যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনার মধ্যেই জার্মানের ঘোষণা: ইরাক থেকে সৈন্য প্রত্যাহর করা হবে

  • আপডেট: ১১:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২০
  • ২১

অনলাইন ডেস্ক:

ইরাক থেকে জার্মানের আংশিক সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণায় ভেঙ্গে পড়ছে ট্রাম্প। ইরাকে আইএসবিরোধী জোটের অংশ হিসেবে মোতায়েন করা সেনাদের কিছু সংখ্যক প্রত্যাহার করে নেবে বলে জানিয়েছে জার্মানি। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার এমন তথ্য দিয়েছে। বাগদাদ ও তাজিতে মোতায়েন করা ৩০ সেনাকে জর্ডান ও কুয়েতে সরিয়ে নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। তিনি বলেন, শিগগিরই এই প্রত্যাহার শুরু হতে যাচ্ছে। আইএসবিরোধী জোটের অংশ হিসেবে ৪১৫ সেনা মোতায়েন করেছিল জার্মানি। তাদের মধ্যে ১২০ সেনা ইরাকে রয়েছে।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে করা চুক্তির অবসান ঘটাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইরাকের পার্লামেন্টে একটি বিল পাস করা হয়েছে। এরপরেই জার্মানির এমন সিদ্ধান্তের কথা এসেছে। সোমবার জার্মানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ইরাকি সরকার ও পার্লামেন্টের আমন্ত্রণের ভিত্তিতে ইরাকে সামরিক উপস্থিতি ছিল।

এদিকে ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার। এর আগে ইরাকি সরকারকে পাঠানো মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি চিঠিকে ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার পর সোমবার তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন।

আর ওয়াশিংটনের এই বিভ্রান্তির মধ্যেই ইরাকি ভবিষ্যৎ মার্কিন সেনার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।-খবর রয়টার্স, গার্ডিয়ান, এএফপি ও বিবিসির পেন্টাগন বলছে, ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার হচ্ছে বলে ইরাকি সরকারের কাছে পাঠানো মার্কিন এক জেনারেলের ওই চিঠিটি ভুল ছিল।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উইলিয়াম সিলি তার ইরাকি সমকক্ষকে রোববারের তারিখ দেয়া এক চিঠিতে বলেছেন, মার্কিন বাহিনী ইরাক ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চিঠিটি তিনি পাঠিয়েছেন ইরাকে জয়েন্ট ফোর্সের উপ পরিচালক আবদুল আমিরের কাছে।

এতে বলা হয়, স্যার, ইরাকের সার্বভৌমত্ব এবং পার্লামেন্ট ও ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে কম্বাইন্ড জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স সামনের দিনগুলোতে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাহিনীর অবস্থান নতুন করে সাজানো হবে।

চিঠিতে বলা হয়, ইরাকের বাইরে নিরাপদে যাওয়ার জন্য এয়ার ট্রাফিক বাড়ানো সহ কিছু পদক্ষেপ ডার্কনেস আওয়ারে করা হবে। এছাড়া বাগদাদে গ্রিন জোনে নতুন কোয়ালিশন ফোর্স আনা হচ্ছে বলে যে ধারনা তৈরি হয়েছে তাও দূর করা হয় এই চিঠিতে।

এতে বলা হয়, আমাদের চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আপনাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্তে আমরা শ্রদ্ধা জানাই। তিনি বলেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট তাদের বাহিনী নতুন জায়গায় সরিয়ে নেবে। সিলি বলেন, এই কাজটি সারতে জোট বাহিনীকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। নিরাপদ ও দক্ষতার সঙ্গে ইরাক থেকে তাদের বাহিনীকে সরিয়ে নিতে হবে।

মার্কিন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি করছে তেহরান। সেই প্রেক্ষাপটে ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে দেশটির পার্লামেন্টে।

এসপার বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এখন যে অবস্থায় রয়েছি, তার সঙ্গে এই চিঠি অপ্রাসঙ্গিক। এখান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আর মার্কিন সেনাপ্রধান জেনারেল মার্ক মিল্লিই বলেন, ভুলে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এটি ছিল একটি খসড়া। এটা ছিল ভুল। এই চিঠি প্রকাশ করা ঠিক হয়নি।

সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বিরত রাখতে মার্কিন কংগ্রেসে আইন প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাজীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মাইনুদ্দিন মিয়াজী আটক

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনার মধ্যেই জার্মানের ঘোষণা: ইরাক থেকে সৈন্য প্রত্যাহর করা হবে

আপডেট: ১১:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

ইরাক থেকে জার্মানের আংশিক সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণায় ভেঙ্গে পড়ছে ট্রাম্প। ইরাকে আইএসবিরোধী জোটের অংশ হিসেবে মোতায়েন করা সেনাদের কিছু সংখ্যক প্রত্যাহার করে নেবে বলে জানিয়েছে জার্মানি। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার এমন তথ্য দিয়েছে। বাগদাদ ও তাজিতে মোতায়েন করা ৩০ সেনাকে জর্ডান ও কুয়েতে সরিয়ে নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। তিনি বলেন, শিগগিরই এই প্রত্যাহার শুরু হতে যাচ্ছে। আইএসবিরোধী জোটের অংশ হিসেবে ৪১৫ সেনা মোতায়েন করেছিল জার্মানি। তাদের মধ্যে ১২০ সেনা ইরাকে রয়েছে।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে করা চুক্তির অবসান ঘটাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইরাকের পার্লামেন্টে একটি বিল পাস করা হয়েছে। এরপরেই জার্মানির এমন সিদ্ধান্তের কথা এসেছে। সোমবার জার্মানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ইরাকি সরকার ও পার্লামেন্টের আমন্ত্রণের ভিত্তিতে ইরাকে সামরিক উপস্থিতি ছিল।

এদিকে ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার। এর আগে ইরাকি সরকারকে পাঠানো মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি চিঠিকে ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার পর সোমবার তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন।

আর ওয়াশিংটনের এই বিভ্রান্তির মধ্যেই ইরাকি ভবিষ্যৎ মার্কিন সেনার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।-খবর রয়টার্স, গার্ডিয়ান, এএফপি ও বিবিসির পেন্টাগন বলছে, ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার হচ্ছে বলে ইরাকি সরকারের কাছে পাঠানো মার্কিন এক জেনারেলের ওই চিঠিটি ভুল ছিল।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উইলিয়াম সিলি তার ইরাকি সমকক্ষকে রোববারের তারিখ দেয়া এক চিঠিতে বলেছেন, মার্কিন বাহিনী ইরাক ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চিঠিটি তিনি পাঠিয়েছেন ইরাকে জয়েন্ট ফোর্সের উপ পরিচালক আবদুল আমিরের কাছে।

এতে বলা হয়, স্যার, ইরাকের সার্বভৌমত্ব এবং পার্লামেন্ট ও ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে কম্বাইন্ড জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স সামনের দিনগুলোতে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাহিনীর অবস্থান নতুন করে সাজানো হবে।

চিঠিতে বলা হয়, ইরাকের বাইরে নিরাপদে যাওয়ার জন্য এয়ার ট্রাফিক বাড়ানো সহ কিছু পদক্ষেপ ডার্কনেস আওয়ারে করা হবে। এছাড়া বাগদাদে গ্রিন জোনে নতুন কোয়ালিশন ফোর্স আনা হচ্ছে বলে যে ধারনা তৈরি হয়েছে তাও দূর করা হয় এই চিঠিতে।

এতে বলা হয়, আমাদের চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আপনাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্তে আমরা শ্রদ্ধা জানাই। তিনি বলেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট তাদের বাহিনী নতুন জায়গায় সরিয়ে নেবে। সিলি বলেন, এই কাজটি সারতে জোট বাহিনীকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। নিরাপদ ও দক্ষতার সঙ্গে ইরাক থেকে তাদের বাহিনীকে সরিয়ে নিতে হবে।

মার্কিন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি করছে তেহরান। সেই প্রেক্ষাপটে ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে দেশটির পার্লামেন্টে।

এসপার বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এখন যে অবস্থায় রয়েছি, তার সঙ্গে এই চিঠি অপ্রাসঙ্গিক। এখান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আর মার্কিন সেনাপ্রধান জেনারেল মার্ক মিল্লিই বলেন, ভুলে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এটি ছিল একটি খসড়া। এটা ছিল ভুল। এই চিঠি প্রকাশ করা ঠিক হয়নি।

সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বিরত রাখতে মার্কিন কংগ্রেসে আইন প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।