দিল্লিতে ২টি মসজিদে আগুন, ভস্মীভূত কোরআন

  • আপডেট: ০৯:৩১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২৮

People bury copies of the Koran after they recovered from a burnt-out mosque following clashes between people supporting and opposing a contentious amendment to India's citizenship law, in New Delhi on February 26, 2020. - Four more people have died in some of the worst sectarian violence in decades in New Delhi, a hospital source told AFP, which takes the death toll from several days of rioting to 17. (Photo by Sajjad HUSSAIN / AFP)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভে হামলার প্রেক্ষাপটে দুটি মসজিদে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা কোরআনের বিভিন্ন পাতা মাটিতে পুঁতে রাখতে দেখা গেছে লোকজনকে। বুধবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।

আর ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকালে ৫০০ জনের মতো একদল হিন্দু আশক নগর এলাকায় একটি মসজিদের দরজা ভেঙে ফেলে ভেতরে ঢোকে। এরপর সেটির মিনারে উঠে হিন্দুত্ববাদী পতাকা টানিয়ে দেয়। তারা মসজিদটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পরবর্তী সন্ধ্যায় আরেকটি ছোট মসজিদ ও মুসলমানদের দোকানে আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মুসলমান বলেন, তারা তিন ঘণ্টা ধরে মসজিদটিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এরপর হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দিতে দিতে চলে যায়।

গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, বিকালে এসে মসজিদের ভেতরে যা ছিল সব পুড়িয়ে ফেলেছে। এরপর লুটপাট চালিয়েছে। মসজিদ লাগোয়া দোকানেও তারা আগুন দেয়। এরপর পাশের দুটি মুসলমানদের বাড়িতে চড়াও হয়।

ওই ব্যক্তি বলেন, কি বলবো, তাও আমি জানি না। গত ৩৫ বছরে এমন দৃশ্য আমি কখনো দেখিনি। হিন্দু-মুসলমান এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করছিলেন। ঈদুল আজহা ও দেউয়ালি আমরা একসঙ্গে উদযাপন করেছি।

হিন্দু নারীরা সন্তানদের নিয়ে আমাদের মসজিদেও আসতেন বলে তিনি জানান। ওই ভারতীয় বলেন, এটা কেবল মুসলমানদের জন্যই না, পুরো সম্প্রদায়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের সেই শান্তি আজ নাই হয়ে গেছে।

বুধবার সকালেও মুসলমানদের বাড়ি-সম্পত্তিতে হামলা অব্যাহত রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও মুসলমানদের বাড়িঘর-মসজিদ সুরক্ষায় স্থানীয় হিন্দুদের টহল দিতেও দেখা গেছে।

উত্তরপূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, বাবরপুর, ব্রাহামপুর, গোরাখপার্ক, মৌজপুর, ভাজানপুরা, কবিরনগর, চান্দবাগ, গোকুলপুরি, কারওয়াল নগর, কাজুরিখাস ও কারদুমপুরেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে।

কোনো কোনো আক্রান্ত এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর ভারী উপস্থিতি দেখা গেছে। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতা কপিল মিশ্র একদল হিন্দুকে উসকে দিলে এই সহিংসতার সৃষ্টি হয়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-অর্থ সম্পাদক হাজীগঞ্জের মাহবুব আলম ২ দিনের রিমান্ডে

দিল্লিতে ২টি মসজিদে আগুন, ভস্মীভূত কোরআন

আপডেট: ০৯:৩১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভে হামলার প্রেক্ষাপটে দুটি মসজিদে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা কোরআনের বিভিন্ন পাতা মাটিতে পুঁতে রাখতে দেখা গেছে লোকজনকে। বুধবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।

আর ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকালে ৫০০ জনের মতো একদল হিন্দু আশক নগর এলাকায় একটি মসজিদের দরজা ভেঙে ফেলে ভেতরে ঢোকে। এরপর সেটির মিনারে উঠে হিন্দুত্ববাদী পতাকা টানিয়ে দেয়। তারা মসজিদটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পরবর্তী সন্ধ্যায় আরেকটি ছোট মসজিদ ও মুসলমানদের দোকানে আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মুসলমান বলেন, তারা তিন ঘণ্টা ধরে মসজিদটিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এরপর হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দিতে দিতে চলে যায়।

গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, বিকালে এসে মসজিদের ভেতরে যা ছিল সব পুড়িয়ে ফেলেছে। এরপর লুটপাট চালিয়েছে। মসজিদ লাগোয়া দোকানেও তারা আগুন দেয়। এরপর পাশের দুটি মুসলমানদের বাড়িতে চড়াও হয়।

ওই ব্যক্তি বলেন, কি বলবো, তাও আমি জানি না। গত ৩৫ বছরে এমন দৃশ্য আমি কখনো দেখিনি। হিন্দু-মুসলমান এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করছিলেন। ঈদুল আজহা ও দেউয়ালি আমরা একসঙ্গে উদযাপন করেছি।

হিন্দু নারীরা সন্তানদের নিয়ে আমাদের মসজিদেও আসতেন বলে তিনি জানান। ওই ভারতীয় বলেন, এটা কেবল মুসলমানদের জন্যই না, পুরো সম্প্রদায়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের সেই শান্তি আজ নাই হয়ে গেছে।

বুধবার সকালেও মুসলমানদের বাড়ি-সম্পত্তিতে হামলা অব্যাহত রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও মুসলমানদের বাড়িঘর-মসজিদ সুরক্ষায় স্থানীয় হিন্দুদের টহল দিতেও দেখা গেছে।

উত্তরপূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, বাবরপুর, ব্রাহামপুর, গোরাখপার্ক, মৌজপুর, ভাজানপুরা, কবিরনগর, চান্দবাগ, গোকুলপুরি, কারওয়াল নগর, কাজুরিখাস ও কারদুমপুরেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে।

কোনো কোনো আক্রান্ত এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর ভারী উপস্থিতি দেখা গেছে। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতা কপিল মিশ্র একদল হিন্দুকে উসকে দিলে এই সহিংসতার সৃষ্টি হয়।