হাজীগঞ্জে মা হারা তিন মাসের অসহায় শিশু ফারুকের পাশে ডিসি, এসপি ও ইউএনও

  • আপডেট: ১২:০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৪০

নিজস্ব প্রতিনিধি :

৯০ দিন বয়সী মা হারা অসহায় শিশু ওমর ফারুকের বাবা একজন দিনমজুর। প্রতিদিনের মজুরীতেই সংসার চলে তার। কিন্তু কোন দিন কাজ থাকে কোন দিন থাকে না। এদিকে মাঠে তার কোন চাষযোগ্য জমিও নেই। ফলে সারাবছরই অভাবের মধ্যে দিন কাটে তাদের।

এমন অবস্থায় গত ২০ ফেব্রæয়ারি শনিবার মধ্যরাতে জেলার হাজীগঞ্জের ৯নং গন্ধব্যপুর ইউনিয়নের মোহম্মদপুর গ্রামের শিশু ওমর ফারুকের মা রাবেয়া বেগম (৪০) মৃত্যু বরণ করেন। ডায়াবেটিস, লিভার, জরায়ু ইনপেকশন, রক্তশূন্যতা সহ নানান জটিল রোগে ভুগে অবশেষে রাবেয়ার মৃত্যু হয়। দিনমজুরের স্ত্রী রাবেয়া। যেখানে নূন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে উন্নত চিকিৎসা করানোটা ছিল অধরা। এখনও বেঁচে আছে মা হারা ফারুক। অভাবী বাবার সংসারে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ফারুকের প্রতিদিনের খাবার ও ঔষধ কেনা নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন দিনমজুর বাবা হোসেন ।

এমন হৃদয়বিধারক ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেন একই এলাকার গণমাধ্যম কর্মী খালেকুজ্জামান শামিম ও সাইফুল ইসলাম সিফাত। মুহুর্তে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন আইডি, গ্রæপ ও পেজে। নজর পড়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার) এর। তাৎক্ষণিক হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন সর্বাত্মক সহযোগীতা করার। ওইদিন রাতেই ওসি হারুনুর রশিদ দুধ, চিনি, সূজি, মিশ্রি সহ নগদ ৫ হাজার টাকা সহায়তা তুলে দেন শিশু ওমর ফারুকের বাবার হাতে।

এরপর সহযোগীতার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তার।

বুধবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হন শিশু ওমর ফারুকের বাবা হোসেন ও কলেজ পড়ুয়া বোন শান্তা ইসলাম। ওই সময় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ফুটফুটে চেহারার ফারুকের পরিবারের কাছে নগদ ১০ হাজর টাকা তুলে দেন। এছাড়া হাজীগঞ্জ নির্বাহী অফিসারকে শিশু খাদ্য সহ প্রয়োজনীয় সহযোগীতার নির্দেশ দেন।

একই দিন বুধবার বিকেলে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও মোমেনা আক্তার শিশু ওমর ফারুকের পরিবারের নিকট ল্যাক্টোজেন দুধ ৪ প্যাকেট, সূজি (২.৫ কেজি), চিনি ৩ কেজি, মিশ্রি ৫ প্যাকেট, পোশাক দুই সেট, চুচু ৬টা, পিডার ১টা সহ অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেন। ওইসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন।

এছাড়াও আগামী দু একদিনের মধ্যে ৫ হাজার টাকার সহযোগীতা করার প্রতিশ্রæতি দেন ইউএনও মোমেনা আক্তার।

দিনমজুর মো. হোসেনের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে শান্তা ইসলাম (১৯), কাকৈরতলা জনতা কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ও মারিয়া আক্তার শিফা (১৫) জগনাথপুর হাজী এরশাদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

নিজের দল বিলুপ্ত করে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন নুর!

হাজীগঞ্জে মা হারা তিন মাসের অসহায় শিশু ফারুকের পাশে ডিসি, এসপি ও ইউএনও

আপডেট: ১২:০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধি :

৯০ দিন বয়সী মা হারা অসহায় শিশু ওমর ফারুকের বাবা একজন দিনমজুর। প্রতিদিনের মজুরীতেই সংসার চলে তার। কিন্তু কোন দিন কাজ থাকে কোন দিন থাকে না। এদিকে মাঠে তার কোন চাষযোগ্য জমিও নেই। ফলে সারাবছরই অভাবের মধ্যে দিন কাটে তাদের।

এমন অবস্থায় গত ২০ ফেব্রæয়ারি শনিবার মধ্যরাতে জেলার হাজীগঞ্জের ৯নং গন্ধব্যপুর ইউনিয়নের মোহম্মদপুর গ্রামের শিশু ওমর ফারুকের মা রাবেয়া বেগম (৪০) মৃত্যু বরণ করেন। ডায়াবেটিস, লিভার, জরায়ু ইনপেকশন, রক্তশূন্যতা সহ নানান জটিল রোগে ভুগে অবশেষে রাবেয়ার মৃত্যু হয়। দিনমজুরের স্ত্রী রাবেয়া। যেখানে নূন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে উন্নত চিকিৎসা করানোটা ছিল অধরা। এখনও বেঁচে আছে মা হারা ফারুক। অভাবী বাবার সংসারে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ফারুকের প্রতিদিনের খাবার ও ঔষধ কেনা নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন দিনমজুর বাবা হোসেন ।

এমন হৃদয়বিধারক ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেন একই এলাকার গণমাধ্যম কর্মী খালেকুজ্জামান শামিম ও সাইফুল ইসলাম সিফাত। মুহুর্তে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন আইডি, গ্রæপ ও পেজে। নজর পড়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার) এর। তাৎক্ষণিক হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন সর্বাত্মক সহযোগীতা করার। ওইদিন রাতেই ওসি হারুনুর রশিদ দুধ, চিনি, সূজি, মিশ্রি সহ নগদ ৫ হাজার টাকা সহায়তা তুলে দেন শিশু ওমর ফারুকের বাবার হাতে।

এরপর সহযোগীতার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তার।

বুধবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হন শিশু ওমর ফারুকের বাবা হোসেন ও কলেজ পড়ুয়া বোন শান্তা ইসলাম। ওই সময় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ফুটফুটে চেহারার ফারুকের পরিবারের কাছে নগদ ১০ হাজর টাকা তুলে দেন। এছাড়া হাজীগঞ্জ নির্বাহী অফিসারকে শিশু খাদ্য সহ প্রয়োজনীয় সহযোগীতার নির্দেশ দেন।

একই দিন বুধবার বিকেলে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও মোমেনা আক্তার শিশু ওমর ফারুকের পরিবারের নিকট ল্যাক্টোজেন দুধ ৪ প্যাকেট, সূজি (২.৫ কেজি), চিনি ৩ কেজি, মিশ্রি ৫ প্যাকেট, পোশাক দুই সেট, চুচু ৬টা, পিডার ১টা সহ অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেন। ওইসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন।

এছাড়াও আগামী দু একদিনের মধ্যে ৫ হাজার টাকার সহযোগীতা করার প্রতিশ্রæতি দেন ইউএনও মোমেনা আক্তার।

দিনমজুর মো. হোসেনের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে শান্তা ইসলাম (১৯), কাকৈরতলা জনতা কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ও মারিয়া আক্তার শিফা (১৫) জগনাথপুর হাজী এরশাদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত।