• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল, ২০২০
সর্বশেষ আপডেট : ১৮ এপ্রিল, ২০২০

করোনা সন্দেহে নিজ বাড়ী ও মেয়ের বাড়ী থেকে বিতাড়িত হলেন বৃদ্ধা

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

বিশেষ প্রতিদিন:

সামান্য জ্বর কাশি থাকায় করোনা সন্দেহ প্রথমে কর্মস্থল থেকে বিতাড়িত তারপর নিজের পৈত্রিক ভিটা শেষতক একমাত্র সন্তানের বাড়ী থেকে বিতাড়িত হয়েছেন এক বৃদ্ধ পিতা। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আইসোলেশন বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তার করোনা হয়নি। তিনি জ্বরে ভুগছিলেন।

মজিবুর রহমান (৬০) নামের ও বৃদ্ধ। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে একটি কারখানার কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। কিছুদিন আগে জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হন। ভালো না হওয়ায় করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে সেখানকার লোকজন তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

আরো পড়ুন: ত্রাণের চাউল বিতরণে অনিয়ম বন্ধে চাঁদপুরে পুলিশের হটলাইন

বাধ্য হয়ে কর্মস্থল ছেড়ে শনিবার সকালে চলে আসেন নিজ বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোপালকান্দি গ্রামে। তার স্ত্রী জীবিত নেই। নেই কোন ছেলে সন্তান। নিজ বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘর তার শেষ আশ্রয়স্থল। কিন্তু করোনা কবলিত ঢাকা থেকে এসেছেন এবং জ্বর, কাশি থাকায় বাড়ির লোকজন তাকে নিজ ঘরে থাকতে বাধা দেয়। বহু আকুতি-মিনতি করেও পৈত্রিক ভিটেবাড়িতে থাকার সুযোগ হয়নি তার।

নিরূপায় হয়ে মজিবুর রহমান চলে যান তার একমাত্র সন্তান মেয়ের শ্বশুর বাড়ি একই ইউনিয়নের মুক্তিরকান্দি গ্রামে। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে সেখানেও ঠাঁই হয়নি তার। এলাকার মানুষ তাকে মেয়ের বাড়িতে থাকতে দেয়নি।

মুক্তিরকান্দি গ্রামের লোকজন তাকে স্থানীয় হাজী মার্কেটের পাশের একটি ঈদগাহ মাঠে ফেলে রাখে। তারাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুশরাত জাহান মিথেনকে সংবাদ পাঠান।

আরো পড়ুন: করোনা ঝুঁকি এড়াতে শাহরাস্তি-রামগঞ্জ সড়ক বন্ধ

ডা. নুসরাত জাহান মিথেন বিষয়টি তাৎক্ষণিক চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাখাওয়াত উল্লাহকে জানালে তার নির্দেশে জরুরী অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে বৃদ্ধকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেলস নতুনেরকথাকে বলেন, বৃদ্ধের জ্বর, কাশি তেমন গুরুতর নয়, করোনায় আক্রান্তের উপসর্গও তেমন নেই। তারপরও যেহেতুু তিনি করোনা কবলিত এলাকা থেকে এসেছেন সে জন্য তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। রোববার সকালে তার নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

আরো পড়ুন: ২৪ ঘন্টা করোনায় মৃত্যু ৯জন, নতুন আক্রান্ত ৩০৬

করোনা সন্দেহে মজিবুর রহমান নিজ বাড়ি ও একমাত্র সন্তানের বাড়ি থেকে বিতাড়িত। স্বজনদের মায়া-মমতা, সেবা-যত্ন, ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে তিনি পরিণত হয়েছেন রাস্তার আবর্জনায়। ঠিক সেই সময়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবতাবাদী চিকিৎসক ও সরকারি চিকিৎসালয়। যেখানে চিকিৎসার পাশাপাশি আহারও জুটবে তার । করোনার সংক্রমণ না হলে এমন করুণ বাস্তবতা হয়তো অনেকের অজানাই থেকে যেত। এ যেন স্বজন, প্রিয়জন ও মানুষ চেনার এক কঠিন সময়।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • চাঁদপুর সদর এর আরও খবর
error: Content is protected !!