Notuner Kotha

ছোট মেয়ে মৃত্যু শয্যায় হাসপাতালে, বড় মেয়েকে কবর দিতে আসলেন বাবা

অনলাইন ডেস্ক:

ছোট মেয়ে সাফাকে মৃত্যু শয্যায় হাসপাতালের বেডে রেখে বড় মেয়ে সায়েরাকে কবর দিতে গ্রামের বাড়ী আসলেন বাবা। মেয়ের শেষ বিদায়ে জনম দূঃখীনি মাও ছিলোনা পাশে। বড় মেয়ের শেষ বিদায় বেলায় ছোট মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালের বেডে মা। এতেই বুঝা যাচ্ছে এবার ডেঙ্গুর কি প্রকোপ।

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৪ বছর বয়সের সায়েরা আর তার ২ বছর বয়সী ছোট বোন সাফা। এর মধ্যে সায়েরা চলেই গেল না ফেরার দেশে। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। আর সাফা এখনও ভর্তি হাসপাতালে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক প্ল্যাটিলেট উঠানামা করছে।

বড় সন্তান সায়েরার লাশ নিয়ে শুক্রবার বাবা মমিন সরকার একাই আসেন গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের কাচিয়ারা গ্রামে। সকাল ৯টায় কাচিয়ারা জামালিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে প্রিয় সন্তানকে দাফন করেন তিনি। এরপর তড়িঘড়ি রওনা দেন ঢাকার পথে।

বড় সন্তানের শেষ বিদায়কালে থাকতে পারেননি মা সালমা। ছোট সন্তানের দেখভালে তখন যে তাকে থাকতে হয়েছে ঢাকায়। মমিন সরকার যুগান্তরকে জানান, ১ আগস্ট সায়েরা জ্বরে আক্রান্ত হয়। ধানমণ্ডিতে ইবনে সিনা হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে।

সেখানে বেড খালি না থাকায় সায়েরাকে নিয়ে তারা ধানমণ্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তাকে মগবাজারে রাশমনো স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টায় হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) সে মারা যায়।

মমিন সরকার ঢাকার সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও মা সালমা গৃহিণী। তারা ধানমণ্ডির সোবহানবাগ মসজিদ কলোনি এলাকায় বসবাস করে আসছেন। সায়েরা ধানমণ্ডি মডেল স্কুলে শিশু শ্রেণিতে পড়ত। মমিন আরও জানান, সাফাও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত। তাকেও রাশমনো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

কাচিয়ারা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, শুক্রবার সকালে সায়েরার লাশ গ্রামের বাড়ি সরকার বাড়িতে পৌঁছলে আত্মীয়স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় বেশ কিছুক্ষণ নিথর বসে থাকতে দেখা গেছে বাবা মমিনকে। জানাজায় এলাকায় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সুধীজন ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।