২০ হাজার টাকায় প্রধামন্ত্রী কার্যালয়ের ফাইল বের করে দিতেন ফাতেমা

  • আপডেট: ০২:৫০:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মে ২০২০
  • ৩৩

অনলাইন ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে ফাতেমা সরকারপ্রধানের অভিমত সম্বলিত একটি নথি মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বের করে দেয়ার কথা ‘স্বীকার করেছেন’ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ওসি শামীম উর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমাকে রোববার প্রথম প্রহরে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি ঢাকার একজন মহানগর হাকিমের কাছে ‘দোষ স্বীকার করে’ জবানবন্দি দেন।’

তিনি বলেন, ‘আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ফাতেমা মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই নথিটি বের করে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের নামও বলেছেন।’

আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর ফাতেমাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তিনজনের নামের প্রস্তাব সম্বলিত ওই নথিতে প্রধানমন্ত্রী অভিমত দেয়ার পর তা কার্যালয় থেকে বের করে ‘জালিয়াতির মাধ্যমে’ সিদ্ধান্ত বদলে দেয়া হয়। পরে আবার সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় বঙ্গভবনে।

জালিয়াতির ঘটনাটি ধরা পড়লে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার ‘সম্পৃক্ততা’ বেরিয়ে আসে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে গত ৫ মে তেজগাঁও থানায় মামলা করার পরদিন ভোলা থেকে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

একই রাতে নোয়াখালী থেকে ফরহাদ এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে নাজিমউদ্দিন নামে বিনিয়োগ বোর্ডের একজন কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়।

শনিবার ওই তিনজনকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাইলে প্রত্যেকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

এরপর রোববার প্রথম প্রহরে মতিঝিল সরকারি টিঅ্যান্ডটি কলোনির বাসা থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী নথি দেখে অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। কিন্তু চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আগেই সেটি বাইরে চলে যায় এবং প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বদলে প্রথম দুজনের নামের পাশে ‘ক্রস’ চিহ্ন দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যজনের নামের পাশে সম্মতিজ্ঞাপনের ‘টিক’ চিহ্ন দেয়া হয়।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

“জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগনের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন”-আনোয়ার হোসেন খোকন

২০ হাজার টাকায় প্রধামন্ত্রী কার্যালয়ের ফাইল বের করে দিতেন ফাতেমা

আপডেট: ০২:৫০:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মে ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে ফাতেমা সরকারপ্রধানের অভিমত সম্বলিত একটি নথি মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বের করে দেয়ার কথা ‘স্বীকার করেছেন’ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ওসি শামীম উর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমাকে রোববার প্রথম প্রহরে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি ঢাকার একজন মহানগর হাকিমের কাছে ‘দোষ স্বীকার করে’ জবানবন্দি দেন।’

তিনি বলেন, ‘আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ফাতেমা মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই নথিটি বের করে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের নামও বলেছেন।’

আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর ফাতেমাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তিনজনের নামের প্রস্তাব সম্বলিত ওই নথিতে প্রধানমন্ত্রী অভিমত দেয়ার পর তা কার্যালয় থেকে বের করে ‘জালিয়াতির মাধ্যমে’ সিদ্ধান্ত বদলে দেয়া হয়। পরে আবার সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় বঙ্গভবনে।

জালিয়াতির ঘটনাটি ধরা পড়লে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার ‘সম্পৃক্ততা’ বেরিয়ে আসে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে গত ৫ মে তেজগাঁও থানায় মামলা করার পরদিন ভোলা থেকে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

একই রাতে নোয়াখালী থেকে ফরহাদ এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে নাজিমউদ্দিন নামে বিনিয়োগ বোর্ডের একজন কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়।

শনিবার ওই তিনজনকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাইলে প্রত্যেকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

এরপর রোববার প্রথম প্রহরে মতিঝিল সরকারি টিঅ্যান্ডটি কলোনির বাসা থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী নথি দেখে অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। কিন্তু চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আগেই সেটি বাইরে চলে যায় এবং প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বদলে প্রথম দুজনের নামের পাশে ‘ক্রস’ চিহ্ন দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যজনের নামের পাশে সম্মতিজ্ঞাপনের ‘টিক’ চিহ্ন দেয়া হয়।