Notuner Kotha

বিদ্যুতের তারে আটকে পড়া শালিকটিকে ২ দিন পর উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিদ্যুতের তারে আটকে থাকা একটি শালিক পাি কে ২ দিন পর জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ারসার্ভিস ও পল্লী বিদ্যুত বিভাগের লোকজন। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ বিশ্বরোডের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
অবশেষে ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনদের সহায়তায় দুই দিনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে আবারও মুক্ত আকাশে উড়তে পেড়েছে শালিকটি।
হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কমান্ডার ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, পাখিটি যে বিদ্যুতের যে খুঁটির সঙ্গে আটকে ছিল, সেটির উচ্চতা প্রায় ৪০ ফিট। কিন্তু আমাদের কাছে যে মই ছিল, তার উচ্চতা মাত্র ১০ ফিট। তাই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সহায়তা নিয়ে আমরা পাখিটিকে মুক্ত করার অভিযানে নামি। এ সময় বিদ্যুৎ কর্মীদের সহযোগিতায় পাখিটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সমর্থ হই আমরা। এভাবে একটি পাখির জীবন বাঁচাতে সহায়তা করতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত ও গর্বিত।
স্থানীয় যুবক সুমন জানান, গত শনিবার উড়ে যাওয়ার সময় একটি শালিক পাখির পা বিদ্যুতের তারে সঙ্গে আটকে যায়। এরপর শুরু হয় পাখিটির মুক্ত হওয়ার যুদ্ধ। শত চেষ্টায় বাঁধন খুলতে ব্যর্থ হয় শালিকটি। ইতিমধ্যে দুই দিন পার হয়ে যায়। স্থানীয়রা পাখিটি মুক্ত করার চেষ্টা করেও পারেননি। ঘটনাটি আমি হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অফিসে জানাই। কিন্তু এত উঁচু মই না থাকায় তারা অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। পরে আমি স্থানীয় সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সিফাত ভাইকে বলি।
সাংবাদিক সিফাত বলেন, একটি পাখির প্রাণ এভাবে শেষ হয়ে যাবে তা আমরা মানতে পারিনি। তাই আমরা স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করি। তাদের আন্তরিকতা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অবশেষে সোমবার দুপুরে শালিকটিকে বিদ্যুতের তার থেকে মুক্ত করা হয়।
হাজীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সিফাত বলেন, শুধুমাত্র মানুষ নয়, ছোট্ট একটি পাখির জীবন বাঁচাতে তারা যে চেষ্টা করেছেন তা সকলের মনেই দাগ কেটেছে। তবে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মাত্র ৪০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর উপকরণ না থাকায় সার্ভিস কর্মীদের অসহায়ত্ব আমাদের ব্যথিত করেছে। বড় কোন দুর্যোগের ঘটনা তারা কীভাবে মোকাবিলা করবেন যদি না ফায়ার সার্ভিসকে আরও আধুনিকায়ন করা হয়।
হাজীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) কেফায়েত উল্যাহ বলেন, খবর পেয়ে পাখিটিকে উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পরে পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান জহিরুলের সহায়তায় বিদ্যুতের তার থেকে পাখিটি উদ্ধার করে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনের পাখি উদ্ধারের বিষয়টি নজর কেড়েছে হাজীগঞ্জ পৌরবাসীর মনেও। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ পল্লী বিদ্যুৎ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের প্রশংসা করেছেন। তাদের প্রত্যাশা, যেই কোন ছোট-বড় দুর্যোগে এমন ইতিবাচক সাড়া ভবিষ্যতেও থাকবে।