প্রয়াত আবদুর রব মিয়ার ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

  • আপডেট: ০৪:৪৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০
  • ৩৮

৮ জানুয়ারী- ২০২০ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা, চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহ্রাস্তি) নির্বাচনী এলাকার প্রাক্তণ জাতীয় সংসদ সদস্য প্রয়াত আবদুর রব মিয়ার ২৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী।

১৯৯৩ সালের ৮ জানুযারী দিবাগত রাত ১০.৪৫ মিনিটে সময় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি স্ত্রী, ৬ ছেলে, ৩ মেয়ে নাতী -নাতনি, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, সংগঠনের হাজার হাজার নেতা কর্মীদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে পরপারে চলে যান। তার মৃত্যু সংবাদ জানার সাথে সাথে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার ঢাকাস্থ সর্বস্তরের মানুষ প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখার জন্য বারডেম হাসপাতালে ছুটে যান। লোকে লোকারন্য হয়ে উঠে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ। অনেকেই তখন স্বজন হারানোর ব্যাথায় চোখের জল মুছতে দেখা যায়।

নীতি আদর্শের প্রতি অবিচল, বিশাল হৃদয় ও ব্যক্তিত্বের অধিকারী, সাধারণ মানুষ ও সংগঠনের কর্মীদের প্রাণ পুরুষ, সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবির উপর মজিব কোট পড়া চির চেনা কত আপন বটবৃক্ষের ছায়ার মত সাহসী পুরুষ চাঁদপুরের বঙ্গবন্ধু আবদুর রবের শোক সংবাদ পৌছার পরই হাজীগঞ্জের চারিদিকে কান্নার রোল পড়ে যায়। আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ ছুটে আসে পশ্চিম বাজার, মসজিদ মার্কেটের আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। যেখানে মৃত্যুর পূর্বে তিনি নিয়মিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংগঠনের বিষয় নিয়ে আলাপ চারিতায় মগ্ন থাকতেন। হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মাইক দিয়ে প্রথম তার শোক সংবাদ প্রচার করা হয়। এর পর রাতেই হাজীগঞ্জের পৌর এলাকা ও ইউনিয়ন সমুহের প্রত্যেক ওয়ার্ডে গ্রামে গ্রামে সংগঠনের কর্মীরা বেবী টেক্সী যোগে মাইকে তাদের প্রিয় নেতার মৃত্যু সংবাদ প্রচার করে। জ্যেষ্ঠ থেকে কনিষ্ঠ সকল নেতাকর্মী, সমর্থক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবি, কর্মযোগী, ছাত্র, শিক্ষক, অবাল বৃদ্ধবনিতা দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষ তার এই অকাল মৃত্যুতে শোকাভিভুত হয়ে পড়ে। অনেককে ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদতে দেখা যায়।

হাজীগঞ্জ উপজেলার মকিমাবাদ গ্রামের মিঞা বাড়িতে চির নিদ্রায় শায়িত, আবদুর রব মকিমাবাদ গ্রামের মিঞা বাড়ীতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আমিন মিয়া সাহেবের যশ, খ্যাতি তখন আকাশ চুম্বি। মাতা এয়াকুতুন্নেছা ছিলেন গৃহিনী, তিন ভাই দু’বোনের মধ্যে রব সাহেব ছিলেন ৪র্থ।

স্কুল পড়াকালীন সরকারি চাকুরীজীবি খালুর সাথে থাকা অবস্থায় রংপুরে তাঁর স্কুল জীবন কাটে। স্কুলে পড়াকালীন আবদুর রব ছিলেন স্বাধীন চেতা, সাহসী, বিনয়ী, বন্ধু প্রিয়। ১৯৭২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি ঢাকা জগন্নাথ কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং কলেজের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

২১ শে ফেব্রুয়ারী ভাষা দিবসে শহীদ বরকতের মাতৃভাষা বাংলাকে জাতীয় ভাষার স্বীকৃতির দাবীতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের সঙ্গী সহযোদ্ধার আত্মত্যাগ আবদুর রবের জীবনে ব্যাপক ভাবে রেখাপাত করে এবং দেশ মাতৃকার টানে আরো কঠিন আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত হতে শেখায়।

৫৪’র সাধারণ নির্বাচন, ৫৮’র আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফাকে বাঙ্গালি জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, ৬৯’র গণ অভ্যুত্থানে পাকিস্তানি শাসককে পদত্যাগে বাধ্য এবং জেলখানা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার আন্দোলন, ৭০’র নির্বাচনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং বহুবার কারা বরণ করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে কুমিল্লা থাকাবস্থায় ডিষ্ট্রিক কাউন্সিলের রুম থেকে পালিয়ে পায়ে হেটে গ্রামের বিভিন্ন পথ ধরে ২/৩ দিনে হাজীগঞ্জ আসতে সক্ষম হন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ২নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কে. ফোর্সের প্রধান মেজর খালেদ মোশারেফ ও সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর হায়দারের (পরবর্তীতে সেক্টর কমান্ড সেপ্টেম্বর পরবর্তী দেশ শত্রুমুক্ত হওয়া পর্যন্ত)। অধীন নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর অঞ্চল, ঢাকা, ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত সেক্টরের চাঁদপুর মহকুমার প্রধান উপদেষ্টা সংগ্রাম কমিটির প্রধান জাতীয় নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী ভারত চলে গেলে চাঁদপুর মহকুমার প্রধান উপদেষ্টা ও সংগ্রাম কমিটির প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তি বাহিনীর জন্য খাদ্যদ্রব্যের ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, সেক্টর কমান্ডের সাথে যোগাযোগ, অস্ত্র সংগ্রহ ছিল সংগ্রাম কমিটির কাজ।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার সহকর্মী হিসেবে আবদুল করিম পাটওয়ারী, এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, এডভোকেট আবু জাফর মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন, জীবন কানাই চক্রবর্তী, রফিউদ্দিন আখন্দ, বি.এম কলিম উল্যাহ, জহিরুল হক পাঠানসহ আরো অনেকে ছিলেন।

তিনি আত্ম গোপনে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস যোগাতেন। জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহম্মেদ, এম. কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মুনছুর আলীর সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু তাকে রুপালী ব্যাংকের ডাইরেক্টর করেন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠার পূর্বে জাতীয় নেতা কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের ডেপুটি লিডার হিসেবে এক মাসের জন্য রাশিয়া সফর করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কারা বরণ করেন। চাঁদপুর মহকুমা থেকে জেলা হলে রব ভাই জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১

৯৭৯ সালে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সামরিক শাসনের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে তিনি অল্প ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হতে পারেননি। এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর হাজীগঞ্জের বলাখাল মুন্সী বাড়ী থেকে আত্মগোপনে থাকাঅবস্থায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৮৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে তিনি নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করেন। সে সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে নির্বাচিত হতে পারেননি। সকল প্রকার লোভ লালসাকে তুচ্ছ করে সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে তিনি দৃঢ় প্রদক্ষেপে এগিয়ে যান।

হাজীগঞ্জ শাহরাস্তির প্রত্যেকটি অঞ্চলে আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করতে তিনি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ইউনিয়নে ছুটে গেছেন। মনোবল হারানো মন ভাঙ্গা কর্মীদের উজ্জীবিত করেছেন। তাদের বিপদে পাশে থেকে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর পর পুনরায় শক্তিশালী আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। তখন আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষকলীগের হাজার হাজার নিবেদিত প্রান নির্লোভ কর্মী সৃষ্টি হয়েছিল। কারো কোন চাওয়া পাওয়া ছিল না। শুধু একটাই কাজ সংগঠনকে শক্তিশালী করা।

জাতীয় নেতা মোঃ জিল্লুর রহমান, আবদুল মালেক উকিল, জোহরা তাজউদ্দিন, ড. কামাল হোসেন, সাজেদা চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহম্মেদ, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহম্মেদ, শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুল মান্নান, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ, বঙ্গবন্ধুর চার খলিফা, নুরে আলম ছিদ্দিকী, আ.স.ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, আবদুল কুদ্দুস মাখনসহ সকল নেতৃবৃন্দের সাথে তার সু-সম্পর্ক ছিল। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে ছিল তার আলাদা দাপট।

হাজীগঞ্জ আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, আমিন রোড, তার প্রয়াত পিতা, আমিন মিয়া সাহেবের নামে এলাকার দানশীল ব্যক্তিবর্গ জনগনের শ্রমে ঘামে গড়ে উঠেছে। তিনি ছিলেন তাদের সহযোগি। এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা, অবকাঠামো উন্নয়ন, সরকারী অফিস আদালত স্থাপনে রব ভাইয়ের বিশেষ ভূমিকা ছিল। গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো ভালো কাজ নিয়ে আসা মানুষের সেবা করা ছিল তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। রব ভাই থাকা অবস্থায় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতা হাজীগঞ্জে বিভিন্ন সভা সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেছেন ও বক্তব্য রেখেছেন কর্মীদের উজ্জিবীত করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসার পরই হাজীগঞ্জ জুনাব আলী ময়দানে বিশাল জনসভা করেছেন। এখন আর সেই সব নেতার আগমন ঘটে না, সভা-সমাবেশ হয় না। স্বৈরাচার এরশাদ, খালেদার বিরুদ্ধে তার সাহসে হাজীগঞ্জের রাজপথে আওয়ামীলীগের কর্মীরা গর্জে উঠত। সংগঠনের কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হামলা, জেল, জুলুম, অত্যাচার, তিনি নিজে মোকাবেলা করতেন। তিনি বেঁচে থাকতে আমার বিরুদ্ধে অনেক রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা হয়। আমি দু’বার কারা বরণ করি। দু’বারই তিনি আমাকে জেল খানায় দেখে এসেছেন। চাঁদপুর মহিলা কলেজের পূর্ব পাশের মুলির বেড়ার ছাপড়া ঘরে কালো খাটের উপর বসা দৃঢ়চেতা, সাহসী বীর রব ভাইকে আমরা আমাদের মাঝে আর পাব না। সালাম বিনিময়ের পর সামনের লোহা-প্লাষ্টিকের চেয়ার দেখিয়ে আর বলবেন না বস। ভাবীকে বলবেন না তাদেরকে চা দাও, এবার কথা শুরু কর। অনেক বার বলার পর চেয়ার একটু দুরে সরিয়ে আমরা বসতাম, কথা শুনতাম। আমি হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পাই রব ভাইয়ের সময়ে। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য দায়িত্ব পাওয়ার পর বেশিদিন তাকে পাইনি। তিনি ছিলেন আমাদের অনেক আপন। তার আকার ইঙ্গিতেই আমরা অনেক কিছু বুঝে নিতাম জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তাম। চাঁদপুরের সকল দল ও মতের মানুষের সাথে ছিল তার গভীর সম্পর্ক। রব ভাইয়ের মৃত্যুর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা হাজীগঞ্জ মিয়া বাড়ীতে এসে রব ভাইয়ের কবর জিয়ারত করেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পন করেন জনসভায় বক্তব্য রাখেন। আজকের এ অভিভাবক হারানোর শোকের দিনে আসুন আমরা এই শোককে শক্তিতে পরিনত করে রব ভাইয়ের মত সত্যিকারের মজিব সৈনিকদের মূল্যায়ন করতে শিখি। বুঝতে শিখি সাধারণ মানুষ ও সংগঠনের অবহেলিত, বঞ্চিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের সকলের দায়িত্ব। তাহলেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া এই স্বাধীন স্বদেশ তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী, দেশরত্ন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুখী সুন্দর সোনার বাংলায় পরিনত হবে। যে স্বপ্ন একদিন মনের মধ্যে হৃদয়ের মধ্যে লালন করেছিল আমাদের সকলের প্রিয় নেতা, সকলের প্রেরণার উৎস বীর পুরুষ প্রয়াত আবদুর রব মিয়া। জীবনের শেষ জনসভায় হাজীগঞ্জ বাজারে আওয়ামী লীগ কর্মীদেরকে নির্যাতনের প্রতিবাদে বলেছিলেন, ব্যাঘ্র ঘুমিয়ে আছে তাকে চটাবানা, আমার দামাল ছেলেদের ক্ষেপাবেনা, ভালো হবে না। এ কথা গুলো বলেছিলেন জীবনের শেষ জনসভায় স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য। তার রেখে যাওয়া প্রিয়তমা স্ত্রী, সন্তান, পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সহকর্মী, পাড়া-প্রতিবেশী, হাজার হাজার কর্মী সকলে ভাল থাকুক, সুখে থাকুক, মানুষের কল্যাণ করুক এটাই শোকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা। প্রয়াত নেতার বিদেহী আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

লেখক: সত্য ব্রত ভদ্র (মিঠুন ভদ্র)
প্রাক্তণ সভাপতি, হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ-১৯৯২ইং।
সদস্য, কার্যকরী কমিটি, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ- ২০১২ইং।
হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

প্রয়াত আবদুর রব মিয়ার ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

আপডেট: ০৪:৪৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২০

৮ জানুয়ারী- ২০২০ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা, চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহ্রাস্তি) নির্বাচনী এলাকার প্রাক্তণ জাতীয় সংসদ সদস্য প্রয়াত আবদুর রব মিয়ার ২৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী।

১৯৯৩ সালের ৮ জানুযারী দিবাগত রাত ১০.৪৫ মিনিটে সময় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি স্ত্রী, ৬ ছেলে, ৩ মেয়ে নাতী -নাতনি, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, সংগঠনের হাজার হাজার নেতা কর্মীদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে পরপারে চলে যান। তার মৃত্যু সংবাদ জানার সাথে সাথে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার ঢাকাস্থ সর্বস্তরের মানুষ প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখার জন্য বারডেম হাসপাতালে ছুটে যান। লোকে লোকারন্য হয়ে উঠে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ। অনেকেই তখন স্বজন হারানোর ব্যাথায় চোখের জল মুছতে দেখা যায়।

নীতি আদর্শের প্রতি অবিচল, বিশাল হৃদয় ও ব্যক্তিত্বের অধিকারী, সাধারণ মানুষ ও সংগঠনের কর্মীদের প্রাণ পুরুষ, সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবির উপর মজিব কোট পড়া চির চেনা কত আপন বটবৃক্ষের ছায়ার মত সাহসী পুরুষ চাঁদপুরের বঙ্গবন্ধু আবদুর রবের শোক সংবাদ পৌছার পরই হাজীগঞ্জের চারিদিকে কান্নার রোল পড়ে যায়। আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ ছুটে আসে পশ্চিম বাজার, মসজিদ মার্কেটের আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। যেখানে মৃত্যুর পূর্বে তিনি নিয়মিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংগঠনের বিষয় নিয়ে আলাপ চারিতায় মগ্ন থাকতেন। হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মাইক দিয়ে প্রথম তার শোক সংবাদ প্রচার করা হয়। এর পর রাতেই হাজীগঞ্জের পৌর এলাকা ও ইউনিয়ন সমুহের প্রত্যেক ওয়ার্ডে গ্রামে গ্রামে সংগঠনের কর্মীরা বেবী টেক্সী যোগে মাইকে তাদের প্রিয় নেতার মৃত্যু সংবাদ প্রচার করে। জ্যেষ্ঠ থেকে কনিষ্ঠ সকল নেতাকর্মী, সমর্থক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবি, কর্মযোগী, ছাত্র, শিক্ষক, অবাল বৃদ্ধবনিতা দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষ তার এই অকাল মৃত্যুতে শোকাভিভুত হয়ে পড়ে। অনেককে ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদতে দেখা যায়।

হাজীগঞ্জ উপজেলার মকিমাবাদ গ্রামের মিঞা বাড়িতে চির নিদ্রায় শায়িত, আবদুর রব মকিমাবাদ গ্রামের মিঞা বাড়ীতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আমিন মিয়া সাহেবের যশ, খ্যাতি তখন আকাশ চুম্বি। মাতা এয়াকুতুন্নেছা ছিলেন গৃহিনী, তিন ভাই দু’বোনের মধ্যে রব সাহেব ছিলেন ৪র্থ।

স্কুল পড়াকালীন সরকারি চাকুরীজীবি খালুর সাথে থাকা অবস্থায় রংপুরে তাঁর স্কুল জীবন কাটে। স্কুলে পড়াকালীন আবদুর রব ছিলেন স্বাধীন চেতা, সাহসী, বিনয়ী, বন্ধু প্রিয়। ১৯৭২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি ঢাকা জগন্নাথ কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং কলেজের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

২১ শে ফেব্রুয়ারী ভাষা দিবসে শহীদ বরকতের মাতৃভাষা বাংলাকে জাতীয় ভাষার স্বীকৃতির দাবীতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের সঙ্গী সহযোদ্ধার আত্মত্যাগ আবদুর রবের জীবনে ব্যাপক ভাবে রেখাপাত করে এবং দেশ মাতৃকার টানে আরো কঠিন আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত হতে শেখায়।

৫৪’র সাধারণ নির্বাচন, ৫৮’র আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফাকে বাঙ্গালি জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, ৬৯’র গণ অভ্যুত্থানে পাকিস্তানি শাসককে পদত্যাগে বাধ্য এবং জেলখানা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার আন্দোলন, ৭০’র নির্বাচনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং বহুবার কারা বরণ করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে কুমিল্লা থাকাবস্থায় ডিষ্ট্রিক কাউন্সিলের রুম থেকে পালিয়ে পায়ে হেটে গ্রামের বিভিন্ন পথ ধরে ২/৩ দিনে হাজীগঞ্জ আসতে সক্ষম হন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ২নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কে. ফোর্সের প্রধান মেজর খালেদ মোশারেফ ও সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর হায়দারের (পরবর্তীতে সেক্টর কমান্ড সেপ্টেম্বর পরবর্তী দেশ শত্রুমুক্ত হওয়া পর্যন্ত)। অধীন নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর অঞ্চল, ঢাকা, ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত সেক্টরের চাঁদপুর মহকুমার প্রধান উপদেষ্টা সংগ্রাম কমিটির প্রধান জাতীয় নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী ভারত চলে গেলে চাঁদপুর মহকুমার প্রধান উপদেষ্টা ও সংগ্রাম কমিটির প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তি বাহিনীর জন্য খাদ্যদ্রব্যের ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, সেক্টর কমান্ডের সাথে যোগাযোগ, অস্ত্র সংগ্রহ ছিল সংগ্রাম কমিটির কাজ।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার সহকর্মী হিসেবে আবদুল করিম পাটওয়ারী, এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, এডভোকেট আবু জাফর মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন, জীবন কানাই চক্রবর্তী, রফিউদ্দিন আখন্দ, বি.এম কলিম উল্যাহ, জহিরুল হক পাঠানসহ আরো অনেকে ছিলেন।

তিনি আত্ম গোপনে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস যোগাতেন। জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহম্মেদ, এম. কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মুনছুর আলীর সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু তাকে রুপালী ব্যাংকের ডাইরেক্টর করেন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠার পূর্বে জাতীয় নেতা কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের ডেপুটি লিডার হিসেবে এক মাসের জন্য রাশিয়া সফর করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কারা বরণ করেন। চাঁদপুর মহকুমা থেকে জেলা হলে রব ভাই জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১

৯৭৯ সালে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সামরিক শাসনের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে তিনি অল্প ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হতে পারেননি। এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর হাজীগঞ্জের বলাখাল মুন্সী বাড়ী থেকে আত্মগোপনে থাকাঅবস্থায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৮৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে তিনি নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করেন। সে সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে নির্বাচিত হতে পারেননি। সকল প্রকার লোভ লালসাকে তুচ্ছ করে সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে তিনি দৃঢ় প্রদক্ষেপে এগিয়ে যান।

হাজীগঞ্জ শাহরাস্তির প্রত্যেকটি অঞ্চলে আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করতে তিনি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ইউনিয়নে ছুটে গেছেন। মনোবল হারানো মন ভাঙ্গা কর্মীদের উজ্জীবিত করেছেন। তাদের বিপদে পাশে থেকে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর পর পুনরায় শক্তিশালী আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। তখন আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষকলীগের হাজার হাজার নিবেদিত প্রান নির্লোভ কর্মী সৃষ্টি হয়েছিল। কারো কোন চাওয়া পাওয়া ছিল না। শুধু একটাই কাজ সংগঠনকে শক্তিশালী করা।

জাতীয় নেতা মোঃ জিল্লুর রহমান, আবদুল মালেক উকিল, জোহরা তাজউদ্দিন, ড. কামাল হোসেন, সাজেদা চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহম্মেদ, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহম্মেদ, শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুল মান্নান, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ, বঙ্গবন্ধুর চার খলিফা, নুরে আলম ছিদ্দিকী, আ.স.ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, আবদুল কুদ্দুস মাখনসহ সকল নেতৃবৃন্দের সাথে তার সু-সম্পর্ক ছিল। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে ছিল তার আলাদা দাপট।

হাজীগঞ্জ আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, আমিন রোড, তার প্রয়াত পিতা, আমিন মিয়া সাহেবের নামে এলাকার দানশীল ব্যক্তিবর্গ জনগনের শ্রমে ঘামে গড়ে উঠেছে। তিনি ছিলেন তাদের সহযোগি। এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা, অবকাঠামো উন্নয়ন, সরকারী অফিস আদালত স্থাপনে রব ভাইয়ের বিশেষ ভূমিকা ছিল। গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো ভালো কাজ নিয়ে আসা মানুষের সেবা করা ছিল তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। রব ভাই থাকা অবস্থায় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতা হাজীগঞ্জে বিভিন্ন সভা সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেছেন ও বক্তব্য রেখেছেন কর্মীদের উজ্জিবীত করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসার পরই হাজীগঞ্জ জুনাব আলী ময়দানে বিশাল জনসভা করেছেন। এখন আর সেই সব নেতার আগমন ঘটে না, সভা-সমাবেশ হয় না। স্বৈরাচার এরশাদ, খালেদার বিরুদ্ধে তার সাহসে হাজীগঞ্জের রাজপথে আওয়ামীলীগের কর্মীরা গর্জে উঠত। সংগঠনের কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হামলা, জেল, জুলুম, অত্যাচার, তিনি নিজে মোকাবেলা করতেন। তিনি বেঁচে থাকতে আমার বিরুদ্ধে অনেক রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা হয়। আমি দু’বার কারা বরণ করি। দু’বারই তিনি আমাকে জেল খানায় দেখে এসেছেন। চাঁদপুর মহিলা কলেজের পূর্ব পাশের মুলির বেড়ার ছাপড়া ঘরে কালো খাটের উপর বসা দৃঢ়চেতা, সাহসী বীর রব ভাইকে আমরা আমাদের মাঝে আর পাব না। সালাম বিনিময়ের পর সামনের লোহা-প্লাষ্টিকের চেয়ার দেখিয়ে আর বলবেন না বস। ভাবীকে বলবেন না তাদেরকে চা দাও, এবার কথা শুরু কর। অনেক বার বলার পর চেয়ার একটু দুরে সরিয়ে আমরা বসতাম, কথা শুনতাম। আমি হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পাই রব ভাইয়ের সময়ে। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য দায়িত্ব পাওয়ার পর বেশিদিন তাকে পাইনি। তিনি ছিলেন আমাদের অনেক আপন। তার আকার ইঙ্গিতেই আমরা অনেক কিছু বুঝে নিতাম জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তাম। চাঁদপুরের সকল দল ও মতের মানুষের সাথে ছিল তার গভীর সম্পর্ক। রব ভাইয়ের মৃত্যুর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা হাজীগঞ্জ মিয়া বাড়ীতে এসে রব ভাইয়ের কবর জিয়ারত করেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পন করেন জনসভায় বক্তব্য রাখেন। আজকের এ অভিভাবক হারানোর শোকের দিনে আসুন আমরা এই শোককে শক্তিতে পরিনত করে রব ভাইয়ের মত সত্যিকারের মজিব সৈনিকদের মূল্যায়ন করতে শিখি। বুঝতে শিখি সাধারণ মানুষ ও সংগঠনের অবহেলিত, বঞ্চিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের সকলের দায়িত্ব। তাহলেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া এই স্বাধীন স্বদেশ তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী, দেশরত্ন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুখী সুন্দর সোনার বাংলায় পরিনত হবে। যে স্বপ্ন একদিন মনের মধ্যে হৃদয়ের মধ্যে লালন করেছিল আমাদের সকলের প্রিয় নেতা, সকলের প্রেরণার উৎস বীর পুরুষ প্রয়াত আবদুর রব মিয়া। জীবনের শেষ জনসভায় হাজীগঞ্জ বাজারে আওয়ামী লীগ কর্মীদেরকে নির্যাতনের প্রতিবাদে বলেছিলেন, ব্যাঘ্র ঘুমিয়ে আছে তাকে চটাবানা, আমার দামাল ছেলেদের ক্ষেপাবেনা, ভালো হবে না। এ কথা গুলো বলেছিলেন জীবনের শেষ জনসভায় স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য। তার রেখে যাওয়া প্রিয়তমা স্ত্রী, সন্তান, পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সহকর্মী, পাড়া-প্রতিবেশী, হাজার হাজার কর্মী সকলে ভাল থাকুক, সুখে থাকুক, মানুষের কল্যাণ করুক এটাই শোকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা। প্রয়াত নেতার বিদেহী আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

লেখক: সত্য ব্রত ভদ্র (মিঠুন ভদ্র)
প্রাক্তণ সভাপতি, হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ-১৯৯২ইং।
সদস্য, কার্যকরী কমিটি, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ- ২০১২ইং।
হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।