Notuner Kotha

“আমার স্বামী আগুন নিভাতে গিয়ে ঘর পোড়া মামলার আসামী”

মোঃ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়াঃ
ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী জহিরের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউসের (২৭) আর্তনাদ, আমার স্বামী আগুন নিভাতে গিয়ে ঘর পোড়া মামলার আসামী হয়ে হাজত বাস করছে। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিন ইউনিয়নের বেরকী চৌকিদার বাড়ির মৃত আম্বর আলীর দুই পরিবারের সন্তান হানিফগং ও আব্দুর রশিদগংদের মধ্যে সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। এরই মধ্যে আব্দুর রশিদগংরা হানিফগংদের বিরুদ্ধে থানায় গত ২৩জুন/১৯ইং তারিখে ঘর ভাংচুর ও ছুরির অভিযোগ করে। অপর দিকে গত ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার হানিফ মিয়ার বসত ঘর সংলগ্ন পরিত্যাক্ত রান্না ঘরে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টায় আগুন দেখে হানিফ মিয়ার ছেলে স্বপন (১৬) ডাকচিৎকার দিলে আশে পাশ্বের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ওই ঘরে থাকা ১টি গাভী ও বাচুরের শরীরের আংশিক পুড়ে যায় এবং ঘরের সীলিংর উপরে ও নীচে রাখা জ্বালানী কাঠ পুড়ে যায়। ওই ঘটনার সময় পাশ্ববর্তী বাড়ির মৃত ছাদেক আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম ব্লাড ক্যান্সরের রোগী বিবেকের তাড়নায় হানিফের বাড়িতে গিয়ে আগুন নিভাতে সহযোগীতা করে আহত গরুর জন্য ঔষধ নিয়ে আসে। জহিরের স্ত্রী জান্নতুল ফেরদাউস কান্না জড়িত কন্ঠে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে জানান, কি জন্য আমার স্বামীকে ঘর পোড়া মামলায় আসামী করে এবং গত ৯ জুলাই/১৯ ইং তারিখে পুলিশ আমার স্বামী জহিরকে আটক করে জেলে পাঠায়। আমার সংসারে আয়-রোজগার করার একমাত্র মাধ্যম স্বামী। আজ স্বামী জেলে থাকায় আমি দুই সন্তান ও বৃদ্ধা শ্বাশুড়ীকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর দিন কাটাচ্ছি।
আরোক আসামী মুদিদোকানী মোহাম্মদ হোসেনের স্ত্রী শাহানারা বেগম জানান, আমার স্বামী ঘটনার  সময়ে নাহারা গাবতলীতে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মে ব্যাস্ত ছিলেন। ঘটনার পর ব্যাবসা গুছিয়ে বাড়িতে আসার পথে হানিফের বাড়িতে গিয়ে হানিফ ও তার স্ত্রীর সাথে কথা বলে এবং দুঃখ প্রকাশ করে নিজ বাসায় চলে আসে। তাকেও পুর্ব শত্রুতা বসত ঘর পোড়া মামলায় আসামী করে। বর্তমানে মোহাম্মদ হোসেন জেল হাজতে রয়েছে বলে শাহানারা জানান।  আরো জানান, ঘটনার দিন ও সময়ে জসীম, সাদ্দাম মহিন, ক্যান্সারে আক্রন্ত পিতা আঃ রশিদ কুমিল্লায় থাকে তারা এলাকায় ছিলো না।
ঘর পোড়া মামলার বাদী আবু হানিফ জানান, ঘটনার সময় আমি খিলা বাজার থেকে বাড়িতে  আসতেছিলাম ছিলাম ওই সময় আমার ছেলে আমাকে মুঠোফোনে অগ্নিকান্ডের কথা জানালে দ্রুত বাড়ি পৌঁছি। আমার ছেলে জানায় অগ্নিকান্ড চলাবস্থায় অন্ধকার দিয়ে দুই ব্যক্তি পালিয়ে যেতে দেখে। তবে তাদের ছিনতে পারেনি।

তিনি আরো জানান, আগুন নিভে যাওয়ার পর দমকল বাহীনী ও পুলিশের উপস্থিতিকালে জসীম, আলমগীর, জহির, আরো কয়েক জনকে দেখা গেছে। অগ্নি সংযোগকারির পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাহিলে তিনি জানান, আমার ভাই আঃ রশিদগংদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত সম্পত্তিগত বিরোধ চলছে। তারাই এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা করেন।

শাহরাস্তি দমকল বাহিনীর এস.ও জাকির হোসেন জানান, ঘটনার রাত ৯:১৩ ঘটিকায় ০১৭৭৬-৪৯৩৯০৮ নাম্বার মুঠোফোন থেকে শাহরাস্তি দমকল বাহিনীর ০১৭৫৯-৯৮০৭০৭ মুঠোফোনে অগ্নিকান্ডের ব্যাপারে অবহিত করলে দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়ে পেলছে।