হাজীগঞ্জ, ৪ এপ্রিল, রবিবার:
চাঁদপুরের দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ থেকে ২০০৭ সালের ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ২ নং বাকিলা ইউনিয়নের বোরখাল গ্রামের বড় বাড়ীর দিনমজুর আব্দুল কাদের জিলানী (৪৫)।
অভাব অনটনের কারণে ঋণের টাকা ফেরত দিতে না পারায় গত একমাস ধরে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন। তার স্ত্রী মুন্নী বেগম তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগ মুহূর্তে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তিন সন্তানের মুখে তিন বেলা খাবার দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত তিন দিনে শুধুমাত্র এক বেলা ভাত রান্না করেছে। তরকারি জোগাড় করতে পারেননি। বড় মেয়ে লিজাকে আত্মীর বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেও ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে দোচালা ঘরে কাটছে করোনার দিনগুলো। এমন অসহায়ত্বের খবর পেয়ে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকার সাংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম পাশে দাঁড়িয়েছেন।
শুক্রবার সকালে সাংসদের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইব্রাহীম খাঁন রনি দলীয় নেতাকর্মীরা গিয়ে ৫ হাজার টাকা অনুদান তুলে দেন। ওইসময় সাংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম জিলানীর স্ত্রী মুন্নী বেগমের সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন।
সাংসদ স্ত্রী মুন্নী বেগমকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, শীঘ্রই সরকারিভাবে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। এছাড়া তার স্বামীকে জেল থেকে জামিনে আনতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন।
জানা গেছে, দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ থেকে ২০০৭ সালে গার্মেন্টস ব্যবসা দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা ঋণ নেয় জিলানী। তারপর ওই ঋণের কয়েকটি কিস্তি দিতে পারলেও বাকিগুলো দিতে পারেনি। হিসেব করে দেখা গেছে, দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ প্রতিপক্ষ ছিলেন এর কাছ থেকে ৬ হাজার ৩শ ৫০ টাকা পাওনা রয়েছে। সেই টাকা দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধে মামলার খরচ ও লাভ্যাংশ দেখিয়ে প্রায় লাখ টাকা দাবী করে চাঁদপুর আদালতে মামলা করেন দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ এর পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান উৎপল।
মামলার বাদী দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ এর পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান উৎপল বলেন, জিলানীর আইনজীবী, নাফের শাহ, জুলহাসসহ তার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে সর্বশেষ ৩০ হাজার টাকা দফারফা হয়েছে। এখন ওই ৩০ হাজার টাকা দিলে আমরা জামিনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবো।
জিলানীর স্ত্রী বলেন, ঘরে ভাত নাই। তিন মেয়েকে নিয়ে খুব অসহায় হয়ে আছি। স্বামী জেলে। বড় মেয়ে লিজা (১৭)। তার পড়ালেখা বন্ধ। মেজু মেয়ে লিমা (১৩)। সে বোরখাল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। ছোট মেয়ে লামিয়া (১)। এমপি সাহেবের সাথে কথা বলতে পেরে খুব খুশি হয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ২নং বাকিলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইব্রাহীম খাঁন রনি বলেন, এমন অসহায় পরিবারের প্রতি সাংসদের নেয়া পদক্ষেপগুলো যথাযথভাবে কার্যকর করতে দায়িত্ব পালন করবো।
শুক্রবার সকালে বোরখাল বড় বাড়ীতে গিয়ে সাংসদের অনুদান প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কালাম, আওয়ামীলীগ নেতা বাদল, ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি ও ইউনিয়ন যুবলীগ সদস্য শাহাদাৎ হোসেন আকাশ, সদস্য হাবীব ও আরিফ হোসেন প্রমুখ।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
https://www.facebook.com/NotunerKotha/videos/843977482771601/