আজ চাঁদপুরের ৪২ গ্রামে ঈদ

  • আপডেট: ০৯:৪২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০১৯
  • ৮৯

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

আজ মঙ্গলবার চাঁদপুরের ৪ উপজেলার প্রায় ৪২টি গ্রামে একযোগে পালিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় প্রতিবছর এসব গ্রামের মুসলমানগণ আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ঈদ পালন করে থাকেন।
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, মতলব উত্তর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ কয়েকটি গ্রাম মিলে প্রায় ৪২ গ্রামের মুসলমানগন ঈদ পালন করছেন।
উল্লেখযোগ্য গ্রামগুলো হচ্ছে হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, প্রতাপপুর, বলাখালের কিছু অংশ, ব্রাহ্মণিছোঁয়া, রামচন্দ্রপুরের কিছু অংশ, ওলিপুর ও উটতলী গ্রামের কিছু অংশ।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মধ্যে রয়েছে সাচনমেঘ, বাসারা, সুরঙ্গচাউল, উভারামপুর, কাইতাড়া, ভূলাচো, মুন্সিরহাট, বদপুর, বাছপাড়, ঘড়িহানার কিছু অংশ।
প্রতি বছর এসব গ্রামের মুসলমানগন সৌদী আরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন।

১৯২৮ সালে হাজিগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবারের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) প্রথম বাংলাদেশে এ মতটি চালু করেন। পরবর্তীতে তাঁর অনুসারী হয়ে এসব অঞ্চলের মুসলমানগন চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে পালন করে থাকেন।

এসব অঞ্চলের ঈদগাহের ইমামগণ সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রাণকেন্দ্র সৌদি আরবের ভূ-খ- অনেকটা উচ্চতা থাকায় সৌদি আরব বাসিন্দারা সাধারণত আগে চাঁদ দেখে থাকেন এছাড়া এসব অঞ্চলের ইমামগণ বিজ্ঞানগত আরো যুক্তি পেশ করে বলেন বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সময়গত পার্থক্য ২ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড তাই আমরা বাংলাদেশে ইসলামের অনুসারী হয়ে সামান্য সময় পার্থক্যের কারণে রোজা ও ঈদ পালনে ১দিন অপেক্ষা করতে পারেন না।

উক্ত মতের প্রবক্তা মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) ফতোয়ার কিতাব অনুসারে আরো জানা যায় মাজহাবের মাসায়ালা ভিন্নতায় তিনি এ মতটি চালু করেন। তিনি ইমামুল আজম আবু হানিফা (রহঃ) এর মাসায়ালা “পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখা ও ঈদ পালন কর” এর অনুসারে তিনি তাঁর মতটি সকলের নিকট প্রসিদ্ধ করার চেষ্টা করার পাশাপাশি পালন করতেন।

যদিও মতটি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশের আলেমগণ গ্রহণ না করে রাসূল (সঃ) এর হাদীস “চাঁদ দেখে রোজা রাখ ও চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ কর” এর অনুকরণে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর ফতোয়া পরিবর্তন করেন। তাই বাংলাদেশের ইজতেহাদী (গবেষক) ওলামায়ে কেরামগণ ও বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন উক্ত ফতোয়া গ্রহণ করেন নি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক বছরগুলোতে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও এখন আর তা হচ্ছে না। তবে প্রতি বছর দু’ঈদে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতি সুষ্ঠ রাখার স্বার্থে ওইসব অঞ্চলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

তবে একই ভূ-খণ্ডে ২ দিনে একই ধর্মীয় উৎসব পালন করায় বিষয়টি স্বাভাবিক মেনে নিতে না পেরে সাধারণ মানুষ অনেকই নানা মন্তব্য করে থাকেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

আজ চাঁদপুরের ৪২ গ্রামে ঈদ

আপডেট: ০৯:৪২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০১৯

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

আজ মঙ্গলবার চাঁদপুরের ৪ উপজেলার প্রায় ৪২টি গ্রামে একযোগে পালিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় প্রতিবছর এসব গ্রামের মুসলমানগণ আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ঈদ পালন করে থাকেন।
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, মতলব উত্তর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ কয়েকটি গ্রাম মিলে প্রায় ৪২ গ্রামের মুসলমানগন ঈদ পালন করছেন।
উল্লেখযোগ্য গ্রামগুলো হচ্ছে হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, প্রতাপপুর, বলাখালের কিছু অংশ, ব্রাহ্মণিছোঁয়া, রামচন্দ্রপুরের কিছু অংশ, ওলিপুর ও উটতলী গ্রামের কিছু অংশ।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মধ্যে রয়েছে সাচনমেঘ, বাসারা, সুরঙ্গচাউল, উভারামপুর, কাইতাড়া, ভূলাচো, মুন্সিরহাট, বদপুর, বাছপাড়, ঘড়িহানার কিছু অংশ।
প্রতি বছর এসব গ্রামের মুসলমানগন সৌদী আরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন।

১৯২৮ সালে হাজিগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবারের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) প্রথম বাংলাদেশে এ মতটি চালু করেন। পরবর্তীতে তাঁর অনুসারী হয়ে এসব অঞ্চলের মুসলমানগন চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে পালন করে থাকেন।

এসব অঞ্চলের ঈদগাহের ইমামগণ সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রাণকেন্দ্র সৌদি আরবের ভূ-খ- অনেকটা উচ্চতা থাকায় সৌদি আরব বাসিন্দারা সাধারণত আগে চাঁদ দেখে থাকেন এছাড়া এসব অঞ্চলের ইমামগণ বিজ্ঞানগত আরো যুক্তি পেশ করে বলেন বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সময়গত পার্থক্য ২ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড তাই আমরা বাংলাদেশে ইসলামের অনুসারী হয়ে সামান্য সময় পার্থক্যের কারণে রোজা ও ঈদ পালনে ১দিন অপেক্ষা করতে পারেন না।

উক্ত মতের প্রবক্তা মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) ফতোয়ার কিতাব অনুসারে আরো জানা যায় মাজহাবের মাসায়ালা ভিন্নতায় তিনি এ মতটি চালু করেন। তিনি ইমামুল আজম আবু হানিফা (রহঃ) এর মাসায়ালা “পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখা ও ঈদ পালন কর” এর অনুসারে তিনি তাঁর মতটি সকলের নিকট প্রসিদ্ধ করার চেষ্টা করার পাশাপাশি পালন করতেন।

যদিও মতটি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশের আলেমগণ গ্রহণ না করে রাসূল (সঃ) এর হাদীস “চাঁদ দেখে রোজা রাখ ও চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ কর” এর অনুকরণে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর ফতোয়া পরিবর্তন করেন। তাই বাংলাদেশের ইজতেহাদী (গবেষক) ওলামায়ে কেরামগণ ও বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন উক্ত ফতোয়া গ্রহণ করেন নি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক বছরগুলোতে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও এখন আর তা হচ্ছে না। তবে প্রতি বছর দু’ঈদে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতি সুষ্ঠ রাখার স্বার্থে ওইসব অঞ্চলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

তবে একই ভূ-খণ্ডে ২ দিনে একই ধর্মীয় উৎসব পালন করায় বিষয়টি স্বাভাবিক মেনে নিতে না পেরে সাধারণ মানুষ অনেকই নানা মন্তব্য করে থাকেন।