলটি। দলের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরির কাজও চলছে।

তবে মেয়র পদে এখনও প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি বিএনপি। চট্টগ্রামে কে হচ্ছেন দলের প্রার্থী এই প্রশ্ন এখন নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ভোট হবে ২৯ মার্চ। এবারই প্রথম এই সিটির সবগুলো কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হবে।

এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদে বিরোধী দল তাদের নিজ নিজ দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরউদ্দীনকে বাদ দিয়ে নগর কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে প্রার্থী ঠিক করেছে। আর জাতীয় পার্টি নগর কমিটির আহ্বায়ক সোলায়মান শেঠকে প্রার্থী করেছে।

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে অন্তত ৫ জন আলোচনায় আছেন। তারা সবাই একই কথা বলছেন, দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবেন। আর দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবাই একাট্টা হয়ে কাজ করবেন।

চট্টগ্রামে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- এবার ৫-৬টি নাম জোরোশোরে উচ্চারিত হচ্ছে মেয়র পদে। তারা হলেন- নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিনের ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরশাদউল্লাহ ও নগর কমিটির বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিকের সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খান। এ ছাড়া নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ানের নামও এতদিন জোরোশোরে উচ্চারিত হয়েছে। কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান আবু সুফিয়ান। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুরির অভিযোগ তোলা সুফিয়ান কিছুটা হতাশ। তাই সিটি নির্বাচনে তিনি খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ৫ জনের মধ্যে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। এমনকি চট্টগ্রামের নেতৃত্ব দিতে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ ছেড়ে দেন। রাজনীতির মাঠেও সক্রিয় তিনি। নেতাকর্মীদের আপদে-বিপদে তিনি পাশে দাঁড়ান। এসব কারণে দলীয় হাইকমান্ডের সুনজর ডা. শাহাদাত হোসেনের দিকে।

অন্যদিকে তরুণ নেতা মীর হেলালেরও রয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয়তা। নেতাকর্মীরা তাকে সুখে-দু:খে পাশে পায়। পরিচ্ছন্ন ইমেজের এই তরুণ নেতাকে অনেকে এবার মেয়র প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়।

৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন ডা. শাহাদাত। কারাগারে থেকেই নির্বাচন করেন তিনি। সেই নির্বাচনে কারাগারে থেকে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে হেরে যান বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে। এর পর থেকে অবশ্য সিটি নির্বাচন সামনে রেখে কাজ শুরু করেন তিনি।

অন্যদিকে জাতীয় কিংবা স্থানীয় কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাননি নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। এবার সেই সুযোগ নিতে জোরেশোরেই মাঠে নেমেছেন তিনি।

আবুল হাশেম বক্কর গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোপূর্বে আমি কোনো নির্বাচনে অংশ নিইনি। দলের প্রার্থীদের জন্যই কাজ করেছি। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে শাহাদাত হোসেনের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়ে কাজ করেছি। তাই এবারের সিটি নির্বাচনে আমি সুযোগ চাই।

ডা. শাহাদাত হোসেন টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, আমি মেয়র পদে নির্বাচন করতে প্রস্তুত। দীর্ঘদিন ধরে মাঠে শ্রম দিচ্ছি। সবসময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিলাম। সব পর্যায়ের নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছে। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে ধানের শীষের বিজয় এনে দিতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।

চট্টগ্রাম বিএনপির নেতাকর্মীদের বিশ্বাস নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ধানের শীষই জয়ী হবে। আর দল যোগ্য প্রার্থী বাছতে পারলে সবাই একাট্টা হয়ে মাঠে নামবে। এমতাবস্থায় দলীয় প্রার্থী কাকে করা হয় সেটিই দেখার অপেক্ষায় তারা।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

নির্বাচন নিয়ে দিনক্ষণ তো এখন বলা যাবে না-প্রধান নির্বাচন কমিশনার

চসিকে কে হচ্ছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী

আপডেট: ০৫:৪৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে হারলেও চাঙ্গা বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছেন, জোরজবরদস্তি না হলে বিএনপির প্রার্থীরা ঠিকই জয়ী হত। বিএনপির হাইকমান্ডও আগামী সব নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে। আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও অংশ নেবে দলটি।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন ছাড়াও ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৫টি সংরক্ষিত নারী আসনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দিবে বিএনপি। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে দলটি। দলের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরির কাজও চলছে।

তবে মেয়র পদে এখনও প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি বিএনপি। চট্টগ্রামে কে হচ্ছেন দলের প্রার্থী এই প্রশ্ন এখন নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ভোট হবে ২৯ মার্চ। এবারই প্রথম এই সিটির সবগুলো কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হবে।

এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদে বিরোধী দল তাদের নিজ নিজ দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরউদ্দীনকে বাদ দিয়ে নগর কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে প্রার্থী ঠিক করেছে। আর জাতীয় পার্টি নগর কমিটির আহ্বায়ক সোলায়মান শেঠকে প্রার্থী করেছে।

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে অন্তত ৫ জন আলোচনায় আছেন। তারা সবাই একই কথা বলছেন, দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবেন। আর দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবাই একাট্টা হয়ে কাজ করবেন।

চট্টগ্রামে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- এবার ৫-৬টি নাম জোরোশোরে উচ্চারিত হচ্ছে মেয়র পদে। তারা হলেন- নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিনের ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরশাদউল্লাহ ও নগর কমিটির বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিকের সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খান। এ ছাড়া নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ানের নামও এতদিন জোরোশোরে উচ্চারিত হয়েছে। কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান আবু সুফিয়ান। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুরির অভিযোগ তোলা সুফিয়ান কিছুটা হতাশ। তাই সিটি নির্বাচনে তিনি খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ৫ জনের মধ্যে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। এমনকি চট্টগ্রামের নেতৃত্ব দিতে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ ছেড়ে দেন। রাজনীতির মাঠেও সক্রিয় তিনি। নেতাকর্মীদের আপদে-বিপদে তিনি পাশে দাঁড়ান। এসব কারণে দলীয় হাইকমান্ডের সুনজর ডা. শাহাদাত হোসেনের দিকে।

অন্যদিকে তরুণ নেতা মীর হেলালেরও রয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয়তা। নেতাকর্মীরা তাকে সুখে-দু:খে পাশে পায়। পরিচ্ছন্ন ইমেজের এই তরুণ নেতাকে অনেকে এবার মেয়র প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়।

৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন ডা. শাহাদাত। কারাগারে থেকেই নির্বাচন করেন তিনি। সেই নির্বাচনে কারাগারে থেকে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে হেরে যান বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে। এর পর থেকে অবশ্য সিটি নির্বাচন সামনে রেখে কাজ শুরু করেন তিনি।

অন্যদিকে জাতীয় কিংবা স্থানীয় কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাননি নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। এবার সেই সুযোগ নিতে জোরেশোরেই মাঠে নেমেছেন তিনি।

আবুল হাশেম বক্কর গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোপূর্বে আমি কোনো নির্বাচনে অংশ নিইনি। দলের প্রার্থীদের জন্যই কাজ করেছি। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে শাহাদাত হোসেনের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়ে কাজ করেছি। তাই এবারের সিটি নির্বাচনে আমি সুযোগ চাই।

ডা. শাহাদাত হোসেন টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, আমি মেয়র পদে নির্বাচন করতে প্রস্তুত। দীর্ঘদিন ধরে মাঠে শ্রম দিচ্ছি। সবসময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিলাম। সব পর্যায়ের নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছে। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে ধানের শীষের বিজয় এনে দিতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।

চট্টগ্রাম বিএনপির নেতাকর্মীদের বিশ্বাস নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ধানের শীষই জয়ী হবে। আর দল যোগ্য প্রার্থী বাছতে পারলে সবাই একাট্টা হয়ে মাঠে নামবে। এমতাবস্থায় দলীয় প্রার্থী কাকে করা হয় সেটিই দেখার অপেক্ষায় তারা।