হাজীগঞ্জ বাজারে শেষ মুহূর্তে ঈদ কেনাকাটার মহাধুম

  • আপডেট: ০৪:১৪:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০১৯
  • ১০৩

বিশেষ প্রতিনিধি:

ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকী। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কেনাকাটার জন্য বিখ্যাত হাজীগঞ্জ বাজারের সর্বত্রই ঈদ কেনাকাটায় বিরাজ করছে মহাধুম। হাজীগঞ্জ বাজারের অভিজাত বিপনী থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত সব জায়গায় এখন ক্রেতা আর ক্রেতা। ঈদে পছন্দের পোশাক ক্রয়ে তারা যেন হুমরি খেয়ে পড়ছে। জিনিসপত্রের দামকে যেন তারা কোন ভাবেই পাত্তা দিচ্ছে না। নতুন নতুন মডেল ও ডিজাইনে নিজেদের পছন্দটাই যেন মূখ্য বিষয়।

ঈদের এ কেনাকাটায় মজেছে সকল বয়সী ও শ্রেণি পেশার মানুষ। কেউ যেন কারো থেকে পিছিয়ে নেই। পছন্দের পোষাক কিনতে ক্রেতারা রোজা রেখে প্রচ- রোদ আর তীব্র গরম উপেক্ষা করে ছুটছে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে। হাজীগঞ্জ বাজারে প্রসিদ্ধ-হাজীগঞ্জ প্লাজা, কাপরিয়া পট্্ির, রয়েল মার্কেট, সাগরিকা বিশাল শপিং কমপ্লেক্স, পরীস্থান, রূপের হাট, শ্যামলী, জোনাকী, টাওয়ার মার্কেট, কাতার-কানাডা টাওয়ার, গাউছিয়া মার্কেট, হকার্স মার্কেট ইত্যাদি মার্কেটগুলোতে সকাল থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভীর লেগেই আছে। এসব মার্কেটগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মনকাড়া ডিজাইনের বাহারি শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্ট, জিন্স, ফতুয়ার খোঁজে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্রেতারা।

দোকানদারদের সাথে কথা বলে যানা যায়, এবারের ঈদে দেশী পোষাকের পাশাপাশি প্রচুর বিদেশী পোশাকেরও আমদানী ঘটেছে। এসব শাড়ির দাম দেশী শাড়ি থেকে একটু বেশী। বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা পছন্দের ক্ষেত্রে দেশী বিদেশীকে প্রাধান্য না দিয়ে রং এবং ডিজাইনকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।

বাজারের ছোট বড় বিপনীগুলোতে এবারের ঈদের কেনাকাটায় মেয়েদের পোশাকের ঈদ কালেকশনে নজরকাড়া বাহারি পোশাকের ঝলকের মধ্যে আগের বছরের পোশাকগুলোই বেশি বেশি নজর কাড়ছে। এগুলোরর মধ্যে বাহুবলী, ঋষিকা, সেলফি, কুলফি, পাহাড়পুিির, আনারকলি, ডিভাইডার গাওন, জিপসীসহ হরেক রকমের বাহারী থ্রী-পিস, রেহেঙ্গা, ফতোয়া, সেলোয়ার, কামিজ উল্লেখযোগ্য। হাজীগঞ্জ বাজারের সর্বত্রই এখন এসব নামের গুঞ্জন। ছোট বড় সব বয়সী মেয়েরা পছন্দে এসব পোশাক কিনতে নির্ধারিত বাজেট থেকে নড়ে চড়ে বসতে হচ্ছে। যা ১ হাজার টাকা থেকে প্রায় ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারের ছোট বড় সকল বিপনীগুলোতে মেয়েদের সালোয়ার কামিজ বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। আনস্টিচ থ্রিপিস ৭৫০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে, মেয়েদের টুপিস পাওয়া যাচ্ছে ৯৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে, সিঙ্গেল কামিজ ৬৫০ টাকা থেকে ১হাজার ৫শ’টাকার মধ্যে, সুতি ও সিল্কের থ্রি পিস পাওয়া যাচ্ছে ৬৫০ থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে।

কেনাকাটায় কোন অংশে পিছিয়ে নেই ছেলেরা। পছন্রে পোশাক ক্রয় করতে তারাও চষে বেড়াচ্ছেন পুরো বাজার। হাজীগঞ্জ বাজারের খ্যাতনামা স্টোর গুলোতে শর্ট পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ১ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে, লং পাঞ্জাবি সুতি ১ হাজার ২৫০ থেকে ৩ হাজার ৮শ’ টাকায়, পাজামা ৪৫০টাকায়, শার্ট ৭৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে, ফতুয়া ৫৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকার মধ্যে। বিভিন্ন ব্যান্ডের জিন্স, টি-শার্ট পাওয়া যাবে ৪৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। বাচ্চাদের বিভিন্ন ডিজাইনের শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট পাঞ্জাবি কেনা যাবে ২৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে।

বেচা বিক্রিতে কোন ভাবেই যেন পিছিয়ে নেই হাজীগঞ্জ বাজারের হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তারাও দোকানের পরসা সাজিয়েছেন বাহারি সব পোষাকের সমাহারে। মধ্যেবিত্ত ও নি¤œবিত্ত মানুষেরা পছন্দের পোশাক ক্রয়ে হকার্স মার্কেটে ভিড় জমাচ্ছেন সাকাল থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত। হকার্স মার্কেটের দোকানীরা বলেন, চাঁদরাত পর্যন্ত তাদের বেচা বিক্রি থাকবে।

ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছে হাজীগঞ্জ বাজারের পোশাক সেলাইকারীরা। বাজারের নামকরা অনেক টেইলার্স (পুরুষ-মহিলা) সমূহ ১৫ রমজানের পর থেকে সেলাইয়ের অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে অনেক ক্রেতারা পছন্দের পোষাক কিনতে পারলেও পড়েছেন সেলাইয়ের বিরম্বনায়।

পছন্দের পোশাকের সাথে মিল রেখে জুতা ও কসমেটিক ক্রয়ে বেশ মনযোগী ক্রেতারা। ফলে জুতা আর কসমেটিক ক্রয়ে বাজারের দোকান গুলোতে ভির জমাচ্ছেন ক্রেতারা। বহুদামী পোশাকের রং রূপ ফুটিয়ে তোলতে মানানসই জুতা আর কসমেটিক ক্রয়ে তাই কোনভাবে আপোষ করতে রাজি নয় ক্রেতারা।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

মাত্র ৪৯ দিনে হাফেজ হওয়া সেই হাবিবের ইচ্ছা পূরণ করলেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

হাজীগঞ্জ বাজারে শেষ মুহূর্তে ঈদ কেনাকাটার মহাধুম

আপডেট: ০৪:১৪:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০১৯

বিশেষ প্রতিনিধি:

ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকী। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কেনাকাটার জন্য বিখ্যাত হাজীগঞ্জ বাজারের সর্বত্রই ঈদ কেনাকাটায় বিরাজ করছে মহাধুম। হাজীগঞ্জ বাজারের অভিজাত বিপনী থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত সব জায়গায় এখন ক্রেতা আর ক্রেতা। ঈদে পছন্দের পোশাক ক্রয়ে তারা যেন হুমরি খেয়ে পড়ছে। জিনিসপত্রের দামকে যেন তারা কোন ভাবেই পাত্তা দিচ্ছে না। নতুন নতুন মডেল ও ডিজাইনে নিজেদের পছন্দটাই যেন মূখ্য বিষয়।

ঈদের এ কেনাকাটায় মজেছে সকল বয়সী ও শ্রেণি পেশার মানুষ। কেউ যেন কারো থেকে পিছিয়ে নেই। পছন্দের পোষাক কিনতে ক্রেতারা রোজা রেখে প্রচ- রোদ আর তীব্র গরম উপেক্ষা করে ছুটছে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে। হাজীগঞ্জ বাজারে প্রসিদ্ধ-হাজীগঞ্জ প্লাজা, কাপরিয়া পট্্ির, রয়েল মার্কেট, সাগরিকা বিশাল শপিং কমপ্লেক্স, পরীস্থান, রূপের হাট, শ্যামলী, জোনাকী, টাওয়ার মার্কেট, কাতার-কানাডা টাওয়ার, গাউছিয়া মার্কেট, হকার্স মার্কেট ইত্যাদি মার্কেটগুলোতে সকাল থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভীর লেগেই আছে। এসব মার্কেটগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মনকাড়া ডিজাইনের বাহারি শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্ট, জিন্স, ফতুয়ার খোঁজে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্রেতারা।

দোকানদারদের সাথে কথা বলে যানা যায়, এবারের ঈদে দেশী পোষাকের পাশাপাশি প্রচুর বিদেশী পোশাকেরও আমদানী ঘটেছে। এসব শাড়ির দাম দেশী শাড়ি থেকে একটু বেশী। বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা পছন্দের ক্ষেত্রে দেশী বিদেশীকে প্রাধান্য না দিয়ে রং এবং ডিজাইনকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।

বাজারের ছোট বড় বিপনীগুলোতে এবারের ঈদের কেনাকাটায় মেয়েদের পোশাকের ঈদ কালেকশনে নজরকাড়া বাহারি পোশাকের ঝলকের মধ্যে আগের বছরের পোশাকগুলোই বেশি বেশি নজর কাড়ছে। এগুলোরর মধ্যে বাহুবলী, ঋষিকা, সেলফি, কুলফি, পাহাড়পুিির, আনারকলি, ডিভাইডার গাওন, জিপসীসহ হরেক রকমের বাহারী থ্রী-পিস, রেহেঙ্গা, ফতোয়া, সেলোয়ার, কামিজ উল্লেখযোগ্য। হাজীগঞ্জ বাজারের সর্বত্রই এখন এসব নামের গুঞ্জন। ছোট বড় সব বয়সী মেয়েরা পছন্দে এসব পোশাক কিনতে নির্ধারিত বাজেট থেকে নড়ে চড়ে বসতে হচ্ছে। যা ১ হাজার টাকা থেকে প্রায় ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারের ছোট বড় সকল বিপনীগুলোতে মেয়েদের সালোয়ার কামিজ বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। আনস্টিচ থ্রিপিস ৭৫০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে, মেয়েদের টুপিস পাওয়া যাচ্ছে ৯৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে, সিঙ্গেল কামিজ ৬৫০ টাকা থেকে ১হাজার ৫শ’টাকার মধ্যে, সুতি ও সিল্কের থ্রি পিস পাওয়া যাচ্ছে ৬৫০ থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে।

কেনাকাটায় কোন অংশে পিছিয়ে নেই ছেলেরা। পছন্রে পোশাক ক্রয় করতে তারাও চষে বেড়াচ্ছেন পুরো বাজার। হাজীগঞ্জ বাজারের খ্যাতনামা স্টোর গুলোতে শর্ট পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে ১ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে, লং পাঞ্জাবি সুতি ১ হাজার ২৫০ থেকে ৩ হাজার ৮শ’ টাকায়, পাজামা ৪৫০টাকায়, শার্ট ৭৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে, ফতুয়া ৫৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকার মধ্যে। বিভিন্ন ব্যান্ডের জিন্স, টি-শার্ট পাওয়া যাবে ৪৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। বাচ্চাদের বিভিন্ন ডিজাইনের শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট পাঞ্জাবি কেনা যাবে ২৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে।

বেচা বিক্রিতে কোন ভাবেই যেন পিছিয়ে নেই হাজীগঞ্জ বাজারের হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তারাও দোকানের পরসা সাজিয়েছেন বাহারি সব পোষাকের সমাহারে। মধ্যেবিত্ত ও নি¤œবিত্ত মানুষেরা পছন্দের পোশাক ক্রয়ে হকার্স মার্কেটে ভিড় জমাচ্ছেন সাকাল থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত। হকার্স মার্কেটের দোকানীরা বলেন, চাঁদরাত পর্যন্ত তাদের বেচা বিক্রি থাকবে।

ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছে হাজীগঞ্জ বাজারের পোশাক সেলাইকারীরা। বাজারের নামকরা অনেক টেইলার্স (পুরুষ-মহিলা) সমূহ ১৫ রমজানের পর থেকে সেলাইয়ের অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে অনেক ক্রেতারা পছন্দের পোষাক কিনতে পারলেও পড়েছেন সেলাইয়ের বিরম্বনায়।

পছন্দের পোশাকের সাথে মিল রেখে জুতা ও কসমেটিক ক্রয়ে বেশ মনযোগী ক্রেতারা। ফলে জুতা আর কসমেটিক ক্রয়ে বাজারের দোকান গুলোতে ভির জমাচ্ছেন ক্রেতারা। বহুদামী পোশাকের রং রূপ ফুটিয়ে তোলতে মানানসই জুতা আর কসমেটিক ক্রয়ে তাই কোনভাবে আপোষ করতে রাজি নয় ক্রেতারা।