সমাজের সাথে যে সম্পর্ক সেটিই হচ্ছে আমাদের পরিচয়: ড. মশিউর রহমান

  • আপডেট: ০৫:৩৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২৯

চাঁদপুর, ৩১ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার॥

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, শুধামাত্র ব্যাক্তি কেন্দ্রিক আমাদের পরিচয় নয়, সমাজের সাথে আমাদের যে সম্পর্ক সেটিই হচ্ছে আমাদের পরিচয়। কারণ কোন ব্যাক্তি শুধুমাত্র তার নামে পরিচয় হতে পারে না। তিনি যে সমাজ কিংবা গোষ্ঠির সাথে সম্পর্কিত সেই পরিচয়ে তিনি সমাজের কাছে পরিচিত হন।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর অযাচক আশ্রমে স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব এর পুর্ণজন্মস্থানে শুভজন্মোৎসব উপলক্ষ্যে “চরিত্র গঠন আন্দোলনই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়” শীর্ষক ধর্মীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, আমি যে সমাজে বসাবসা করি সেই সমাজকে সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য কাজ করি, তাহলে সমাজ আমাকে মনে রাখবে। পাশাপাশি ওই সমাজে অন্যরাও যদি ভালো কাজে এগিয়ে এসে অবদান রাখেন তাহলে একটি সুন্দর সমাজ গঠিত হবে। তখন ওই সমাজের সকালেই বলতে পারবে আমরা ওই সমাজের বাসিন্দা।

উদাহরণ স্বরুপ তিনি বলেন, অযাচক আশ্রমে পরমহংসদেব এর বানী অনুসরণ করে যারা চলেন এবং সেই আলোকে যারা কাজ করেন তারাও বলতে পারবেন আমরা পরমহংসদেব এর অনুসারী।

তিনি বলেন, আমাদেরকে সমাজের ভালো মানুষ হতে হবে, বিপদে মানুষেল পাশে দাঁড়াতে হবে। আমি যদি সমাজের শক্তিশালী ব্যাক্তি মনে করে মানুষের ক্ষতি করি, মানুষের অর্থ নিয়ে ফেরৎ না দেই, আইন আমাকে টাকা আদায় করে না দিতে পারে, তাহলে মানুষ আমাকে ভয়পাবে কিন্তু ওই ব্যাক্তি সমাজের একজন অসুস্থ্য ও সমাজের বসবাসের অনুপযোগী মানুষ হিসেবে পরিচিত হবে। স্বামী স্বরূপানন্দ ভাল সমাজ গড়ার বিষয়গুলোই আমাদেরকে শিখিয়েছেন।

ড. মশিউর বলেন, বিভিন্ন ধর্মের লোক আমরা সমাজে বাস করি। যেমন আমি নিজেও ছোট বেলায় প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় অন্য ধর্মের সহপাঠী ছিলেন। তারা কোন ধর্মের এটি নিয়ে কখনো চিন্তা করিনি। তারা আমাদের উৎসবে অংশগ্রহন করতেন, আমরাও তাদের উৎসবে অংশগ্রহন করতাম। ধর্মীয় উৎসবগুলো আমাদেরকে একটি বড় জায়গায় নিয়েগেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।

তিনি মায়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, একজন মা তিনি তার বাবা ও স্বামীর সাথে যদি ভালো আচরণ করেন, তাহলে ঘরের মধ্যে একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং এই আচরণগুলো তাদের সন্তানরা গ্রহন করবেন। তাহলে সুন্দর সমাজ গড়তে নারী ও পুরুষ সকলেরই ভূমিকা রয়েছে।

অযাচক আশ্রমের অধ্যক্ষ সুখরঞ্জন ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে ও অযাচক আশ্রমের বোর্ড অব ট্রাস্টের সদস্য দুলাল দাসের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো: মিজানুর রহমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিনয় ভূষন মজুমদার, সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত রায় চৌধুরী, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, বাংলাদেশ অখন্ড সংগঠনের সদস্য সচিব সুজিত কুমার দে প্রমূখ।

এসময় আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে বরন করে নেন অযাচক আশ্রমের কর্মকর্তাবৃন্দরা। আলোচনা সভার পূর্বে মহানাম কির্তন ও সুরূপানন্দ সংগীত পরিবেশিত হয়। সংগীত পরিবেশন করেন অযাচক আশ্রমের বোর্ড অব ট্রাস্টের সদস্য মানিক রায়।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

সমন্বয়ক আর জামায়াতের কারণে ইউনুছ সরকার ব্যর্থ হবে-ইঞ্জি. মমিনুল হক

সমাজের সাথে যে সম্পর্ক সেটিই হচ্ছে আমাদের পরিচয়: ড. মশিউর রহমান

আপডেট: ০৫:৩৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

চাঁদপুর, ৩১ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার॥

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, শুধামাত্র ব্যাক্তি কেন্দ্রিক আমাদের পরিচয় নয়, সমাজের সাথে আমাদের যে সম্পর্ক সেটিই হচ্ছে আমাদের পরিচয়। কারণ কোন ব্যাক্তি শুধুমাত্র তার নামে পরিচয় হতে পারে না। তিনি যে সমাজ কিংবা গোষ্ঠির সাথে সম্পর্কিত সেই পরিচয়ে তিনি সমাজের কাছে পরিচিত হন।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর অযাচক আশ্রমে স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব এর পুর্ণজন্মস্থানে শুভজন্মোৎসব উপলক্ষ্যে “চরিত্র গঠন আন্দোলনই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়” শীর্ষক ধর্মীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, আমি যে সমাজে বসাবসা করি সেই সমাজকে সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য কাজ করি, তাহলে সমাজ আমাকে মনে রাখবে। পাশাপাশি ওই সমাজে অন্যরাও যদি ভালো কাজে এগিয়ে এসে অবদান রাখেন তাহলে একটি সুন্দর সমাজ গঠিত হবে। তখন ওই সমাজের সকালেই বলতে পারবে আমরা ওই সমাজের বাসিন্দা।

উদাহরণ স্বরুপ তিনি বলেন, অযাচক আশ্রমে পরমহংসদেব এর বানী অনুসরণ করে যারা চলেন এবং সেই আলোকে যারা কাজ করেন তারাও বলতে পারবেন আমরা পরমহংসদেব এর অনুসারী।

তিনি বলেন, আমাদেরকে সমাজের ভালো মানুষ হতে হবে, বিপদে মানুষেল পাশে দাঁড়াতে হবে। আমি যদি সমাজের শক্তিশালী ব্যাক্তি মনে করে মানুষের ক্ষতি করি, মানুষের অর্থ নিয়ে ফেরৎ না দেই, আইন আমাকে টাকা আদায় করে না দিতে পারে, তাহলে মানুষ আমাকে ভয়পাবে কিন্তু ওই ব্যাক্তি সমাজের একজন অসুস্থ্য ও সমাজের বসবাসের অনুপযোগী মানুষ হিসেবে পরিচিত হবে। স্বামী স্বরূপানন্দ ভাল সমাজ গড়ার বিষয়গুলোই আমাদেরকে শিখিয়েছেন।

ড. মশিউর বলেন, বিভিন্ন ধর্মের লোক আমরা সমাজে বাস করি। যেমন আমি নিজেও ছোট বেলায় প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় অন্য ধর্মের সহপাঠী ছিলেন। তারা কোন ধর্মের এটি নিয়ে কখনো চিন্তা করিনি। তারা আমাদের উৎসবে অংশগ্রহন করতেন, আমরাও তাদের উৎসবে অংশগ্রহন করতাম। ধর্মীয় উৎসবগুলো আমাদেরকে একটি বড় জায়গায় নিয়েগেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।

তিনি মায়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, একজন মা তিনি তার বাবা ও স্বামীর সাথে যদি ভালো আচরণ করেন, তাহলে ঘরের মধ্যে একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং এই আচরণগুলো তাদের সন্তানরা গ্রহন করবেন। তাহলে সুন্দর সমাজ গড়তে নারী ও পুরুষ সকলেরই ভূমিকা রয়েছে।

অযাচক আশ্রমের অধ্যক্ষ সুখরঞ্জন ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে ও অযাচক আশ্রমের বোর্ড অব ট্রাস্টের সদস্য দুলাল দাসের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো: মিজানুর রহমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিনয় ভূষন মজুমদার, সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত রায় চৌধুরী, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, বাংলাদেশ অখন্ড সংগঠনের সদস্য সচিব সুজিত কুমার দে প্রমূখ।

এসময় আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে বরন করে নেন অযাচক আশ্রমের কর্মকর্তাবৃন্দরা। আলোচনা সভার পূর্বে মহানাম কির্তন ও সুরূপানন্দ সংগীত পরিবেশিত হয়। সংগীত পরিবেশন করেন অযাচক আশ্রমের বোর্ড অব ট্রাস্টের সদস্য মানিক রায়।