অনলাইন ডেস্ক:
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় উপস্থিত জনতা ও শিক্ষার্থীরা দেখলো অন্যরকম এক ভারতকে যেখানে মুসলিম শিক্ষার্থীরা নামাজ পড়ছে আর পাহাড়া দিচ্ছে হিন্দু, শিখসহ বিভিন্ন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের বদৌলতে স্বল্প সময়েই সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে।
ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের হাতে হাত ধরে তৈরি করা ব্যারিকেডের ঘেরাটোপে নামাজ পড়লেন মুসলিম ছাত্ররা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ জনতাও। একদিকে যখন প্রতিবাদের আঁচে পুড়ছে দিল্লি, ঠিক তখনই অন্য একতার দৃশ্য দেখল সারা ভারত।
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংসদে ওঠার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে পুরো ভারত। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরই সেই বিল আইনে পরিণত হয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রতিবাদের ঝড়। শিক্ষার্থী থেকে বর্ষীয়ান নাগরিক, খেটে খাওয়া মজদুর থেকে রুপালি পর্দার তারকা একসঙ্গে পথে নেমেছেন।
বির্তকিত আইন প্রত্যাহারের দাবিতে গলা মিলিয়েছেন সবাই। তবে সেই প্রতিবাদী স্বর রোধ করতে পুলিশ-প্রশাসনও আগ্রাসী হয়েছে। আন্দোলনে নেমে উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে পুলিশ।
বিক্ষুব্ধ জনতার অভিযোগ, ধর্মের ওপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক চরিত্র বদলের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। কিন্তু ভারতবাসী আজও বিশ্বাস করে, মোরা একই বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু মুসলমান।
আজ বৃহস্পতিবার ভারতবাসীর সেই বিশ্বাসই প্রতিফলিত হলো দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে। আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। সেখানেই অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা হাত ধরে মানবপ্রাচীর তৈরি করে। সেই মানবপ্রাচীরের মাঝেই নামাজ পড়েন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় জমে যায়। আজকের এই ছবি আরেকবার প্রমাণ করে দেয়, ভারতের মানুষজন আজও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী।