Notuner Kotha

ঢাবিতে চান্স পাওয়া ইটভাটা শ্রমিক কাজলের অর্থাভাবে ভর্তি অনিশ্চিত

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে অর্থাভাবে ভর্তি অনিশ্চিত অধ্যম মেধাবী ইটভাটা শ্রমিক কাজলের।

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী গ্রামের মৃত আয়ুব আলীর ৩ ছেলের মধ্যে সবচে’ ছোট ছেলে কাজল। অর্থের অভাবে কাজল মাত্র দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েছে সে।

তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটের মেধা তালিকায় ৩৯ নম্বর সিরিয়াল তার। তবে কাজল সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। সেখানে ভর্তির জন্য দরকার প্রায় ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু ভর্তির পর শুরু হবে তার আসল যুদ্ধ।

কিভাবে ঢাকায় অবস্থান করে সে পড়বে? কাজল জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই জন্য যে ঢাকা শহরে ছোটখাট চাকরি অথবা প্রাইভেট পড়িয়ে যাতে নিজের পড়ার খরচ আর মায়ের জন্য কিছু কিছু পাঠাতে পারি। কিন্তু যতদিন কিছু করতে না পারছি, ততদিন আমি কিভাবে ঢাকায় থাকব আর মাকে কি পাঠাব?

ভবিষ্যতে কি হতে চাও এমন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কাজল জানায় যে, আল্লাহ চাইলে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায়। তার এই স্বপ্ন বাস্তব করে তুলতে ভর্তির টাকা যোগাড় করতে এখন সে ইটভাটায় কাজ করছে। প্রতিদিন ৩ শ টাকা হিসেবে মজুরিতে। আগামী কয়েক দিনের ভেতর সে ঢাকায় যাবে ভর্তি হতে? কিন্তু কিভাবে যোগাড় হবে ঢাকায় অবস্থানের খরচ? সাথে প্রিয় মায়ের দিনাতিপাতের খরচ? এমন ভাবনায় যারপরনাই বিচলিত পিতৃহীন এই ছেলেটি।

কাজল জানায়, লেখাপড়ার ব্যাপারে শিক্ষকরা সহযোগিতা করলেও খেয়ে-পরে বাঁচার ব্যাপারে কেউ সহযোগিতা করার ছিল না। ফলে ইটভাটায় কাজ শুরু করি। সারা বছর কাজ করার সুযোগ ছিল না। ইটভাটার কাজ হত শুধু শীতকালে। ২ শ টাকা মজুরিতে ইট তৈরির কারিগরের সহকারী হিসেবে কাজ করতাম। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে রাতে খুব বেশি পড়া যেত না, ঘুমিয়ে পড়তাম।

কাজলের মা ময়ফুল খাতুন জানান, ডিম, হাঁস-মুরগি ও ছাগল পুষে বিক্রি করে ছেলের পরীক্ষার টাকা দিলাম। সবাই বলল তোমার ছেলে খুব ভালো পাস করেছে। এখন আবার ভর্তি পরীক্ষার জন্য টাকার দরকার।