আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরাকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দিনটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও রক্তাক্ত। নাটকীয়ভাবে একটি ইরানি কনস্যুলেটে অগ্নিসংযোগের পর সরকারি বাহিনীর ধরপাকড়ে অন্তত ৪৫ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপির খবরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
দেশটির রাজধানী ও দক্ষিণাঞ্চল ব্যাপক বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছে। ২০০৩ সালে মার্কিন হামলায় প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাতের পর এটাই ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ সড়ক সহিংসতা।
ইরাকি সরকার ও তাদের সমর্থক প্রতিবেশী ইরানের বিরুদ্ধে নিজেদে ক্ষোভ ঝাড়তে বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় মেতে ওঠেন প্রতিবাদকারীরা। জবাবে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির হিসাব বলছে, গত অক্টোবরের শুরু থেকে এই বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৯০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন দেড় হাজারের বেশি।
ইরাকি মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসারে, বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাসিরিয়ায়। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে ২৯ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে ও ধরপাকড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে রয়টার্সের খবর জানিয়েছে।
বাগদাদের চার জন ও শিয়াদের পবিত্র শহর নাজাফে ১০ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার ওই শহরটিতে একটি ইরানি কনস্যুলেটে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।
ইরাকে তেহরানের রাজনৈতিক প্রভাবের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন। তারা চিৎকার করেন বলেন, ইরাকের জয় হোক, ইরান নিপাত যাক।
জবাবে বেশ কয়েকটি উত্তাল শহরে সেনা মোতায়েন করতে সেনাপ্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি।
নাসিরিয়ায় ব্যাপক ধরপাকড়ের পর জেনারেল জামিল শুমারি নামের এক কমান্ডারকে বহিষ্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানকার রাজধানী ধিকার প্রদেশের গভর্নর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেছেন।
ভিডিওতে দেখা গেছে, অগ্নিসংযোগের পর কনস্যুলেট ভবন থেকে যখন ধোঁয়ার কুণ্ডলী বেরিয়ে আসছিল, বিক্ষোভকারীদের তখন উল্লাস করতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নিরাপত্তাজনিত কারণে ইরাক সীমান্তের মেহরান সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ইরান।
দেশটির আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহরের খবরে বলা হয়েছে, ইরাকের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও উত্তপ্ত অবস্থার কারণে মেহরান সীমান্ত আজ রাত থেকে বন্ধ থাকবে। তবে এই সীমান্ত কখন খুলে দেয়া হবে, তা জানানো হয়নি।