Notuner Kotha

শাহরাস্তিতে পতিত ভূমিতে মাছ চাষসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও শাকসবজির আবাদ করছেন প্রবাসী বেলায়েত

ছবি-নতুনেরকথা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পতিত জমিতে মাছ চাষসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও শাকসবজির আবাদ করা হচ্ছে। উৎপাদিত সেইসব ফলমূল, শাকসবজি ও মাছ বিক্রি হচ্ছে সুলভ মূল্যে। পাশাপাশি একাধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। অথচ গত বছরও অনাবাদি অবস্থায় পড়েছিল এসব ভূমি।

আর এখন মন কাড়ে যে কারও সেই পতিত স্থানটি। বলছি, শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের লন্ডন প্রবাসী মো. বেলায়েত হোসেন তপাদারের কথা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর ১০৫ শতাংশ পতিত ভূমি পরিষ্কার করে মাছ চাষ, ফলমূল ও শাকসবজি আবাদের উপযোগী করেছেন।

বেলায়েত হোসেন তপাদার সেখানে জায়ান এগ্রো নামের একটি প্রজেক্ট করেছেন। আর এই প্রজেক্টে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় গত এক বছর ধরে মাছ চাষ, ফলমূল ও শাকসবজির আবাদ করছেন। এতে নিজেদেরসহ স্থানীয়ভাবে চাহিদার কিছুটা হলেও যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

সম্প্রতি সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের ওয়ারুক স্টেশন বাজারের মাদ্রাসা সংলগ্ন কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মাত্র ১’শ গজ দক্ষিণে আলিপুর গ্রামের রাস্তার পাশে নয়নাভিরাম ‘জায়ান এগ্রো’ নামের প্রজেক্টটি। প্রজেক্টের চারপাশে বেস্টনি। এর ভিতরে অগভীর পুকুরে বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করা হচ্ছে।

আর পুকুরে পাড়ে রয়েছে লাউ, করলা, কচু, বেগুন, শিম, কচুর লতি, ঢেঁড়শ, শশা, পাট শাক, ডাটা, মিষ্টিকুমড়া, লাল শাক, টমেটা, মরচি, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও পুঁইশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। সাথে রয়েছে লেবু, পেঁপে ও কলা গাছ। যেখানে কাঁচা-পাকা পেঁপে গাছে ঝুলে রয়েছে। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে একাধিক লোকের।

এ বিষয়ে জায়ান এগ্রোর পরিচালক আশিকুর রহমান আশিক ও ম্যানেজার মনির হোসেন জানান, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। যার প্রমাণ জায়ান এগ্রো। এখানে এলেই ফুল ও ফলের গন্ধে মন ভরে যায় উল্লেখ করে তারা বলেন, বেলায়েত ভাইয়ের পতিত জমি এখন ফসলের সমাহার। নিজেরা খাচ্ছেন আর বিক্রি করছেন। এসময় তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, স্থানীয় ও এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

কথা হয় লন্ডন প্রবাসী মো. বেলায়েত হোসেন তপাদারের সাথে। তিনি বলেন, খবরে প্রায় সময় দেখতাম পতিত ও অনবাদি জমিতে চাষ করার জন্য মাননিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহবান জানাতেন এবং নির্দেশনা দিতেন। আবার তিনি গণভবনে বিশাল খামার করেছেন। তাঁর এই কার্যক্রম দেখে আমি উৎসাহিত হয়েছি।

তিনি বলেন, আমি দেশে এসে আমার ১০৫ শতাংশ পতিত ও অনাবাদি জমি চাষযোগ্য করার উদ্যোগ নিলাম। এরপর কৃষি ও মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করলাম। তারা আমাকে খুব সহযোগিতা করেছেন। তাদের সহযোগিতা এখন আমার ওই পতিত জমিতে মাছ চাষসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও শাকসবজির আবাদ হচ্ছে।

বেলায়েত হোসেন তপাদার আরো বলেন, এখন আমার নিজেদের চাহিদার মেটানোর পাশাপশি মাছ, ফলমূল ও শাকসবজি বিক্রি করছি। এতে আমার বাড়তি আয় হচ্ছে এবং একাধিক লোকের কর্মসংস্থানও হয়েছে।

এসময় তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যাদের আবাদযোগ্য পতিত ও অনাবাদি জমি রয়েছে তারা যেন ওইসব অযথা ফেলে না রেখে চাষাবাদের ব্যবস্থা করেন।