• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১ মে, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ১১ মে, ২০২২

ভিক্ষুক পরিবারের ৪ জনকে টেনে-হিঁচড়ে হাজতে, ৪ এসআই বরখাস্ত

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

অনলাইন ডেস্ক:

জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসামিদের টেনেহিঁচড়ে হাজতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার অভিযোগে ৪ এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত ও ২ কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।

বুধবার (১১ মে) দুপুরে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (১০ মে) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সাময়িক বরখাস্তকৃত ৪ এসআই হলেন, মুনতাজ আলী, সাইফুল ইসলাম, ওয়াজেদ আলী ও আলতাব হোসেন। প্রত্যাহার করা কনস্টেবলরা হলেন, মোজাম্মেল হক ও সাথী আক্তার।

ভুক্তভোগী ব্যক্তি হলেন, সরিষাবাড়ি পৌরসভার বাউসি বাজার এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে ভিক্ষুক আব্দুল জলিল (৬৪)।

জানা গেছে, ভিক্ষুক আব্দুল জলিল (৬৪) এক টুকরো জমির ওপর দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। প্রতিবেশী মুজিবুর রহমান ওই জমি তাদের বলে দাবি করেন। এ নিয়ে ভিক্ষুক আব্দুল জলিল ও মুজিবুর রহমানের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে মামলা হলে সম্প্রতি আদালত ভিক্ষুক আব্দুল জলিলের পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে মুজিবুর রহমান সোমবার (৯ মে) সকালে দলবল নিয়ে ওই জমি দখল করতে যায়। এ সময় তারা ভিক্ষুক পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলায় ভিক্ষুক জলিলের স্ত্রী সন্তানসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়। ওইদিনই তাদেরকে সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আব্দুল জলিলের মেয়ে জুলেখা বেগম সাংবাদিকদের অভিযোগ করেন, তারা সোমবার রাতে থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি। উল্টো প্রতিপক্ষের দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (১০ মে) পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবা ও ভাইসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে টেনে হেঁচড়ে থানায় নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টা খানেক তাদের থানা হাজতে রাখার পর অসুস্থ অবস্থায় বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এদিকে মঙ্গলবার (১০ মে) পুলিশের এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। পরে একই দিন রাতে পুলিশের ৪ এসআইকে বরখাস্ত ও ২ কনস্টেবলকে ক্লোজ করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দেবাশীষ রাজবংশী জানান, আহতদের চিকিৎসা চলাকালীনই পুলিশ হাসপাতাল থেকে রোগীদের ছাড়পত্র নিয়েছে। চিকিৎসাধীন আসামিদের যেভাবে আটক করা হয়েছে, তা অমানবিক বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরিষাবাড়ী থানার ইনচার্জ (ওসি) মীর রকিবুল হক বলেন, মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে আব্দুল জলিলসহ অন্যদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। এরপর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে আসামিদের আটক করা হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় টেনেহিঁচড়ে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ায় তাদের আটক করা হয়েছে। নইলে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হতো।

এ বিষয়ে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন বলেন, আইন সবার জন্যই সমান। অমানবিকভাবে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি শোনার পরপরই আমি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ৪ জন এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ও ২ জন কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়াও তদন্ত করে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • সারা দেশ এর আরও খবর
error: Content is protected !!