Notuner Kotha

হামানকর্দ্দীতে সংখ্যালঘু পরিবারের শ্বশানঘাট ভাঙ্গচুর,গাছপালা কেটে বসতভিটা দখলের অপচেষ্টা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি।

স্টাফ রিপোর্টারঃ

চাঁদপুর সদরের মৈশাদী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের হামানকর্দ্দীতে সংখ্যালঘু পরিবারের শ্বশানঘাট ভাঙ্গচুর ও গাছপালা কেটে বসতভিটা দখলের অপচেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।যা নিয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।জিডি-৩১১(০৭-০৬-২০২০)। বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় উঠে আসায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তথ্য অনুসন্ধানে নেমেছে এনএসআই, পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগের সংশ্লিষ্টগণ।

এ ব্যপারে সরজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় নাসির খান, প্রণব চন্দ্র শীল’সহ এলাকাবাসী জানান, বাবরুল আমিন নামের এক আইনজীবি জোরপূর্বক দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করা হিন্দুদের বসতভিটা উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।তারই ধারাবাহিকতায় তিনি লিটন বনিকদের খরিদসূত্রের জমি দখলের চেষ্টা করছেন।ইতিমধ্যে তিনি দল-বল নিয়ে এসে লিটন বনিকদের ১৮ শতাংশ জায়গা জুড়ে কাঁটা তাদের বেড়া টানিয়ে দিয়েছে। সেই সাথে শ্মশানঘাট ভাঙ্গচুর ও বিভিন্ন গাছপালা কেটে ফেলেছেন।তারা আরো জানিয়েছেন, ওই চক্রটি ভূয়া খারিজ করে এই সংখ্যালঘু পরিবারের জায়গা দখল করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।তারা জায়গার পাশের সরকারি গাছও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেটেছে। এ সময় তারা ভুক্তভোগী লিটন বনিকদের জায়গা ও শ্বশান ঘাটের উপর জোড়পূর্বক তাদের নামে জায়গা উল্লেখ করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন।এর ন্যায় বিচার হবে বলে প্রত্যাশা করছি

।এ ব্যপারে ভুক্তভোগী লিটন বনিক জানান, আমরা আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে কয়েকটি পরিবার দীর্ঘদিনযাবৎ এই জমি ভোগ দখল করে আসছি।আমাদের কাছে জমির খরিদসূত্রে মালিকানার সব কাগজপত্রও রয়েছে।হঠাৎ করে শনিবার আমাদের প্রতিবেশী ওই আইনজীবী বাবরুল আমিন লোকজন নিয়ে এসে এই তান্ডবলিলা চালিয়ে গেলেন।তিনি আরো জানান,কোনরকম কথাবার্তা ছাড়াই দিনে-দুপুরে তিনি আমাদের জমিসহ বসতভিটা কাঁটা তাঁরের বেড়া দিয়ে নিজের জায়গা বলে দাবী করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন।তার ভাঙ্গচুরের হাত থেকে আমাদের পারিবারিক শ্মশানঘাট পর্যন্ত রেহাই পায়নি।ফল-ফুলের সব গাছপালা পর্যন্ত তিনি লোকজনসহ কেটে ফেলেছেন।এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।তাই প্রশাসনসহ সুধীমহলের নিকট আমরা ন্যায় বিচার প্রার্থণা করছি।

এ ব্যপারে লিটন বনিকের স্ত্রী লিপি বনিক জানান,আইনজীবী বাবরুল আমিন এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি জোরপূর্বক আমাদের পারিবারিক শ্মশানঘাট ভাঙ্গচুর করে বসতভিটার পুরো জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে নিজের নামিয় সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন। আমরা এখন বসতভিটা হারানোসহ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এবং পত্র-পত্রিকার রিপোর্ট ওই আইনজীবী মোঃ বাবরুল আমিনকে জানালে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে। ওই ১৮ শতাংশ জায়গা আমাদের বলেই আমরা জায়গা দখলে গেছি। ও ই জায়গা আমরা পৈত্রিকসূত্রে এবং বর্তমান বিএস রেকর্ড ও মিউটেশন সূত্রে মালিক। তিনি কারো শ্মশানঘাট ভাঙ্গচুর এবং গাছাপালা কাটেননি বলেও দাবী করেন। তার অজান্তে ওই জায়গায় গড়ে ওঠা শ্মশানের জন্য তিনি হিন্দুদের ২/৩ শতাংশ জমি দান করবেন এবং প্রয়োজনে এই শ্মশান রক্ষণাবেক্ষণ করবেন বলেও তিনি সবার উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন।

এদিকে উত্তেজিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থানা পুলিশের ব্যবস্থা সম্পর্কে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি নাসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে জানান, এই বিষয় আমার নলজে নেই। তবে এ ব্যপারে তথ্যসহায়তা করে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী জানান ঘটনাটি আমরা জানামাত্র তাৎক্ষণিক আমাদের পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। ঐ সময় আমরা উভয়পক্ষকে আইনবিরোধী কাজে লিপ্ত না হতে সতর্ক করি।

তিনি আরো জানান, আমরা ভুক্তভোগী লিটন বনিকের অভিযোগ লিখিতভাবে পেয়েছি। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ আইনগত সবরকমের সহায়তা দিবে। তবে তাদের উভয়ের সম্পত্তিগত বিরোধ নিষ্পত্তি করবে বিজ্ঞ আদালত। তবে ঘটনাস্থলে তাদের নজরদারি রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।