১০ লাখ টাকার প্রতারণা মামলায় কচুয়ার ইমাম হোসেন চৌধুরী জেল হাজতে

  • আপডেট: ১০:৫৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
  • ৩৬

ছবি-সংগৃহিত।

প্রতারণা ও টাকা আত্মসাত জালিয়াতির অভিযোগে চাঁদপুর কোর্টে দায়ের করা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী কচুয়ার ইমাম হোসেন চৌধুরী (৪৮) কে এর জামিন নামঞ্জুর করে বিজ্ঞ আদালত জেল হাজতে প্রেরণ নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ৯ মে সকালে চাঁদপুর জজকোর্ট হাজিরা দিতে এলে আদালত সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে ভেল ক্যানসেল করে চাঁদপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

অভিযোগ দেখা যায়, হাজীগঞ্জ থানার মকিমাবাদ গ্রামের হাবিবুর রহমান এর স্ত্রী কাজলী বেগম (৪৫) তাহার অভিযোগ এ জানান, কচুয়া থানার কাতলা গ্রামের আলহাজ্ব মোঃ সুলতান আহমেদ চৌধুরীর ছেলে ইমাম হোসেন চৌধুরী (৪৮), কাজলী বেগমের কাছে ৪ শতক জায়গা বিক্রির কথা বলে।

কথামতে কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরী ৪ শতক জায়গা কিনতে সম্মত হয়। জমির মোট মূল্য নির্ধারন করা হয় ২৫,০০০০০/= টাকা। কথামোতাবেক কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরীকে নগদ ১০,০০০০০/= টাকা দিয়া দেয়। ইমাম হোসেন উক্ত জমি বায়নানামা বাবদ ১০০ টাকার ৩ টি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে কাজলী বেগমকে ইমাম হোসেন জমি রেজিস্ট্রি করিয়া দেয় নাই। এমনকি কাজলীর প্রদত্ত টাকাও ফেরত দিতেছে না। কাজলী বেগম তার টাকা চাইলে ইমাম হোসেন কাজলী বেগমকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করিতেছে।

গত ০৮/০৮/২০২৩ ইং মূলে বিজ্ঞ আদালতের আদেশনামার কপিসহ নালিশী দরখাস্ত প্রাপ্ত হয়ে এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল এর কার্যালয়, সিআইডি, ঢাকার স্মারক নং-এসএস/চাঁদপুর/কোর্ট/৯৮-২০২৩/২৪২, তারিখ-০৩/০৮/২০২৩ ইং মূলে মামলাটি তদন্তের জন্য দেয়া হলে ০৩/০৮/২০২৩ ইং তারিখ আদেশ প্রাপ্ত হয়ে মামলার তদন্ত আরম্ভ করে। মামলাটি যথারীতি তদন্ত সমাপ্ত করে সিআইডির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেনদ দাখিল করে, যাহার স্মরক নং-২৭৬, তারিখ- ১৮/০২/২০২৪ খ্রিঃ। উক্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করিয়া সিআইডির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কাজলী বেগমকে পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করিবার নির্দেশ প্রদান করেন। যাহার স্মারক নং-এসএস/চাঁদপুর/কোর্ট/৯৮-২০২৩/১০৯, তারিখ-১৬/০৪/২০২৩ খ্রিঃ।উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামি ইমাম হোসেনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আরো জানাযায়, দলিলে ইমাম হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষর করিয়াছে এবং বিদেশ যাওয়ার জন্য উল্লেখিত জমি বিক্রি করিয়া দেওয়ার প্রস্তাব করিয়া কাজলী বেগম নিকট থেকে বায়না ববাদ ১০ লক্ষ টাকা নিয়া বিদেশ চলিয়া যায়। বিদেশে যাওয়ার সময় ইমাম হোসেনকে জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে বলে তখন ইমাম জানায় সে বিদেশ থেকে ঘুরে এসে উক্ত জমি দলিল করিয়া দিবে। ইমাম হোসেন চৌধুরী বিদেশ থেকে ঘুরে আসার পর কাজলী বেগম তাহার বায়নাকৃত জমি রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে বলে কিন্তু ইমাম হোসেন জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে বিভিন্ন তালবাহানা করিতে থাকে। তদন্তকালে উক্ত বিষয়ের রহস্য উদঘাটন করিতে গিয়া জানা যায় বায়নাকৃত জায়গাটি যখন বায়নানামা দলিল করা হয়েছে তখন জমির মূল্য ছিল অপেক্ষাকৃত কম। পরবর্তীতে উক্ত জমির পাশ দিয়ে পৌরসভার রাস্তা হওয়ায় জমির মূল্য বৃদ্ধি পাইয়াছে বহুগুন, সেই কারনে ইমাম হোসেন উক্ত জমি গোপনে অন্যত্র বিক্রি করিবার পায়তারা করিতেছে মর্মে নিরপেক্ষ সাক্ষীগন জানায়।

ওই এলাকার শওকত খান নামের এক লোক জানান, আমি একজন কৃষক। কাজলী আমার প্রতিবেশি বোন হয়। ইমাম হোসেন চৌধুরীও আমার প্রতিবেশি। ইমাম হোসেন চৌধুরী কাজল ও তার স্বামীর নিকট ৪ শতক জায়গা বিক্রি করার প্রস্তাব করে। ইমাম হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাব পেয়ে ও তার স্বামী হাবিবুর রহমান উক্ত জায়গা কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। কাজলী ও তার স্বামীর সহিত ইমাম হোসেন চৌধুরী তার জায়গা বিক্রির ব্যপারে কথাবার্তা পাকাপাকি করে। এমতাবস্থায় জমির মোট মূল্য নির্ধারন করা হয় ২৫ লক্ষ টাকা, বায়নাপত্র দলিল করার সময় কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরীকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরীকে ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করার সময় আমি উপস্থিত থাকিয়া উক্ত বায়নাপত্র দলিলে স্বাক্ষর করি।

পরবর্তীতে ইমাম হোসেন চৌধুরী কাজলী বেগমকে জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়া দেয় নাই, এমনকি কাজলী বেগমের পাওনা ১০ লক্ষ টাকাও ফেরত দিতেছে না। ইমাম হোসেন এর উক্ত জায়গাটির বর্তমান বাজার মূল্য অনেক বেশি হওয়ার কারনে ইমাম হোসেন উক্ত জায়গা কাজলী রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে কালক্ষেপন করিতেছে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করিতেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই অভিযোগ, নেতা পরিচয়ে চুরি ও প্রতারণার পাশাপাশী নারী দেহ ব্যবসায়ীদেন নিয়ে এলাকার মানুষদের লোভে ফেলে ফাঁদ তৈরী করে ইমাম হোসেন। ভুক্ত ভোগীরা লোক লজ্জার ভয়ে প্রতিবাদ করেনি। এছাড়া এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন চাকুরি দেয়ার কথা বলে অর্থ নিয়ে প্রতারণা করাসহ নানান অভিযোগ রয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে না-রিজভী

১০ লাখ টাকার প্রতারণা মামলায় কচুয়ার ইমাম হোসেন চৌধুরী জেল হাজতে

আপডেট: ১০:৫৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

প্রতারণা ও টাকা আত্মসাত জালিয়াতির অভিযোগে চাঁদপুর কোর্টে দায়ের করা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী কচুয়ার ইমাম হোসেন চৌধুরী (৪৮) কে এর জামিন নামঞ্জুর করে বিজ্ঞ আদালত জেল হাজতে প্রেরণ নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ৯ মে সকালে চাঁদপুর জজকোর্ট হাজিরা দিতে এলে আদালত সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে ভেল ক্যানসেল করে চাঁদপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

অভিযোগ দেখা যায়, হাজীগঞ্জ থানার মকিমাবাদ গ্রামের হাবিবুর রহমান এর স্ত্রী কাজলী বেগম (৪৫) তাহার অভিযোগ এ জানান, কচুয়া থানার কাতলা গ্রামের আলহাজ্ব মোঃ সুলতান আহমেদ চৌধুরীর ছেলে ইমাম হোসেন চৌধুরী (৪৮), কাজলী বেগমের কাছে ৪ শতক জায়গা বিক্রির কথা বলে।

কথামতে কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরী ৪ শতক জায়গা কিনতে সম্মত হয়। জমির মোট মূল্য নির্ধারন করা হয় ২৫,০০০০০/= টাকা। কথামোতাবেক কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরীকে নগদ ১০,০০০০০/= টাকা দিয়া দেয়। ইমাম হোসেন উক্ত জমি বায়নানামা বাবদ ১০০ টাকার ৩ টি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে কাজলী বেগমকে ইমাম হোসেন জমি রেজিস্ট্রি করিয়া দেয় নাই। এমনকি কাজলীর প্রদত্ত টাকাও ফেরত দিতেছে না। কাজলী বেগম তার টাকা চাইলে ইমাম হোসেন কাজলী বেগমকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করিতেছে।

গত ০৮/০৮/২০২৩ ইং মূলে বিজ্ঞ আদালতের আদেশনামার কপিসহ নালিশী দরখাস্ত প্রাপ্ত হয়ে এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল এর কার্যালয়, সিআইডি, ঢাকার স্মারক নং-এসএস/চাঁদপুর/কোর্ট/৯৮-২০২৩/২৪২, তারিখ-০৩/০৮/২০২৩ ইং মূলে মামলাটি তদন্তের জন্য দেয়া হলে ০৩/০৮/২০২৩ ইং তারিখ আদেশ প্রাপ্ত হয়ে মামলার তদন্ত আরম্ভ করে। মামলাটি যথারীতি তদন্ত সমাপ্ত করে সিআইডির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেনদ দাখিল করে, যাহার স্মরক নং-২৭৬, তারিখ- ১৮/০২/২০২৪ খ্রিঃ। উক্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করিয়া সিআইডির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কাজলী বেগমকে পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করিবার নির্দেশ প্রদান করেন। যাহার স্মারক নং-এসএস/চাঁদপুর/কোর্ট/৯৮-২০২৩/১০৯, তারিখ-১৬/০৪/২০২৩ খ্রিঃ।উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামি ইমাম হোসেনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আরো জানাযায়, দলিলে ইমাম হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষর করিয়াছে এবং বিদেশ যাওয়ার জন্য উল্লেখিত জমি বিক্রি করিয়া দেওয়ার প্রস্তাব করিয়া কাজলী বেগম নিকট থেকে বায়না ববাদ ১০ লক্ষ টাকা নিয়া বিদেশ চলিয়া যায়। বিদেশে যাওয়ার সময় ইমাম হোসেনকে জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে বলে তখন ইমাম জানায় সে বিদেশ থেকে ঘুরে এসে উক্ত জমি দলিল করিয়া দিবে। ইমাম হোসেন চৌধুরী বিদেশ থেকে ঘুরে আসার পর কাজলী বেগম তাহার বায়নাকৃত জমি রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে বলে কিন্তু ইমাম হোসেন জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে বিভিন্ন তালবাহানা করিতে থাকে। তদন্তকালে উক্ত বিষয়ের রহস্য উদঘাটন করিতে গিয়া জানা যায় বায়নাকৃত জায়গাটি যখন বায়নানামা দলিল করা হয়েছে তখন জমির মূল্য ছিল অপেক্ষাকৃত কম। পরবর্তীতে উক্ত জমির পাশ দিয়ে পৌরসভার রাস্তা হওয়ায় জমির মূল্য বৃদ্ধি পাইয়াছে বহুগুন, সেই কারনে ইমাম হোসেন উক্ত জমি গোপনে অন্যত্র বিক্রি করিবার পায়তারা করিতেছে মর্মে নিরপেক্ষ সাক্ষীগন জানায়।

ওই এলাকার শওকত খান নামের এক লোক জানান, আমি একজন কৃষক। কাজলী আমার প্রতিবেশি বোন হয়। ইমাম হোসেন চৌধুরীও আমার প্রতিবেশি। ইমাম হোসেন চৌধুরী কাজল ও তার স্বামীর নিকট ৪ শতক জায়গা বিক্রি করার প্রস্তাব করে। ইমাম হোসেন চৌধুরীর প্রস্তাব পেয়ে ও তার স্বামী হাবিবুর রহমান উক্ত জায়গা কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। কাজলী ও তার স্বামীর সহিত ইমাম হোসেন চৌধুরী তার জায়গা বিক্রির ব্যপারে কথাবার্তা পাকাপাকি করে। এমতাবস্থায় জমির মোট মূল্য নির্ধারন করা হয় ২৫ লক্ষ টাকা, বায়নাপত্র দলিল করার সময় কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরীকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। কাজলী বেগম ইমাম হোসেন চৌধুরীকে ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করার সময় আমি উপস্থিত থাকিয়া উক্ত বায়নাপত্র দলিলে স্বাক্ষর করি।

পরবর্তীতে ইমাম হোসেন চৌধুরী কাজলী বেগমকে জায়গা রেজিস্ট্রি করিয়া দেয় নাই, এমনকি কাজলী বেগমের পাওনা ১০ লক্ষ টাকাও ফেরত দিতেছে না। ইমাম হোসেন এর উক্ত জায়গাটির বর্তমান বাজার মূল্য অনেক বেশি হওয়ার কারনে ইমাম হোসেন উক্ত জায়গা কাজলী রেজিস্ট্রি করিয়া দিতে কালক্ষেপন করিতেছে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করিতেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই অভিযোগ, নেতা পরিচয়ে চুরি ও প্রতারণার পাশাপাশী নারী দেহ ব্যবসায়ীদেন নিয়ে এলাকার মানুষদের লোভে ফেলে ফাঁদ তৈরী করে ইমাম হোসেন। ভুক্ত ভোগীরা লোক লজ্জার ভয়ে প্রতিবাদ করেনি। এছাড়া এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন চাকুরি দেয়ার কথা বলে অর্থ নিয়ে প্রতারণা করাসহ নানান অভিযোগ রয়েছে।