ধেয়ে আসছে পঙ্গপাল, পাকিস্তানে জরুরী অবস্থা জারি, হানা দিয়েছে ভারতেও

  • আপডেট: ১০:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পঙ্গপালের হানায় বিপর্যস্ত ‘হর্ন অব আফ্রিকা’র দেশগুলো। সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। পঙ্গপালের দল এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে পাকিস্তান ও ভারতেও। ইতিমধ্যে ভারতে পঙ্গপালের বিষয়ে খাদ্যে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভারতের কয়েকটি রাজ্যেও পঙ্গপাল হানা দিয়েছে।

২০০ মিলিমিটারের কম বৃষ্টি হয়, নিকট প্রাচ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার এমন দেশগুলোতে এই পতঙ্গদের দেখা যায়। জাতিসংঘের এফএওর তথ্য অনুযায়ী, এক কোটি ৬০ লাখ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই অঞ্চলের ৩০টি দেশে এদের অস্তিত্ব আছে। মরুপতঙ্গদের জীবনকাল মাত্র তিন মাস। জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ণবয়স্ক হয়ে ওঠে। এক মাসের মধ্যেই ডিম পাড়তে সক্ষম। দুই সপ্তাহর মধ্যেই এদের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।

তিন মাসের মধ্যেই মরুপতঙ্গরা তাদের সংখ্যা ২০ গুণ বৃদ্ধি করে ফেলতে সক্ষম। ছয় মাসের মধ্যে যা ৪০০ গুণ আর ৯ মাসের মধ্যে আট হাজার গুণ বেড়ে যেতে পারে; প্রয়োজনীয় বৃষ্টি আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেই চলে।

দৈনিক প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে মরুপতঙ্গরা। আর এভাবেই চলে যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে। পঙ্গপালের হানায় মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যেতে পারে ফসলি জমি। পতঙ্গদের এক কিলোমিটার বিস্তৃত একটি পাল এক দিনে ৩৫ হাজার মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য সাবাড় করতে সক্ষম।

ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, কেনিয়া হয়ে পঙ্গপাল এখন ছড়িয়ে পড়েছে আফ্রিকার ১৪টি দেশে। উত্তর আফ্রিকা থেকে পৌঁছে গেছে উগান্ডা ও দক্ষিণ সুদানে। গত ২৫ বছরের মধ্যে সেখানে এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

এফএও বলছে, ফেব্রুয়ারি নাগাদ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। খাদ্যসংকট ও মানবিক বিপর্যয়ের হুমকিতে রয়েছে আফ্রিকার এক কোটির বেশি মানুষ। ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, কেনিয়া, জিবুতি, ইরিত্রিয়া—পাঁঁচটি দেশের জন্য সাত কোটি ৬০ লাখ ডলার তহবিলের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

এফএও বলছে, আক্রান্ত দেশগুলোর পাশাপাশি পতঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপরও নজর রাখছে সংস্থাটি। তার মধ্যে ওমান, সৌদি আরব, সুদান, ইয়েমেনও রয়েছে। এই পতঙ্গদের উপদ্রব শুরু হয়েছে ইরানেও।

পঙ্গপালঝড় বর্তমানে পৌঁছে গেছে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানকার চাষ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একটি বিবৃতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। প্রায় দুই দশক পর দেশটি এমন বিপর্যয়ে পড়েছে। পঙ্গপালের হুমকিতে আছে ভারতও। গত বছরের শেষ দিকে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী মরু অঞ্চলগুলোতে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। গুজরাটের ১৭ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিন লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিও এই পতঙ্গদের শিকার হয়। সূত্র : ডয়চে ভেলে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-অর্থ সম্পাদক হাজীগঞ্জের মাহবুব আলম ২ দিনের রিমান্ডে

ধেয়ে আসছে পঙ্গপাল, পাকিস্তানে জরুরী অবস্থা জারি, হানা দিয়েছে ভারতেও

আপডেট: ১০:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পঙ্গপালের হানায় বিপর্যস্ত ‘হর্ন অব আফ্রিকা’র দেশগুলো। সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। পঙ্গপালের দল এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে পাকিস্তান ও ভারতেও। ইতিমধ্যে ভারতে পঙ্গপালের বিষয়ে খাদ্যে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভারতের কয়েকটি রাজ্যেও পঙ্গপাল হানা দিয়েছে।

২০০ মিলিমিটারের কম বৃষ্টি হয়, নিকট প্রাচ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার এমন দেশগুলোতে এই পতঙ্গদের দেখা যায়। জাতিসংঘের এফএওর তথ্য অনুযায়ী, এক কোটি ৬০ লাখ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই অঞ্চলের ৩০টি দেশে এদের অস্তিত্ব আছে। মরুপতঙ্গদের জীবনকাল মাত্র তিন মাস। জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ণবয়স্ক হয়ে ওঠে। এক মাসের মধ্যেই ডিম পাড়তে সক্ষম। দুই সপ্তাহর মধ্যেই এদের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।

তিন মাসের মধ্যেই মরুপতঙ্গরা তাদের সংখ্যা ২০ গুণ বৃদ্ধি করে ফেলতে সক্ষম। ছয় মাসের মধ্যে যা ৪০০ গুণ আর ৯ মাসের মধ্যে আট হাজার গুণ বেড়ে যেতে পারে; প্রয়োজনীয় বৃষ্টি আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেই চলে।

দৈনিক প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে মরুপতঙ্গরা। আর এভাবেই চলে যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে। পঙ্গপালের হানায় মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যেতে পারে ফসলি জমি। পতঙ্গদের এক কিলোমিটার বিস্তৃত একটি পাল এক দিনে ৩৫ হাজার মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য সাবাড় করতে সক্ষম।

ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, কেনিয়া হয়ে পঙ্গপাল এখন ছড়িয়ে পড়েছে আফ্রিকার ১৪টি দেশে। উত্তর আফ্রিকা থেকে পৌঁছে গেছে উগান্ডা ও দক্ষিণ সুদানে। গত ২৫ বছরের মধ্যে সেখানে এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

এফএও বলছে, ফেব্রুয়ারি নাগাদ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। খাদ্যসংকট ও মানবিক বিপর্যয়ের হুমকিতে রয়েছে আফ্রিকার এক কোটির বেশি মানুষ। ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, কেনিয়া, জিবুতি, ইরিত্রিয়া—পাঁঁচটি দেশের জন্য সাত কোটি ৬০ লাখ ডলার তহবিলের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

এফএও বলছে, আক্রান্ত দেশগুলোর পাশাপাশি পতঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপরও নজর রাখছে সংস্থাটি। তার মধ্যে ওমান, সৌদি আরব, সুদান, ইয়েমেনও রয়েছে। এই পতঙ্গদের উপদ্রব শুরু হয়েছে ইরানেও।

পঙ্গপালঝড় বর্তমানে পৌঁছে গেছে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানকার চাষ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একটি বিবৃতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। প্রায় দুই দশক পর দেশটি এমন বিপর্যয়ে পড়েছে। পঙ্গপালের হুমকিতে আছে ভারতও। গত বছরের শেষ দিকে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী মরু অঞ্চলগুলোতে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। গুজরাটের ১৭ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিন লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিও এই পতঙ্গদের শিকার হয়। সূত্র : ডয়চে ভেলে।