হাজীগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ

  • আপডেট: ০৮:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩
  • ৪৬

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি।

হাজীগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেড় শতাধিক বছরের চলাচলের পথ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ কাজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের সিঁহিরচো গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে বিবাদী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফয়েজ আহম্মদ প্রধানীয়া, রাকিবুল ইসলাম সোহাগ, সুমন প্রধানীয়া ও মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মোখলেছুর রহমান চলাচলের পথ দখল করে এই স্থাপনা (দালানঘর) নির্মাণ করছেন।

জানা গেছে, ওই গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির উল্লেখিত বিবাদীরা দীর্ঘ দেড় শতাধিক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত বাড়ির উঠান ও চলাচলের পথ দখল করে জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণের অপচেষ্টা করে আসছে। সবশেষ গত ১০ মার্চ ওই স্থানে স্থাপনা নির্মাণের লক্ষে তারা নির্মাণ সামগ্রী এনে কিছু সন্ত্রাসী ও লোকজন নিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে। এতে বাধা দেন, একই বাড়ির মৃত আব্দুল জব্বার প্রধানীয়ার ছেলে মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া।

এসময় তারা (বিবাদীরা) বাধা উপেক্ষা করে জোরপূর্বক পাকাঘর (দালানঘর) নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং বাদী পক্ষকে হুমকি-ধমকি দেন। এতে কোন উপায়ান্তর না দেখে এবং উক্ত উঠান ও চলাচলের পথ বেদখল থেকে রক্ষা পেতে গত ১৯ মার্চ মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারা মোতাবেক উল্লেখিত ভূমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন।

আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে উল্লেখিত উঠান ও চলাচলের পথে অস্থায়ী স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও নালিশি ভূমির দখল বিষয়ে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ২য় পক্ষকে (বিবাদী) কারণ দর্শাতে নির্দেশনা প্রদান করেন। যার পরবর্তী তারিখ আগামি ২৯ মে নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন বিবাদীরা।

আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে, ওই ইউনিয়নের ৬৭নং সিঁহিরচোঁ মৌজার বিএস ৩৩৯, ২০৬নং খতিয়ান, হাল ৭০১ দাগে .০১ একর। যার উত্তরে আবু তাহের, দক্ষিণে আব্দুল হাই, পূর্বে প্রতিপক্ষ (বিবাদী), পশ্চিমে নিজ (বাদী) এবং একই দাগে .০০৭০ একর। যার উত্তরে আব্দুল মালেক গং, দক্ষিণে আব্দুল হাই, পশ্চিমে রাস্তা এবং পূর্বে রাস্তা। যা দখল করে বিবাদীরা স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ করেন বাদী।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই বাড়ির বিরোধপূর্ণ ভূমিতে নতুন একটি পাকা দালানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে এবং ৮/১০ জন শ্রমিক নির্মাণ কাজ করছেন। এসময় নির্মাণ কাজেরস্থলে বিবাদী পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সুহিলপুর বাজারে বিবাদী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সাথে সংবাদকর্মীদের কথা হলে তিনি স্থাপনা (দালানঘর) নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি।

এ সময় তিনি আদালতের নির্দেশনার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি, কাগজপত্র চাঁদপুরে তাঁর উকিলের (আইনজীবি) কাছে রয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, ওই দাগের (৭০১) আমাদের ৪ শতাংশ ভূমির মধ্যে কাজ করছি আড়াই শতাংশে। বাকিটা আমাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি। যার দাগ নং- ৩১৪, ৬৯৬। এই দুই দাগে সোয়া দুই শতাংশ ভূমি রয়েছে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারা (বিবাদী) কিভাবে নির্মাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এমন প্রশ্ন রেখে বাদী মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া বলেন, কোন প্রভাবশালী শক্তির বলে তারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। আমরা আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তিনি আরো বলেন, তারা যে আড়াই শতাংশের উপর দালানঘর নির্মাণের দাবী করছেন, ওই আড়াই শতাংশ ভূমিতে সেই বাপ-দাদার আমলের ৬ ফটু চওড়া রাস্তা রয়েছে। যা গত দেড়শ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা সহ বাড়ির সবাই ব্যবহার করছে। তারা এখন এই ৬ফুট রাস্তা জোরপূর্বক দখল করে দালানঘর নির্মাণ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

স্বামীর ঋণের টাকা নিয়ে ২ সন্তান রেখে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে উধাও গৃহবধু

হাজীগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ

আপডেট: ০৮:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩

হাজীগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেড় শতাধিক বছরের চলাচলের পথ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ কাজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের সিঁহিরচো গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে বিবাদী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফয়েজ আহম্মদ প্রধানীয়া, রাকিবুল ইসলাম সোহাগ, সুমন প্রধানীয়া ও মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মোখলেছুর রহমান চলাচলের পথ দখল করে এই স্থাপনা (দালানঘর) নির্মাণ করছেন।

জানা গেছে, ওই গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির উল্লেখিত বিবাদীরা দীর্ঘ দেড় শতাধিক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত বাড়ির উঠান ও চলাচলের পথ দখল করে জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণের অপচেষ্টা করে আসছে। সবশেষ গত ১০ মার্চ ওই স্থানে স্থাপনা নির্মাণের লক্ষে তারা নির্মাণ সামগ্রী এনে কিছু সন্ত্রাসী ও লোকজন নিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে। এতে বাধা দেন, একই বাড়ির মৃত আব্দুল জব্বার প্রধানীয়ার ছেলে মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া।

এসময় তারা (বিবাদীরা) বাধা উপেক্ষা করে জোরপূর্বক পাকাঘর (দালানঘর) নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং বাদী পক্ষকে হুমকি-ধমকি দেন। এতে কোন উপায়ান্তর না দেখে এবং উক্ত উঠান ও চলাচলের পথ বেদখল থেকে রক্ষা পেতে গত ১৯ মার্চ মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারা মোতাবেক উল্লেখিত ভূমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন।

আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে উল্লেখিত উঠান ও চলাচলের পথে অস্থায়ী স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও নালিশি ভূমির দখল বিষয়ে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ২য় পক্ষকে (বিবাদী) কারণ দর্শাতে নির্দেশনা প্রদান করেন। যার পরবর্তী তারিখ আগামি ২৯ মে নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন বিবাদীরা।

আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে, ওই ইউনিয়নের ৬৭নং সিঁহিরচোঁ মৌজার বিএস ৩৩৯, ২০৬নং খতিয়ান, হাল ৭০১ দাগে .০১ একর। যার উত্তরে আবু তাহের, দক্ষিণে আব্দুল হাই, পূর্বে প্রতিপক্ষ (বিবাদী), পশ্চিমে নিজ (বাদী) এবং একই দাগে .০০৭০ একর। যার উত্তরে আব্দুল মালেক গং, দক্ষিণে আব্দুল হাই, পশ্চিমে রাস্তা এবং পূর্বে রাস্তা। যা দখল করে বিবাদীরা স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ করেন বাদী।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই বাড়ির বিরোধপূর্ণ ভূমিতে নতুন একটি পাকা দালানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে এবং ৮/১০ জন শ্রমিক নির্মাণ কাজ করছেন। এসময় নির্মাণ কাজেরস্থলে বিবাদী পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সুহিলপুর বাজারে বিবাদী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সাথে সংবাদকর্মীদের কথা হলে তিনি স্থাপনা (দালানঘর) নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি।

এ সময় তিনি আদালতের নির্দেশনার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি, কাগজপত্র চাঁদপুরে তাঁর উকিলের (আইনজীবি) কাছে রয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, ওই দাগের (৭০১) আমাদের ৪ শতাংশ ভূমির মধ্যে কাজ করছি আড়াই শতাংশে। বাকিটা আমাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি। যার দাগ নং- ৩১৪, ৬৯৬। এই দুই দাগে সোয়া দুই শতাংশ ভূমি রয়েছে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারা (বিবাদী) কিভাবে নির্মাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এমন প্রশ্ন রেখে বাদী মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া বলেন, কোন প্রভাবশালী শক্তির বলে তারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। আমরা আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তিনি আরো বলেন, তারা যে আড়াই শতাংশের উপর দালানঘর নির্মাণের দাবী করছেন, ওই আড়াই শতাংশ ভূমিতে সেই বাপ-দাদার আমলের ৬ ফটু চওড়া রাস্তা রয়েছে। যা গত দেড়শ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা সহ বাড়ির সবাই ব্যবহার করছে। তারা এখন এই ৬ফুট রাস্তা জোরপূর্বক দখল করে দালানঘর নির্মাণ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।