Notuner Kotha

ফরিদগঞ্জ ৫ শিক্ষার্থীকে থুথু খাওয়ানো সেই  শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি

ফরিদগঞ্জের গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের শ্রীকালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে থুথু খাওয়ানো অভিযুক্ত  সহকারি শিক্ষক মো. মোশারফ তালুকদারকে সাময়িক ভাবে অব্যাহতি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা লিখিত অভিযোগ দেয়ার

পরই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারী বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন যথারীতি শ্রেনী কক্ষে পাঠদানে ব্যস্ত ছিল। সহকারি শিক্ষক মোশারফ তালুকদার ৪র্থ শ্রেনীর ক্লাস নেন। ক্লাসের রুটিন অনুযায়ী বাড়ীর কাজ জমা না দেওয়ায় শিক্ষার্থী সাবিকুন্নাহার, (রোল -১১), ফাতেমা আক্তার (রোল – –৯), মারিয়া আক্তার  (রোল -৬), শামীম হোসেন  (রোল -২৯) ও জনি হোসেন (রোল নং-৩১) তাদের সাথে মর্মাহত ঘটনার রূপ নেয়। কোমলমতি এ শিক্ষার্থীদের নরম গাল ধরে টানাটানি পরে নিজের ঠোট তাদের ঠোটের সাথে লাগিয়ে অনেক সময় চেপে ধরে মূখে থুথু খেয়ে দেয়। শিক্ষককের এমন আচরনে কোমলমতী শিক্ষার্থীরা খুবই মর্মাহত হয়।

বিদ্যালয়ের ছুটির পর বাড়ীতে গিয়ে এ পাঁচ শিক্ষার্থী কান্না কন্ঠে তাদের অভিভাবকদের কাছে স্যারের এমন কান্ডের ঘটনা খুলে বলে।

নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা  সাথে সাথে প্রধান শিক্ষকের ফোনে এমন মর্মাহত ঘটনার কারন জানাতে চাইলে তিনি পরের দিন বিদ্যালয়ে আসতে বলেন। কিন্তু ঘটনার পরের দিন অভিযুক্ত শিক্ষক বিদ্যালয়ে না আসায় এক প্রকার ক্ষোভ সৃষ্টি হয় অভিভাবকদের। তবে প্রদান শিক্ষক আ. হান্নান শিক্ষার্থীদের অভিভাকদের কাছে ঐ শিক্ষকের পক্ষ হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা যায়।

জানা যায়, ১২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর সহকারী শিক্ষক মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিত পাঁচ শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।
অভিযোগে এ ৫ শিক্ষার্থী বাড়ীর কাজ জমা না দেওয়ায় শিক্ষক মোশারফ তালুকদার তাদেরকে জোর করে ধরে মুখের ভিতর থুথু খাইয়ে দেয়। এছাড়াও উক্ত শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করে আসছে।

গত বছর তিনি বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনির শিক্ষার্থী তাসপিয়াকে বেত্রাঘাত করে মারাত্বক যখম করে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তিনি ক্লাসে গিয়ে বই খুলে লিখতে দিয়ে ক্লাসের বাহিরে চলে যান। গত কয়েক বছর ধরে  বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থেকে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। গত বছর বিশেষ বরাদ্ধের দেড় লক্ষ টাকার কাজ শেষ করেন ৫০ হাজার টাকায়। নানা কারনে তিনি সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সৌকজ খেয়ে ভারপ্রাপ্ত থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

ঘটনার সত্যতা জানতে ৪র্থ শ্রেণীর ঐ ৫ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সামনে বলেন, স্যার আমাদের গাল চেপে ধরে মূখের ভিতর থুথু খাইয়ে দেয়।

অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক মোশারফ তালুকদার বলেন, বিষয়টি এমনটা রূপ নিবে ভাবতে পারিনি। তবে তিলকে তাল বানানোর জন্য একটা পক্ষ মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. হান্নান বলেন, ঘটনার দিন আমি বিদ্যালয়ের কাজে উপজেলায় ছিলাম। পরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে শিক্ষকের পক্ষ হয়ে ক্ষমা চেয়েছি।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাবউদ্দিন বলেন, গত কিছুদিন পূর্বে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্য এক ঘটনায় ব্যবহস্থা গ্রহন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি, তার পরেও তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।এদিকে এর পরই এই ব্যবস্থা নেওয়া হওয়ায় সচেতনমহল অভিনন্দন জানায়।