Notuner Kotha

শিঘ্রই বহিষ্কার হচ্ছেন ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ১৯ জন

অনলাইন ডেস্ক:

জাতীয় সম্মেলনের প্রায় এক বছর পর ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটির ১৯ জনকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। বহিষ্কৃতদের পদগুলোকে শূন্য ঘোষণা করে পদবঞ্চিতদের মধ্যে যারা সক্রিয়, তাদের পদে আনা হবে।  মঙ্গলবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে বিতর্কিত ঘোষণা করে আবার কমিটি করার দাবি জানিয়ে অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি দ্রুতই ঘোষণা হবে বলেও জানিয়েছেন গোলাম রাব্বানী।

গত ১৩ মে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে পদবঞ্চিত ও পদপ্রাপ্তদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নারী নেত্রীসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। এ ঘটনা নিয়ে আন্দোলনে নামেন পদবঞ্চিতরা। পরে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আশ্বাসে তারা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান। তারা বিতর্কিতদের নিয়ে সরব হলে ১৫ মে মধ্যরাতে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে

বিতর্কিতদের চিহ্নিত করে তাদের মধ্যে ১৬ জনের নামও প্রকাশ করেন তারা।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, বিতর্কিত ১৬ জনের নাম প্রকাশ পাওয়ার পর তাদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৮ জন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ দেখিয়েছেন। এর বাইরেও বিতর্কিতরা আছেন। সব মিলিয়ে ১৯ জনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ওই ১৯ জনের পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে। সংগঠনটি বিতর্কিতদের ব্যাপারে প্রমাণ সংগ্রহ করতে গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্য নিয়ে তাদের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ১৯ জনের বাদ দেওয়ার খবরে পদ না পাওয়া ত্যাগীরা আবার যোগাযোগ করছেন। তারা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছেও ধরনা দিচ্ছেন। ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

পদবঞ্চিতদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় উপ-সম্পাদক সাইফুর রহমান সাইফ রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছি। দলের দুঃসময়ে আমি রাজপথে ছিলাম। আমার বাবা আবু ইউসুফ বগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নং সহ-সভাপতি এবং আমার মা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তা ছাড়াও আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। তা-ও আমাকে সদ্যঘোষিত ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি কেন, তা আমি জানি না।’

ঢাবি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি ঘোষণা : গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ দুই বছর। এর বাইরে সব শাখার মেয়াদ এক বছর। এই হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণার পর পার হয়েছে প্রায় ১০ মাস। যদিও তারা এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, আজ রাতে (গতকাল মঙ্গলবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। আর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি এক বা দুদিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনকে কল করা হলেও সেগুলো রিসিভ হয়নি।

পদবঞ্চিতদের অবস্থান অব্যাহত : গত রোববার গভীর রাত থেকে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা। তাদের দাবি, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যারা বিতর্কিত তাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা, মধুর ক্যান্টিনে হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও টিএসসিতে পদবঞ্চিতদের ওপর যারা হামলা করেছিলেন তাদের বহিষ্কার করা। অবস্থান চললেও তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব কেউ যোগাযোগ করেননি। পদবঞ্চিতদের অন্যতম মুখপাত্র ও ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন জানান, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন না করা পর্যন্ত রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান চলবে। এমনকি ঈদের দিনেও অবস্থান করার কথা জানান তিনি।