Notuner Kotha

১শ বার জনগনের জুতা মুছে দিলেও ঋন পরিশোধ করতে পারবো না : সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী

অনলাইন ডেস্ক:

চাঁদপুরে স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও জনবান্ধব ভূমি সেবা ব্যবস্থাপনায় শুদ্ধাচারও উত্তমচর্চা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী।

তিনি বলেন, এদেশে ১৪ লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারী যে বেতন পান তা আমাদের মোট বাজেটের ১০০ টাকার ২৮ টাকাই।! আর এক তৃতীয়াংশ সাধারণ মানুষ মানে ১৬ কোটির জন্য বাকিটা মানে ৭২ টাকা। এই হিসাবটা করে কী জনগনকে সেবা দেন? জনগনের সেবক মনে করে কী কাজ করেন? সংবিধান যে আপনাকে আমাকে প্রজাতন্ত্রের সেবক হিসাবে কাজ করতে বলেছে তা কী করেন? করেন না! নিজের পদ পদবী নিয়ে নিজেকে সম্মানি মনে করে মানুষকে মানুষ বলে গন্য করেন না। ঘুষ খান, অপমান করেন, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলেন। কর্মকর্তার রুমে ঢুকলে তার মানে আপনার রুমে ঢুকলে একজন সাধারণ মানুষকে জুতা খুলে ঢুকতে হয়! অথচ তার টাকায় আপনার আমার বেতন হয়। আমার কাছে ঘুষখোরদের, অসাধু কর্মচারীদের তালিকা আছে! গাড়ি বাড়ি করছেন, আরো চাই আরো চাই! কাফনের কাপড় নিয়া যাবেন, সেটাতে কোন পকেট নাই!

টাকা পয়সা কিছুই নিয়া যাইতে পারবেন? পিয়ন চাপরাশি যারা,তারাও আজ শত কোটিটাকার মালিক হয়ে যাচ্ছেন। অজু কইরা আইছেন, ঘুষ দিতাছে কেউ। এই সময়ে পবিত্রতা রক্ষায় টিস্যু পেপার দিয়া ঘুষের টাকা ধরে পকেটে ভরছেন। এই দেশে সব বিভাগেই ঘুষখোর আছেন। এই যে, সাবরেজিস্টাররা আছেন, তারা কি তার ডিপার্টমেন্টের ঘুষখোর চিন্হিত করতে পারেন না! পারেন।

কিন্তু সেটা তিনি করে না। কারণ তিনি নিজেই ঘুষখোর। আবার বিভিন্ন বিভাগে এমন ভালো কর্মচারী আছেন, যিনি শুধু দিয়েই যাচ্ছেন। বেতন আর অন্যান্য ভাতা ঐ কর্মচারির সম্বল। জমিজমা নিয়া কষ্ট পায় না, নির্যাতনের শিকার হন নাই এ কথা কেউ বলতে পারবেন না। আমার বেতন বাড়ছে, আপনার বেতন বাড়ছে। আমি যে টাকা মাসে বেতন পাই, তাতে ১ শ বার জনগনের জুতাও যদি মুছে দেই তাও তার ঋন আমি পরিশোধ করতে পারবো না। মনে রাখবেন জনগন আমাদের মূল মালিক।

জনগনের কাজ যদি ঘুষছাড়া করেন, ভালো ব্যবহার করেন জনগন আপনাকে শ্রদ্ধা করবেন।আর ঘুষ নিলেন, খারাপ ব্যবহার করলেন, অফিস থেকে বেরিয়ে সেই ব্যক্তি আপনার উদ্দেশ্য বলবে- এইটা একটা অমানুষ। আল্লাহ তার বিচার করো। আর যখন ধরা খাবেন, মান সম্মান শুধুই নিজেরটা যাবে না, আত্মীয় স্বজন সবার মাথা হেট হয়ে যাবে।! দেখেন না! এখন অনেকে ধরা পড়ছে? মাথা গুজায়! তাই নিজেকে বদলান, সময় আছে। জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার করুন। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করুন, দেশটাকে গড়ুন।
সেমিনারে জেলা প্রশাসন, উপজেলা, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, গণমাধ্যম এবং মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, জেলা আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শহীদ পাটওয়ারী।