মতলবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ

  • আপডেট: ০২:৩২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০২০
  • ৩০
মতলব প্রতিনিধি:

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৩ নম্বর খাদের গাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীরের বিরুদ্ধে ভিজিডি ও জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগকারীরা জানান, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীর নারীদের ভিজিডি কার্ড নিজের কাছে আটকে রেখে এক বছর যাবৎ চাল উত্তোলন করে আসছেন। যাদের নামে  ভিজিডি কার্ড করা হয়েছে তাদের জানানো হয়নি ।

তারা বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নাম তালিকাভুক্ত হলেও সম্প্রতি ভিজিডি কার্ডধারী নারীদের বাধ্যতামূলক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হলে তারা বিষয়টি জানতে পারেন। এক বছরেরও বেশি সময় এসব নারীর ভিজিডি কার্ডের চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করা হয়েছে।

নারায়ণপুর গ্রামের রুমি বেগম জানান, এক বছর তিন মাস পর তিনি ভিজিডি কার্ড হাতে পেয়েছেন। গত বছরের চাল দাবি করলে ইউপি সচিব তার স্বামী মুজিব মিয়াজিকে বলেন- মরা ছেলের জন্য কান্না করে লাভ নাই।

একই ঘটনার শিকার ভিজিডি কার্ডধারী মিনতি রাণী সাহা জানান, অল্প কিছুদিন আগে তাকে কার্ড দেয়া হয়।  গত বছরের চাল দাবি করলে চেয়াম্যানের লোকজন তাকে ডেকে নিয়ে ১১ হাজার ২শ টাকা দিয়ে কার্ডে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।

একইভাবে গত এক বছর যাবৎ নারায়ণপুর গ্রামের রুনা আক্তার ও ঘিলাতলি গ্রামের নাজমা বেগমের ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাত করা হয়েছে।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ সেলিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কিছুদিন আগে তাদের কার্ড হস্তান্তর করা হয়েছে। বিগত দিনে তাদের কার্ডের অনুকুলে চাল উত্তোল করলেও তারা পায়নি।

এদিকে সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীরের বিরুদ্ধে জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ঘিলাতলি গ্রামের সোলেমান সরকার। অভিযোগে বলা হয়, ৪৬ জন জেলের প্রতিজনের ৪০ কেজি করে মোট ২ মেট্রিক টন চাল আত্মসাত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন হাওলাদার বলেন, ’৩৭১ জনের নামে চাল বরাদ্দ আসলেও চেয়ারম্যান সাহেব পরিষদের মিটিংয়ে ৩২৫ জনের কথা বলেন এবং বাকি ৪৬ জন ওই সময় চাল পায়নি।’

এছাড়া অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্যের অভিযোগ এনেছেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক রেজয়ান তালুকদার। তিনি জানান, পুটিয়া গ্রামের মনুসারেং বাড়ির রাস্তা সংস্কারের সময় পুরানো ইট তুলে এনে জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের ভিটে তৈরির কাজে লাগানোর অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীর বলেন, ‘একটা লোক কার্ড নেয়নি। সচিব সাহেব বলেছেন তার এ কার্ডটা ডেলিভারি দিতে ভুল হয়ে গেছে। অন্য কেউ কার্ড পায়নি তাকে কেউ অবগত করেনি।’

জেলেদের চালের বিয়য়ে তিনি বলেন, পুরানো তালিকা থেকে প্রথমে ৩২৫ জনকে চাল দেই। কিছুদিন পরে আরো ৪৬ বস্তা চাল ৪৬ জনকে দেই। আর রাস্তার ইট ওখানেই রাখা ছিল। পরে শুনলাম ইটগুলো কে বা কারা নিয়ে গেছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

মতলবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ

আপডেট: ০২:৩২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০২০
মতলব প্রতিনিধি:

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৩ নম্বর খাদের গাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীরের বিরুদ্ধে ভিজিডি ও জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগকারীরা জানান, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীর নারীদের ভিজিডি কার্ড নিজের কাছে আটকে রেখে এক বছর যাবৎ চাল উত্তোলন করে আসছেন। যাদের নামে  ভিজিডি কার্ড করা হয়েছে তাদের জানানো হয়নি ।

তারা বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নাম তালিকাভুক্ত হলেও সম্প্রতি ভিজিডি কার্ডধারী নারীদের বাধ্যতামূলক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হলে তারা বিষয়টি জানতে পারেন। এক বছরেরও বেশি সময় এসব নারীর ভিজিডি কার্ডের চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করা হয়েছে।

নারায়ণপুর গ্রামের রুমি বেগম জানান, এক বছর তিন মাস পর তিনি ভিজিডি কার্ড হাতে পেয়েছেন। গত বছরের চাল দাবি করলে ইউপি সচিব তার স্বামী মুজিব মিয়াজিকে বলেন- মরা ছেলের জন্য কান্না করে লাভ নাই।

একই ঘটনার শিকার ভিজিডি কার্ডধারী মিনতি রাণী সাহা জানান, অল্প কিছুদিন আগে তাকে কার্ড দেয়া হয়।  গত বছরের চাল দাবি করলে চেয়াম্যানের লোকজন তাকে ডেকে নিয়ে ১১ হাজার ২শ টাকা দিয়ে কার্ডে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।

একইভাবে গত এক বছর যাবৎ নারায়ণপুর গ্রামের রুনা আক্তার ও ঘিলাতলি গ্রামের নাজমা বেগমের ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাত করা হয়েছে।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ সেলিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কিছুদিন আগে তাদের কার্ড হস্তান্তর করা হয়েছে। বিগত দিনে তাদের কার্ডের অনুকুলে চাল উত্তোল করলেও তারা পায়নি।

এদিকে সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীরের বিরুদ্ধে জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ঘিলাতলি গ্রামের সোলেমান সরকার। অভিযোগে বলা হয়, ৪৬ জন জেলের প্রতিজনের ৪০ কেজি করে মোট ২ মেট্রিক টন চাল আত্মসাত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন হাওলাদার বলেন, ’৩৭১ জনের নামে চাল বরাদ্দ আসলেও চেয়ারম্যান সাহেব পরিষদের মিটিংয়ে ৩২৫ জনের কথা বলেন এবং বাকি ৪৬ জন ওই সময় চাল পায়নি।’

এছাড়া অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্যের অভিযোগ এনেছেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক রেজয়ান তালুকদার। তিনি জানান, পুটিয়া গ্রামের মনুসারেং বাড়ির রাস্তা সংস্কারের সময় পুরানো ইট তুলে এনে জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের ভিটে তৈরির কাজে লাগানোর অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন রিপন মীর বলেন, ‘একটা লোক কার্ড নেয়নি। সচিব সাহেব বলেছেন তার এ কার্ডটা ডেলিভারি দিতে ভুল হয়ে গেছে। অন্য কেউ কার্ড পায়নি তাকে কেউ অবগত করেনি।’

জেলেদের চালের বিয়য়ে তিনি বলেন, পুরানো তালিকা থেকে প্রথমে ৩২৫ জনকে চাল দেই। কিছুদিন পরে আরো ৪৬ বস্তা চাল ৪৬ জনকে দেই। আর রাস্তার ইট ওখানেই রাখা ছিল। পরে শুনলাম ইটগুলো কে বা কারা নিয়ে গেছে।